ভারতীয় সীমানত্দরৰী বিএসএফ আনত্দর্জাতিক রীতি-নীতি বিসর্জন দিয়ে যেভাবে নারকীয় হত্যাযজ্ঞ শুরম্ন করেছে তা কোনো যুদ্ধ চলাকালীন দেশের সীমানত্দেও এরকম ঘটনা ঘটে না। আমাদের সীমানত্দ হত্যা নিয়ে এখন বিজিবি ঢেলে সাজানো সময় এসেছে। ভারতে প্রতিটি বিওপির পাশাপাশি আমাদের একটি করে নিরাপত্তা চৌকি স্থাপন করতে হবে। ফেলানি হত্যাকাণ্ডের পর বহির্বিশ্বে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় উঠলে তখন ভারত সীমানত্দে কিছুদিন হত্যাকাণ্ড বন্ধ থাকলেও আবার বিএসএফ সদস্যরা নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ড শুরম্ন করেছে। আর তখন মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে সোচ্চার হয়ে হত্যাযজ্ঞ বন্ধে তীব্র প্রতিবাদী হতে দেখার কারণেই সে পরিস্থিতি হয়েছিল। তখন বিভিন্নমুখী চাপে কিছুদিন সীমানত্দে হত্যাকাণ্ড বন্ধ থাকলেও ফের তারা নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড ঘটাচ্ছে। তারা একের পর এক হত্যা করে চলেছে আমাদের সীমানত্দবাসীকে। তাদের বেপরোয়া হত্যাযজ্ঞে সীমানত্দবর্তী এলাকার মানুষের মধ্যে আবার আগের মতো ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। ফেলানি হত্যার রক্তের দাগ শুকাতে না শুকাতেই তাদের এহেন কর্মকাণ্ড আমাদের এখন উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফেলানি হত্যার পর উভয় দেশের উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের কয়েক দফা বৈঠক হওয়ার পর বিএসএফ আর সীমানত্দে কোনো হত্যাকাণ্ড ঘটাবে না বলে প্রতিশ্রম্নতি প্রদান করলেও এখন আবার হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠেছে এ বাহিনী। দেশের মানুষ রাষ্ট্রের কাছে নিরাপত্তা পাওয়া তার সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার হলেও এ ৰেত্রে রাষ্ট্রকে নির্লিপ্ত থাকতে দেখা গেছে। ফেলানি হত্যাকাণ্ডের পর আমাদের দেশের রাষ্ট্রপ্রধান তখন কোনো প্রতিবাদ পাঠাননি। পরে দেশ-বিদেশে বিএসএফের নিষ্ঠুর হত্যার ব্যাপারে আনত্দর্জাতিক সমপ্রদায়ের মধ্যে উদ্বেগ দেখা দিলে তখন সরকার দাঁয়সাড়াগোছের একটা প্রতিবাদ ভারত সরকারের কাছে করতে দেখা যায়। এ বছর ভারতীয় সীমানত্দ রৰীদের হাতে ৩৬ জন নিরীহ বাংলাদেশি নিহত হন। গত এক দশকে সীমানত্দরৰী বিএসএফ আমাদের সিট মহলের ৯৯৬ জন নিরীহ লোককে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। ভারতীয় অংশের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার ভাঙ্গামোড়, কাশীপুর এবং ফুলবাড়িয়া সদর ভারতীয় ছিটমহলের ভেতর বাংলাদেশি চন্দ্রখানা ছিটমহল। এখানে ৪০০ লোক মানচিত্রের বলয়ে পড়ে মানবেতন জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে। আর এ ছিটমহলের আয়তন ১০০ একর। অপরদিকে ভারতীয় সীমানত্দবাহিনী বিয়ানীবাজারের সুতারকান্দি সীমানত্দের ১৩৬০ নাম্বার পিলারের প্রায় ১৫০ গজ দূরে ১৯৮৯ সাল থেকে একটি আনত্দঃরাজ্য মহাসড়কে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ প্রকল্প গ্রহণ করে। এ কাঁটাতারের বেড়ার ফলে গজুকাটা, বড়গ্রাম, সুতারকান্দি চাতলপার, জাড়াপাড়, সারপার, লাফাকুনা, নয়াগ্রাম, ভোবারতলা টেকইকোনা, লাঠিটিলা, বারজনি, উজিনপুর, লক্ষ্মীপুর বাজার, জামডহর, উজান জামডহর, গোডাউন, সোনাপুর, লোহার মহল, বেউরসহ ত্রিশটি গ্রামের ৪০ সহস্রাধিক মানুষের চরম দুর্ভোগের শিকার পোহাতে হচ্ছে। তাছাড়া যে সব সীমানত্দ এলাকার মধ্যে বিএসএফের সবচেয়ে বেশি অশুভ তৎপরতা লৰ্য করা যায় সেগুলোর মধ্যে-খাসুরিয়া, বুড়িমারী, ভূরঙ্গামারী, দৌলতপুর, আটোয়ারী, গাংনি কাশিপুর, নবীনগর, ভোমরা, মহেশপুর, জৈনত্দপুর, দেবহাটা, তেঁতুলিয়া, বৌমারীর ভঙ্গুরচর, নওদাপাড়া, ডিবির হাওর, চন্দ্র খানা, সুরমা চা বাগান, গাতিপাড়া, রানী শংকৈর, বালিয়াভাঙ্গা, মকসেদপুর, ঘোনা সীমানত্দ, শ্যামনগর, শ্যামকুড়া ও দাউদপুর সীমানত্দের ছিটমহলবাসীর কৃষকর, জেলে, রাখাল, শ্রমিক এবং গরম্ন ব্যবসায়ীরা বিএসএফের কবলে আক্রানত্দের শিকার হন সবচেয়ে বেশি। এদিকে ১৯৭৪ সালের মুজিব-ইন্দিরা চুক্তির আলোকে বাংলাদেশের অদখলীয় ভূমি এবং অনিষ্পতি সীমানা নির্ধারণে গত নভেম্বরে দিলিস্নতে যৌথ সীমানা নির্ধারণের কার্যকরি গ্রম্নপের (জেবিডাবিস্নউজি) সভায় বাংলাদেশের অবস্থান নির্ধারণের আনত্দঃমন্ত্রণালয় বৈঠক আয়োজন করা হয়। বর্তমান সরকার ৰমতায় আসার পর দু'দেশের স্বরাষ্ট্র সচিব এবং বিডিআর ও বিএসএফের মহাপরিচালক পর্যায়ে বৈঠকে ভারতের পৰ থেকে অনানুষ্ঠানিকভাবে সীমানার সংঘাত ও মালিকানাবিহীন অপদখলীয় সম্পত্তি হসত্দানত্দরের প্রসত্দাব করে। এ প্রসত্দাবে সীমানা নির্ধারণ করতে হলে ভারত অপতৎপরতার মাধ্যমে বেশি জমি দখল করার একটা আশঙ্কা থেকে যায়। তথ্যমতে, বাংলাদেশের অভ্যনত্দরে ভারতের অপদখলীয় ভূমি রয়েছে ৩ হাজার ২৪ একর । আর ভারতের মধ্যে বাংলাদেশের মধ্যে রয়েছে ৩ হাজার ৫৬ একর। অপরদিকে বাংলাদেশের ভেতর থাকা ভারতের ১১১টি ছিটমহলের মোট জমির পরিমাণ ১৭ হাজার ১৬০ একর। আর ভারতের ভেতর থাকা বাংলাদেশের ৫১টি ছিটমহলের জমির পরিমাণ ৭ হাজার ১১০ একর। এদিকে দুদেশের মধ্যে অনিষ্পতি সীমানা রয়েছে ছয় কিলোমিটার। তাছাড়া সিলেটের জকিগঞ্জ এলাকার সুরমা নদের ৪০ কিলোমিটার এবং কুশিয়ার নদের ২৬ কিলোমিটার অভিন্ন সীমানত্দ নদী হিসেবে চিহ্নিত। বর্ষার করাল স্রোতে বাংলাদেশ অংশে ব্যাপক নদী ভাঙনের শিকার হয়। আর শুকনো মৌসুমে ভারত প্রানত্দে চর জেগে উঠে ৩ হাজার একর জমি ভারত ভূখণ্ডে চলে যায়। ভারতের সাথে সীমানত্দবর্তী নদীভাঙন রোধ সমঝোতা থাকলেও তা মূলত কোনো কার্যকর ভূমিকায় আসীন হচ্ছে না। আর এককভাবে বাংলাদেশের কিছু করাও সম্ভব নয়। ফলে ভারতের কবল থেকে জমি উদ্ধার করতে হলে শীর্ষ পর্যায়ে রাজনৈতিক প্রচেষ্টা ব্যতীত কোনোমতেই সম্ভব নয়। নদীভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড নদী দুটির তীর সংরৰণ করার জন্য কয়েকটি প্রকল্প হাতে নিলেও মন্ত্রণালয় তা অনুমোদন করেননি। ফলে অভিন্ন নদী সমস্যাটি গোচরেই রয়ে গেছে। ভারতীয় বিএসএফ তাদের নগ্ন থাবা যেভাবে বাংলাদেশের মানুষের ওপর বিসত্দার করে চলেছে তাতে সীমানত্দের এপারে লাশের পরিসংখ্যান দিন দিন বেড়েই চলেছে। তার মধ্যে ২০০৭ সালে হত্যা করে ১২০ জন এবং তাদের নির্যাতনে আহত হয় ৮২ জন আর তারা ৮৭ জনকে অপহরণ করে। ২০০৮ সালে বিএসএফ ৬২ জনকে হত্যা করে ও ৪৭ জন তাদের নির্মম নির্যাতনের শিকার হন এবং তখন ৮১ জন অপহরণের কবলে পড়েন। ২০০৯ সালে ৯৮ জনকে হত্যা ও ৭৭ জন আহত হন এবং ২৫ জন অপহরণের শিকার হয়েছেন। ২০১০ সালে ৮৪ জন বিএসএফ কর্তৃক নৃশংসভাবে হত্যাকাণ্ডের শিকার হন আর আহত হন ৭৭ জন এবং ২৫ জন লোককে তারা অপহরণ করেন। ২০১১ সালে এ পর্যনত্দ ৩৬ জন হত্যাকাণ্ডের শিকার হন। বিজিবি দেশের উচ্চ পর্যায় থেকে বারবার কূটনৈতিক চ্যানেলে ভারতের সাথে আমাদের অমীমাংসিত বিষয়গুলো নিয়ে দেন-দরবার করার কথা বললেও সরকার এ ৰেত্রে নিষ্ক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊধর্্বতন কর্মকর্তারা সিটমহলগুলো বিনিময়ের মাধ্যমে সমঝোতার পদৰেপ নেয়ার ব্যাপারে উভয় দেশ একমত হয়েছেন। কিন্তু বাসত্দবমুখী কোনো পদৰেপ গ্রহণ না করার কারণে ভারতের সাথে আমাদের কূটনৈতিক ব্যর্থতাই ধীরে ধীরে প্রকাশ পেতে শুরম্ন করেছে। ফেলানি হত্যার পর সে দেশের উচ্চ পর্যায়ে বিএসএফকে রাবার বুলেট দেয়ার ঘোষণা দিলেও তা এখন পর্যনত্দ সে পদ্ধতি প্রয়োগ করতে বিএসএফকে দেখা যায়নি। ভারতীয় সীমানত্দবাহিনী বিএসএফের শীর্ষ কর্মকর্তা হেড কোয়ার্টার্সে বিএসএফের (ইস্ট) স্পেশাল ডিরেক্টর জেনারেল প্রণয় সাহা শিলিগুড়িতে তার এক বক্তব্যে ফেলানি হত্যাকাণ্ডে বাংলাদেশসহ আনত্দর্জাতিক পরিমণ্ডলে ব্যাপক সমালোচনার ঝড় ওঠলে সে দেশের সীমানত্দরৰীদের রাবার বুলেট দেয়ার কথা বলেন। সে লৰ্যে তাদের 'পাম্প অ্যাকশন বোর গানস' দেয়ার কথা বলেছেন। কিন্তু সে পদৰেপ কার্যকর না করায় বিএসএফের হত্যাযজ্ঞ বন্ধ হচ্ছে না। তারা আবারো মানুষ হত্যায় মেতে ওঠেছে। ফেলানি হত্যার পরপরই দেশের মানুষ প্রতিবাদ করার পাশাপাশি বিদেশের মাটির নিউইয়র্কে পর্যনত্দ বাঙালি অধিবাসীরা মানবন্ধন করে ভারতের হত্যাযজ্ঞের ব্যাপারে প্রতিবাদ করেন। সেখানে 'আমরা বাংলাদেশে' নামের সংগঠনের পৰ থেকে নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসের গ্রান্ড সুইটস অ্যান্ড রেস্টুরেন্টে প্রতিবাদ সভার আয়োজন করেন। গত ১৮ থেকে ২০ জানুযারি ঢাকায দু'দেশের স্বরাষ্ট্রসচিব পর্যায় কিশোরী ফেলানি হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্থান পায়। বাংলাদেশ সরকার ফেলানি হত্যাকাণ্ড নিয়ে প্রথম পর্যায়ে কোনো প্রতিবাদ না করলেও দেশ এবং বিদেশে প্রতিবাদের ঝড় ওঠলে তখন সরকার স্বরাষ্ট্র সচিব পর্যায় বিষয়টি উত্থাপন করেন। কিন্তু সে বৈঠকে ফেলানিকে নৃশংস হত্যার ব্যাপারে ভারতের পৰ থেকে দুঃখ প্রকাশ ছাড়া কোনো ৰমা চাওয়ার বিষয়টি সামনে আসেনি। পরে ভারত সরকার দেশি-বিদেশি মানবাধিকার সংগঠনের সোচ্চার ভূমিকায় সে দেশের বিএসএফকে তাদের পদ্ধতিগতভাবে মারণাস্ত্র রাখার বিকল্প হিসেবে রাবার বুলেট দেয়ার ঘোষণা দেন। কিন্তু এ ঘোষণাও অন্যবারের মতো তিমিরেই অসত্দমিত হয়ে যায়। ভারত সরকার বাংলাদেশি হত্যায় কয়েক দফা বৈঠক চালালেও তা থেকে বাংলাদেশের মানুষ কোনো প্রকার সুফলভোগী হতে পারেনি। আর আমাদের দেশের কূটনৈতিক ব্যর্থতায় ভারত এহেন অপরাধ বারবার ঘটানোর সুযোগ পাচ্ছে। ভারতে সাথে পাকিসত্দান এবং অন্যান্য দেশের সাথে সীমানত্দ এলাকা নিয়ে বৈরী ভাব থাকলেও সেখানে কোনো হত্যাযজ্ঞের ঘটনা একটা চোখে পড়েনি। তার কারণ হলো পাকিসত্দানের সাথে ভারতের বৈরী সম্পর্ক রয়েছে আর তার ফলশ্রম্নতিতেই সে দেশের সীমানত্দবাসীরা সব সময় সতর্কতা অবলম্বন করে চলেন। কিন্তু ভারতের সাথে পাকিসত্দানের মতো আমাদের সে রকম বৈরী সম্পর্ক না থাকার কারণে ভারতের ভূখণ্ডে বাংলাদেশি ভয়ভীতির ঊধের্্ব থেকে ভারতে প্রবেশ করে থাকেন। তাছাড়া মানচিত্রের কাঠামোগত একটির কারণে অনেককে সীমানা পার হয়ে ভারতে কাজ করতে পর্যনত্দ যেতে হয়। আর এ কারণেই আমাদের সীমানত্দের অনেক সাধারণ নিরীহ মানুষের প্রাণ সংহারের ঘটনা ঘটাতে পারছে সীমানত্দরৰী বিএসএফ। ফেলানি হত্যার পর বাংলাদেশ সরকার যেভাবে নিষ্ক্রিয়তা দেখিয়েছে তা অন্য কোনো সরকার প্রধানদের করতে দেখা যায় না। ভারতের একজন অধিবাসী শ্রীলংকায় অবৈধ প্রবেশের দায়ে শ্রীলংকার কোস্টগার্ড তাকে হত্যা করে। আর এ কারণে শ্রীলংকাকে কূটনৈতিক পর্যায়ে বড় ধরনের জবাবদিহি করতে হয়েছে। কিন্তু আমাদের দেশের সরকার প্রধান যে ধরনের কুষ্মান্ড ভূমিকা গ্রহণ করছেন তাতে করে ভারতের বিএসএফ অসহিষ্ণু হয়ে ওঠছে। এবার কি বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে বিএসএফ কর্তৃক হত্যা বন্ধে আমাদের দেশের সরকার প্রধান কোনো ফলপ্রসূ ভূমিকায় অবতীর্ণ হবেন? না কি বাংলাদেশের অধিবাসীরা এভাবেই নির্যাতন ও নিগৃহীত হবেন। ভারতের সাথে আমাদের রয়েছে সুসম্পর্ক। আমাদের দেশের করিডোর ব্যবহারে আমাদের সরকার প্রধান ভারতকে ভালো সুযোগ-সুবিধা পর্যনত্দ দিয়েছেন, তাহলে কেন বাংলাদেশি নাগরিককে নির্বিচারে হত্যাকাণ্ড ঘটালেও সরকার কূটনৈতিক ব্যর্থতায় পর্যবসিত হবেন। সিটমহলবাসীরা এ দেশের অধিবাসী হিসেবে তারা কি সরকারের কাছে তাদের রৰা করার এতটুকু দাবি করতে পারে না? ১৪ এপ্রিল বেনাপোল সাদিপুর সীমানত্দে ভারতীয় বিএসএফ বাংলাদেশি একজন গরম্ন ব্যবসায়ীকে গুলি করে হত্যা করেছে। সে সাদিপুর সীমানত্দে লেবুতলা পোস্ট দিয়ে ভারত থেকে গরম্ন নিয়ে আসার পথে বিএসএফ এ হত্যাকাণ্ড ঘটায় এবং তার লাশ টেনে-হিঁচড়ে নিয়ে যায়। ১৮ এপ্রিল সাতৰীরা সীমানত্দের বিপরীতে ভারতের কলাপোত এলাকায় বিএসএফ বাংলাদেশি দুই গরম্ন রাখালকে গুলি করে হত্যা করেছে। ১০ এপ্রিল ভোরে নওগা পোরশা উপজেলার নিতপুর সীমানত্দের ২২৮/২ সীমানত্দ পিলারের কাছ দিয়ে তিনজন গরম্ন ব্যবসায়ী গরম্ন নিয়ে আসার পথে তাদের ভারতীয় ১৮৩ ব্যাটালিয়নের বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা তাদের ওপর গুলিবর্ষণ করলে ঘটনাস্থলেই গরম্ন ব্যবসায়ী সানাউলস্নাহ (৪০) মারা যায় এবং অপর দু'জন নাজমুল (৩৫) এবং হিদুল (৩০) আহত হয়। গত ১৫ জানুয়ারি চাঁপাইনবাবগঞ্জের সীমানত্দবর্তী শিবগঞ্জ উপজেলার দরিদ্র বর্গাচাষী শাহজাহান রাশু সীমানত্দের বেড়ার এ পাশ থেকে অপরপাশের বন্ধুর সাথে কথা বলা অবস্থায় তাকে বিএসএফ ধরে নিয়ে তার হাত-পা ভেঙে দিয়ে বাংলাদেশ ভূখণ্ডে ফেলে রেখে যায়। পরে বর্ডার গার্ড অফ বাংলাদেশ তাকে সংজ্ঞাহীন অবস্থায় উদ্ধার করেন। সীমানত্দের মেইন পিলার ৪-এর সাব পিলার ৫ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় চাঁপাইনবাবগঞ্জ ৩৯ বর্ডার গার্ড অধিনায়ক আবুবকর প্রতিবাদ পাটিয়ে চিঠি পাঠালেও বিএসএফ তার কোনো জবাব দেয়নি। গত ২৭ জানুয়ারি বাংলাদেশ-ত্রিপুরা সীমানত্দে আবদুল হক (৩০) নামের একজনকে বিএসএফ সদস্যরা হত্যা করে। সে ঘটনায় সীমানত্দবর্তী দুর্গাপুর এলাকায় চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের হস্থৰেপে তা প্রশমিত হয়। ১৭ জানুয়ারি কালা সাদেক সীমানত্দ চৌকির কাছ থেকে বাংলাদেশে প্রবেশকালে শঙ্কর নামে একজন ফটোগ্রাফারকে হাত-পা বেঁধে এবং চোখে কাপড় বেঁধে তাকে ধরে নিয়ে যায়। এ ঘটনা তখন শঙ্করের মা সেক্টর কমান্ডার এবং ঢাকার মহাপরিচালক দপ্তরে জানালেও তাকে ফেরত পাওয়া যায়নি। ২৭ জানুয়ারি কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ী সীমানত্দে বাংলাদেশি ভূখণ্ডে দাশিয়ারছরা সিটমহল থেকে সাঈদুল (২৫) এবং জাহাঙ্গীর (২৫) নামের দুজন ভারত থেকে কাজ করে ফেরার পথে তাদের বিএসএফ ধরে নিয়ে প্রকাশ্যে তাদের মারধর করার দৃশ্য শত শত লোক দেখলেও তাদের রৰা করতে কেউ পারেনি। বিষয়টি বিজিবিকে জানালেও আইনি জটিলতার কারণে তাদের রৰার্থে এগিয়ে আসেনি। ৩১ জানুয়ারি বেনাপোল-পুটখালী সীমানত্দে বুলবুল আহমেদ (৩০) নামের বাংলাদেশি যুবককে কুপিয়ে যখম করে বিএসএফ। আত্মীয়ের বাসা থেকে বেড়ানো শেষে বাড়ি ফেরার সময় আরাইল ক্যাম্পের সদস্যরা তাড়া করে তাকে ধরে ফেলে কুপিয়ে মারাত্মক যখম অবস্থায় নোম্যান্স ল্যান্ডে ফেলে যায়। ১২ ফেব্রম্নয়ারি গভীর রাতে দু'জন গরম্ন ব্যবসায়ী জলিল (৩০) এবং অপরজন পরিচয়হীন ব্যক্তিকে বিএসএফ হত্যা করে। তারা ২৪ পরগনার বনগাঁও থানার খলিদপুর গ্রামের অধিবাসী বলে জানায়। ৭ মার্চ চুয়াডাঙ্গার দামুরহুদা উপজেলার দর্শনা নিমতলা সীমানত্দ থেকে আ. মজিদ নামে এক বাংলাদেশি কৃষককে অপহরণ করেছে বিএসএফ। শ্যামপুর এলাকার এ কৃষক নিমতলা সীমানত্দের ৭৪ নাম্বার মেইন পিলারের পাশ থেকে ভারতের নদীয়া জেলার ইস্টগঞ্জ থানার সীমানত্দের ২২ ব্যাটালিয়ান গেদে ক্যাম্পের বিএসএফ অপহরণ করেন। গত ১৪ মার্চ বাংলাদেশ ভূখণ্ডে বিএসএফ সদস্যরা প্রবেশ করে চাতনা পুর স্থলবন্দরের বাংলাদেশের ৩ জন পরিবহন শ্রমিককে নির্যাতন করেন। ৮ এপ্রিল দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় দাউদপুর সীমানত্দে আব্দুর রহিম নামে একজনকে বিএসএফ গুলি করে আহত করেন। ১১ এপ্রিল রাজশাহীর পবা উপজেলার সোনাইকান্দি সীমানত্দে বিএসএফ আলমগীর হোসেন কালু (৩০) নামের একজনকে গুলি করে হত্যা করেছে। ১০ এপ্রিল সাতৰীরা বৈকারী সীমানত্দের কাছে বিএসএফ আনারম্নল ইসলাম এবং খোকন গাজীকে আটক করেন। আটকের পর তাদের রাইফেলের বাট দিয়ে আঘাত করে গুরম্নতর যখম করেন। এভাবেই আমদের সিট মহলবাসী অত্যাচারের শিকার হয়ে আসলেও দেশ প্রধানরা তাদের রৰায় সম্পূর্ণ রূপে ব্যর্থ হচ্ছে। সর্বোচ্চ কূটনৈতিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে আমাদের রাজনীতিবিদরা তাদের সমস্যা সমাধানে এগিয়ে এসে অকৃপণভাবে বিএসএফর কবল থেকে তাদের রৰা করবে দেশবাসীর সেটাই প্রত্যাশ।
No comments:
Write comments