বাংলাদেশে স্বাধীনতা উত্তর সমাপ্তিকাল পর্যন্ত জনমনে একটি সাধারণ ধারণা ছিল যে সুদ ও ঘুষ গ্রহণ করা, চুরি করা, পরধন আত্মসাৎ করাসহ অন্যান্য অন্যায় ও অবৈধ কাজের মাধ্যমে অর্থোপার্জন করার প্রবণতা শুধু নিম্ন আয়ভুক্ত জনগোষ্ঠীর মাঝে সীমাবদ্ধ ছিল। কারণ তাদের বেতন মজুরী বা আয় রোজগার ছিল সীমিত। কোন কারণে সাংসারিক খরচ বৃদ্ধি পেলেও তাদের বৈধ আয় বৃদ্ধির কোন উপায় ছিল না। একমাত্র বেঁচে থাকার তাগিদে তাদের অসৎ পথ অবলম্বন করতে হতো। ওয়ান ইলেভেনের পরে উন্মোচিত ঘটনাবলী জনমনের সে ধারণা পাল্টে দিয়েছে। জনগণ বুঝতে পেরেছে যে শুধু অভাবীরাই দুর্নীতির কাজ করে না। দুর্নীতি এখন আর অভাবের তাড়না নয়। দুর্নীতি এখন বিলাসীদের বিলাস বাসনা চরিতার্থ করার পন্থা। যাদের আছে অনেক তাদের চাই প্রচুর। বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শতবর্ষ আগে বর্তমান প্রবহমান পরিস্থিতির আভাস দিয়ে গেছেন তাঁর কবিতায়, তিনি বলেছেন, ‘‘এ জগতে হায় সেই বেশী চায়, আছে যার ভুরিভুরি। রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি।' অগাধ বিত্ত বৈভবের মালিক হওয়ার নেশাটাই আজ দুর্নীতির মূল কারণ।
দুর্নীতির মাধ্যমে যারা বিপুল বিত্ত বৈভবের মালিক হয়েছেন তাদের আইন আমলে আনা হচ্ছে, বিচারান্তে শাস্তির বিধানও হচ্ছে। এত ধর পাকড়, কঠোর শাস্তি প্রদান, লাঞ্ছনা, গঞ্জনা ভয়ভীতি প্রদর্শন দুর্নীতি পরায়ণদের দুর্নীতির কাজ থেকে বিরত রাখতে পারছে না। ধৃত দুর্নীতিবাজদের করুণ পরিণতি চাক্ষুষ দেখেও দুর্নীতিবাজরা দুর্নীতির কাজে পুনঃ লিপ্ত হচ্ছে এবং ধরা পড়ছে। এ ঘটনা দেশের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে প্রমাণিত হয় যে শাস্তিবিধান দুর্নীতি রোধের পন্থা নয়। যে নৈতিক পদস্খলন আমাদের হয়েছে তা থেকে পরিত্রাণ লাভ সহজ নয়। এ দুর্ভাগ্য যেন আমাদের নিয়তি। এ দুর্ভাগ্য থেকে উত্তরণের কোনো উপায়ই কি আমাদের নেই? হ্যাঁ, নিশ্চয়ই এ দুর্ভাগ্য থেকে উত্তরণের একটা মাত্র পথই আছে এবং তা হলো সিরাতুল মুস্তাকিমের পথ। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (দ:) বিদায় হজ্জে সারা বিশ্বের মুসলমানদের জন্য সে সরল পথের দিক নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। তিনি বলেছেন ‘আমি তোমাদের জন্য দুটি নেয়ামত রেখে যাচ্ছি। যতদিন তোমরা সে দুটি অাঁকড়ে রাখবে ততদিন তোমাদের ভয় নেই। ততদিন তোমাদের অনুতাপের অনলে দগ্ধীভূত হতে হবে না। তার একটি হলো আল্লাহর পবিত্র কালাম ‘আল কুরআন' অন্যটি হলো আমার হাদিস।' আখেরি নবীর এ সতর্ক বাণী হয় আমরা ভুলে গেছি, নতুবা বিশ্বাস করছি না। তাই তো রাজনীতিতে আমরা ধর্মের সংযোগ ঘটাতে চাই না। অথচ মানুষের কাছে ধর্মের আবেদন মানবের কল্যাণ এবং রাজনীতিরও তাই। আসলে আমরা চাই না সৎ জীবনযাপন করতে, সৎ উদ্দেশ্যে আইন প্রণয়ন করতে, সততার সাথে আইন প্রয়োগ করতে এবং জনগণকে সৎ জীবন যাপনে অভ্যস্ত করানোর কর্মসূচী গ্রহণ করতে।
ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল গঠনে যারা বিরোধিতা করেন তারা কি বলতে পারেন তাদের জন্ম ও মৃত্যু এবং কর্ম ও জীবন ধর্মকে বাদ দিতে। ধর্ম সাক্ষী রেখে ধর্ম নির্দেশিত বাক্য উচ্চারণ করে বিয়ের মাধ্যমে তারা কি তাদের সংসার জীবন শুরু করেন নি? তারা কি বোঝেন না প্রতিটি মুহূর্তের জন্য ধর্ম আমাদেরকে বর্মের মত ধারণ করে আছে?
সাংসারিক জীবনে আমরা কথায় কথায় আল্লাহ ভরসা, ইনশাআল্লাহ্, আল্লাহ হাফেজ, আলহামদুলিল্লাহ। সোবহান আল্লাহ প্রভৃতি ধর্মীয় কথাগুলি উচ্চারণ করি। সর্বশক্তিমান আল্লাহ তায়ালাকে স্মরণ করিয়াই তো আমাদের দাদা দাদি, নানা-নানির বিয়ে হয়েছিল ধর্ম মতে, মৃত্যুর পরে সৎকার করা হয়েছিল ধর্ম মতে, আমাদের জন্ম ধর্মমতে আমরা বর্ধিত হই দেহ ও মনে ধর্মের অনুশাসনানুযায়ী আমাদের আহার বিহার, আমাদের আচার আচরণ, কথাবার্তা, শিক্ষা দীক্ষা ধর্ম মতে। অথচ রাজনীতি করতে পারবো না, দল গঠন করতে পারবো না ধর্ম ভিত্তিক কেমন যেন একটু বৈপরিত্ব মনে হচ্ছে না? ধর্ম উচ্ছৃক্মখল আরব জাতিকে কুসংস্কার আর বর্বরতা থেকে উদ্ধার করে সুশৃক্মখল ও সুসভ্য উন্নত জাতিতে পরিণত করেছে। ধর্ম আমাদেরকে বর্মের মত ধারণ করে সকল পঙ্কিলতা থেকে রক্ষা করে। ধর্মহীনতার জন্য আজ আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গনে অমানিশার ঘোর অন্ধকার নেমে এসেছে। ধর্ম আমরা ছেড়ে দিতে পারি না। বরং জীবনের পরতে পরতে আমরা ধর্মকে অাঁকড়িয়ে ধরে সুন্দরভাবে বাঁচতে চাই। আমরা কোন মতেই কোন অবস্থাতেই ধর্মহীনতায় আচ্ছাদিত হতে চাই না। কারণ ধর্মহীন জীবন পশুর জীবন। জীবনের সকল স্তরে যদি আমরা ধর্ম অনুসরণ করে উন্নত জীবনের অধিকারী হতে পারি, তবে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল গঠন করতে পারবো না কেন?
সমাজের যারা কর্ণধার, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অবস্থানে যারা উচ্চাসনে আসীন সেই রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ যাদের কার্য সম্পাদনের ওপর নির্ভর করছে দেশ ও দেশবাসীর মাঙ্গলিক অবস্থান তাদের মধ্যেই যখন দেখতে পাই দুর্নীতি, দুরাচারকারীদের অবস্থান তখন আর কার ওপর বিশ্বাস স্থাপন করবো? দেশের এই নৈরাশ্যজনক পরিস্থিতি থেকে এ সমাজকে এ দেশকে উদ্ধার করার একমাত্র উপায় হচ্ছে কুরআন ও হাদিসকে দৃঢ়ভাবে অাঁকড়ে ধরার শিক্ষা গ্রহণ আর জনগণকে শিক্ষা প্রদান করার কার্যক্রম গ্রহণ। অন্যায় ও অসৎ কার্য সম্পাদনের জন্য জবাবদিহিতা তো আল্লাহ সমীপে করতেই হবে একদিন। এই বিশ্বাসের নামই ঈমান। কুরআন ও হাদিসের নির্দেশনা সামাজিক, রাজনৈতিক ও ব্যক্তি জীবনে প্রয়োগ করে, অনুসরন করে ঈমানের অধিকারী হওয়া যায়। ব্যক্তি হোক, সমাজ হোক বা গোষ্ঠী হোক, ঈমানের বলে বলীয়ান হতে পারলে বিপদের আর কোন ভয় থাকে না।
সংবিধান সীমিত জ্ঞানের অধিকারী মানুষের তৈরি। মানুষের তৈরি সংবিধানে ভুলভ্রান্তি থাকতেই পারে। সংবিধানে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল গঠনের ওপর যদি কোন বিধি-নিষেধ আরোপিত হয়ে থাকে তবে সে বিধি-নিষেধ সংশোধন করা আবশ্যক। কারণ এ দেশ ইসলাম ধর্মাবলম্বী সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের। তারা ধর্মহীনতায় বিশ্বাস করতে পারে না। ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলামে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের স্থান নেই। কোন উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে কোন মতবাদ প্রবর্তন বা বিলোপের জন্য সম্পদ বিনষ্ট বা মানুষ হত্যা করার অভিপ্রায় কোন আন্দোলন ইসলাম অনুমোদন করে না। যে কোন সন্ত্রাসী তৎপরতা ইসলামী অনুশাসন অনুযায়ী গর্হিত কাজ। ইসলামী নাম ব্যবহার করে কিছু কিছু পথভ্রষ্ট গোষ্ঠী বোমাবাজি, হত্যা, ধ্বংস ইত্যাদি অসামাজিক, অনৈতিক, অনাকাঙ্ক্ষিত কাজ করছে, আর দায় পড়ছে মুসলমানদের ওপর। সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালায় সন্ত্রাসী ও দুষ্কৃতকারীরা। দুষ্কৃতকারীদের কোন জাত বা ধর্ম নেই। দুনিয়ার তাবৎ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের জন্য এক তরফাভাবে দায়ী করা হয় মুসলমানদের। অথচ মুসলমানরা আল কুরআনের নির্দেশানুযায়ী সর্বান্তকরণে বিশ্বাস করে তাদের ধর্মে সন্ত্রাসের কোন স্থান নেই। ফাসাদ সৃষ্টিকারীরা গোনাহ ক্ষমার অযোগ্য কর্ম। যে দেশের জনসংখ্যার ৮৫% ভাগই ইসলাম ধর্মের অনুসারী সে দেশের রাজনীতি ইসলাম ধর্মানুসারী হবে এটাই তো স্বাভাবিক। ইসলামী রাজনীতি এ দেশে অব্যাহতভাবে চলতে থাকবে ইতিহাসের এটাই তো সরল সমীকরণ। এদেশে ইসলাম ভিত্তিক রাজনীতি বন্ধ করার শক্তি কারো নেই। বরং যে রাজনীতি ও তার প্রবক্তাগণ ধর্মহীনতায় আচ্ছন্ন সে রাজনীতি ও তার ধ্বজাধারীরা সঙ্গত কারণেই একদিন না একদিন কালের গহবরে বিলীন হয়ে যাবে। পৃথিবীর ইতিহাসে এর ভুরিভুরি প্রমাণ রয়েছে।
আজ যারা রাষ্ট্রকে, সমাজকে এবং ব্যক্তি জীবনকে ধর্মহীনতায় আচ্ছন্ন করার অপচেষ্টায় নিয়োজিত রয়েছেন একদিন তাদের তৌহিদী জনতার মুখোমুখি হতেই হবে এবং সেদিন খুব দূরে নয়।
দুর্নীতির মাধ্যমে যারা বিপুল বিত্ত বৈভবের মালিক হয়েছেন তাদের আইন আমলে আনা হচ্ছে, বিচারান্তে শাস্তির বিধানও হচ্ছে। এত ধর পাকড়, কঠোর শাস্তি প্রদান, লাঞ্ছনা, গঞ্জনা ভয়ভীতি প্রদর্শন দুর্নীতি পরায়ণদের দুর্নীতির কাজ থেকে বিরত রাখতে পারছে না। ধৃত দুর্নীতিবাজদের করুণ পরিণতি চাক্ষুষ দেখেও দুর্নীতিবাজরা দুর্নীতির কাজে পুনঃ লিপ্ত হচ্ছে এবং ধরা পড়ছে। এ ঘটনা দেশের জন্য অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এতে প্রমাণিত হয় যে শাস্তিবিধান দুর্নীতি রোধের পন্থা নয়। যে নৈতিক পদস্খলন আমাদের হয়েছে তা থেকে পরিত্রাণ লাভ সহজ নয়। এ দুর্ভাগ্য যেন আমাদের নিয়তি। এ দুর্ভাগ্য থেকে উত্তরণের কোনো উপায়ই কি আমাদের নেই? হ্যাঁ, নিশ্চয়ই এ দুর্ভাগ্য থেকে উত্তরণের একটা মাত্র পথই আছে এবং তা হলো সিরাতুল মুস্তাকিমের পথ। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মোহাম্মদ (দ:) বিদায় হজ্জে সারা বিশ্বের মুসলমানদের জন্য সে সরল পথের দিক নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। তিনি বলেছেন ‘আমি তোমাদের জন্য দুটি নেয়ামত রেখে যাচ্ছি। যতদিন তোমরা সে দুটি অাঁকড়ে রাখবে ততদিন তোমাদের ভয় নেই। ততদিন তোমাদের অনুতাপের অনলে দগ্ধীভূত হতে হবে না। তার একটি হলো আল্লাহর পবিত্র কালাম ‘আল কুরআন' অন্যটি হলো আমার হাদিস।' আখেরি নবীর এ সতর্ক বাণী হয় আমরা ভুলে গেছি, নতুবা বিশ্বাস করছি না। তাই তো রাজনীতিতে আমরা ধর্মের সংযোগ ঘটাতে চাই না। অথচ মানুষের কাছে ধর্মের আবেদন মানবের কল্যাণ এবং রাজনীতিরও তাই। আসলে আমরা চাই না সৎ জীবনযাপন করতে, সৎ উদ্দেশ্যে আইন প্রণয়ন করতে, সততার সাথে আইন প্রয়োগ করতে এবং জনগণকে সৎ জীবন যাপনে অভ্যস্ত করানোর কর্মসূচী গ্রহণ করতে।
ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল গঠনে যারা বিরোধিতা করেন তারা কি বলতে পারেন তাদের জন্ম ও মৃত্যু এবং কর্ম ও জীবন ধর্মকে বাদ দিতে। ধর্ম সাক্ষী রেখে ধর্ম নির্দেশিত বাক্য উচ্চারণ করে বিয়ের মাধ্যমে তারা কি তাদের সংসার জীবন শুরু করেন নি? তারা কি বোঝেন না প্রতিটি মুহূর্তের জন্য ধর্ম আমাদেরকে বর্মের মত ধারণ করে আছে?
সাংসারিক জীবনে আমরা কথায় কথায় আল্লাহ ভরসা, ইনশাআল্লাহ্, আল্লাহ হাফেজ, আলহামদুলিল্লাহ। সোবহান আল্লাহ প্রভৃতি ধর্মীয় কথাগুলি উচ্চারণ করি। সর্বশক্তিমান আল্লাহ তায়ালাকে স্মরণ করিয়াই তো আমাদের দাদা দাদি, নানা-নানির বিয়ে হয়েছিল ধর্ম মতে, মৃত্যুর পরে সৎকার করা হয়েছিল ধর্ম মতে, আমাদের জন্ম ধর্মমতে আমরা বর্ধিত হই দেহ ও মনে ধর্মের অনুশাসনানুযায়ী আমাদের আহার বিহার, আমাদের আচার আচরণ, কথাবার্তা, শিক্ষা দীক্ষা ধর্ম মতে। অথচ রাজনীতি করতে পারবো না, দল গঠন করতে পারবো না ধর্ম ভিত্তিক কেমন যেন একটু বৈপরিত্ব মনে হচ্ছে না? ধর্ম উচ্ছৃক্মখল আরব জাতিকে কুসংস্কার আর বর্বরতা থেকে উদ্ধার করে সুশৃক্মখল ও সুসভ্য উন্নত জাতিতে পরিণত করেছে। ধর্ম আমাদেরকে বর্মের মত ধারণ করে সকল পঙ্কিলতা থেকে রক্ষা করে। ধর্মহীনতার জন্য আজ আমাদের রাজনৈতিক অঙ্গনে অমানিশার ঘোর অন্ধকার নেমে এসেছে। ধর্ম আমরা ছেড়ে দিতে পারি না। বরং জীবনের পরতে পরতে আমরা ধর্মকে অাঁকড়িয়ে ধরে সুন্দরভাবে বাঁচতে চাই। আমরা কোন মতেই কোন অবস্থাতেই ধর্মহীনতায় আচ্ছাদিত হতে চাই না। কারণ ধর্মহীন জীবন পশুর জীবন। জীবনের সকল স্তরে যদি আমরা ধর্ম অনুসরণ করে উন্নত জীবনের অধিকারী হতে পারি, তবে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল গঠন করতে পারবো না কেন?
সমাজের যারা কর্ণধার, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় অবস্থানে যারা উচ্চাসনে আসীন সেই রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ যাদের কার্য সম্পাদনের ওপর নির্ভর করছে দেশ ও দেশবাসীর মাঙ্গলিক অবস্থান তাদের মধ্যেই যখন দেখতে পাই দুর্নীতি, দুরাচারকারীদের অবস্থান তখন আর কার ওপর বিশ্বাস স্থাপন করবো? দেশের এই নৈরাশ্যজনক পরিস্থিতি থেকে এ সমাজকে এ দেশকে উদ্ধার করার একমাত্র উপায় হচ্ছে কুরআন ও হাদিসকে দৃঢ়ভাবে অাঁকড়ে ধরার শিক্ষা গ্রহণ আর জনগণকে শিক্ষা প্রদান করার কার্যক্রম গ্রহণ। অন্যায় ও অসৎ কার্য সম্পাদনের জন্য জবাবদিহিতা তো আল্লাহ সমীপে করতেই হবে একদিন। এই বিশ্বাসের নামই ঈমান। কুরআন ও হাদিসের নির্দেশনা সামাজিক, রাজনৈতিক ও ব্যক্তি জীবনে প্রয়োগ করে, অনুসরন করে ঈমানের অধিকারী হওয়া যায়। ব্যক্তি হোক, সমাজ হোক বা গোষ্ঠী হোক, ঈমানের বলে বলীয়ান হতে পারলে বিপদের আর কোন ভয় থাকে না।
সংবিধান সীমিত জ্ঞানের অধিকারী মানুষের তৈরি। মানুষের তৈরি সংবিধানে ভুলভ্রান্তি থাকতেই পারে। সংবিধানে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল গঠনের ওপর যদি কোন বিধি-নিষেধ আরোপিত হয়ে থাকে তবে সে বিধি-নিষেধ সংশোধন করা আবশ্যক। কারণ এ দেশ ইসলাম ধর্মাবলম্বী সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের। তারা ধর্মহীনতায় বিশ্বাস করতে পারে না। ইসলাম শান্তির ধর্ম। ইসলামে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের স্থান নেই। কোন উদ্দেশ্য হাসিলের জন্য সামাজিক বা রাষ্ট্রীয় কাঠামোতে কোন মতবাদ প্রবর্তন বা বিলোপের জন্য সম্পদ বিনষ্ট বা মানুষ হত্যা করার অভিপ্রায় কোন আন্দোলন ইসলাম অনুমোদন করে না। যে কোন সন্ত্রাসী তৎপরতা ইসলামী অনুশাসন অনুযায়ী গর্হিত কাজ। ইসলামী নাম ব্যবহার করে কিছু কিছু পথভ্রষ্ট গোষ্ঠী বোমাবাজি, হত্যা, ধ্বংস ইত্যাদি অসামাজিক, অনৈতিক, অনাকাঙ্ক্ষিত কাজ করছে, আর দায় পড়ছে মুসলমানদের ওপর। সন্ত্রাসী কর্মকান্ড চালায় সন্ত্রাসী ও দুষ্কৃতকারীরা। দুষ্কৃতকারীদের কোন জাত বা ধর্ম নেই। দুনিয়ার তাবৎ সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের জন্য এক তরফাভাবে দায়ী করা হয় মুসলমানদের। অথচ মুসলমানরা আল কুরআনের নির্দেশানুযায়ী সর্বান্তকরণে বিশ্বাস করে তাদের ধর্মে সন্ত্রাসের কোন স্থান নেই। ফাসাদ সৃষ্টিকারীরা গোনাহ ক্ষমার অযোগ্য কর্ম। যে দেশের জনসংখ্যার ৮৫% ভাগই ইসলাম ধর্মের অনুসারী সে দেশের রাজনীতি ইসলাম ধর্মানুসারী হবে এটাই তো স্বাভাবিক। ইসলামী রাজনীতি এ দেশে অব্যাহতভাবে চলতে থাকবে ইতিহাসের এটাই তো সরল সমীকরণ। এদেশে ইসলাম ভিত্তিক রাজনীতি বন্ধ করার শক্তি কারো নেই। বরং যে রাজনীতি ও তার প্রবক্তাগণ ধর্মহীনতায় আচ্ছন্ন সে রাজনীতি ও তার ধ্বজাধারীরা সঙ্গত কারণেই একদিন না একদিন কালের গহবরে বিলীন হয়ে যাবে। পৃথিবীর ইতিহাসে এর ভুরিভুরি প্রমাণ রয়েছে।
আজ যারা রাষ্ট্রকে, সমাজকে এবং ব্যক্তি জীবনকে ধর্মহীনতায় আচ্ছন্ন করার অপচেষ্টায় নিয়োজিত রয়েছেন একদিন তাদের তৌহিদী জনতার মুখোমুখি হতেই হবে এবং সেদিন খুব দূরে নয়।
No comments:
Write comments