Flickr

Sunday, 28 December 2008

রয়ে গেছি অন্ধকারেই

Posted by   on

মনটা ভীষন খারাপ হয়ে গেল। একটা ডুকমেন্টারী দেখেতে গিয়ে মনটা এতো খারাপ হয়ে যাবে ভাবতেও পারিনি। বলে কি লোকজন - বিশ্বে এখনও দাসপ্রথা চালু আছে। বর্তমানে বিশ্বে দাসের সংখ্যা সর্বকালের সর্বোচ্চ সংখ্যাকে ছাড়িয়ে গেছে। একসময় দাসপ্রথাই ছিলো উতপাদনের উপায়। দাসপ্রথাকে অর্থনীতির অবিচ্ছেদ্য অংশ হিসাবে বিবেচনা করতে হতো। তারপর সমাজ পরিবর্তন হয়ে গেছে। অর্থনীতি কৃষির উপরনির্ভশীরতা কমিয়ে শিল্পের উপর নির্ভরশীল হয়েছে। আইন করে দাস প্রথা বন্ধ করা হয়েছে। মজার বিষয় হলো ভারতবর্ষ আমেরিকার আগেই দাস বিরোধী আইন পাশ করেছিলো। কিন্তু, দাস প্রথা কি উঠে গেছে? মোটেও না। আমেরিকা ভিত্তিক দাসপ্রথা বিরোধী একটা সংগঠন ভারতে গিয়ে একটা পুরো গ্রাম দেখতে পায় যারা তিন পুরুষ যাবত দাসত্বের বন্ধনে আবদ্ধ। তাদের পূর্বপুরুষরা মাথাপিছু ৬৭ সেন্টের বিনিময়ে দাসত্ব গ্রহন করেছিলো। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে অবশেষে সেই গ্রামকে দাসত্বমুক্ত করে সংগঠনটি। একটা পরিসংখ্যান দেখা যায় - সমগ্র বিশ্বে দাসের সংখ্যা ২৭ মিলিয়ন। কারো কারো মতে এই সংখ্যা ২০০ মিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে। যাদের সিংহভাগ এশিয়াতে বসবাস করে। এর মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ চিত্র দেখা যায় - শিশু আর নারী দাসদের - যাদের যৌনব্যবসার জন্যে এক মহাদেশ থেকে আরেক মহাদেশে পাচার করা হয়। ডকুমেন্টারীতে একটা দৃশ্য ছিল - আমেরিকান এক সংবাদকর্মী কিভাবে হাইতি থেকে ৫০ ডলারের বিনিময়ে একটা অল্প বয়সের মেয়েকে কেনার জন্যে দাম দর করছে। কঠিন একটা দৃশ্য। সেখানে শুরুতে দালাল জানতে চাইলো - মেয়েটাকে দিয়ে কি কি কাজ করাতে চায়। যদি যৌনদাসী হিসাবে ব্যবহার করতে চায়, তবে মূল্য একটু বেশী পড়বে। হায়, মানবিকতা! সিডরের পর কিছু খবরে দেখা গেছে বাংলাদেশে দাস প্রথা এখনও সক্রিয়ভাবে চালু আছে। গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার জন্যে শ্রমিকদের দাস হিসাবে নিজেকে মালিকের হাতে তুলে দিতে হয়। জানি না বাংলাদেশের কোন সংগঠন, সরকার বা সচেতন মানুষ সুন্দরবন এলাকায় সক্রিয় দাস ব্যবসার বিষয়ে কোন কার্যকরী চিন্তাভাবনা করছে কিনা। বাংলাদেশ থেকে নারী শ্রমিকের নামে পাচার হওয়া মহিলা ও শিশুরাও দাস হিসাবেই বিক্রি হয়। সবচেয়ে নোংরা আর অমানবিক দাস ব্যবসার কথা জানা যায় - যার মাধ্যমে বাংলাদেশসহ তৃতীয় বিশ্বের শিশুদের উটের জকি হিসাবে মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে বিক্রি করা হয় - যাদের একটা বড় অংশই আর জীবিত ফিরে আসে না। দাস প্রথা নিয়ে বর্তমানে বিশ্বের রাজনীতিবিদদের মধ্যেও চলছে নোংর খেলা। এরা "হিউম্যান ট্রাফিকিং" বা "সেক্স ট্রেড" ইত্যাদি নামে এই বিষয়টাকে অবিহিত করলেও - দাস ব্যবসা হিসাবে স্বীকৃতি দিতে নারাজ। নামকরনের আড়ালে আদিম এই পাশবিক প্রথাকে বিশ্ব থেকে পরিপূর্ন ভাবে উচ্ছেদ করা জরুরী। না হলে পশুর মতো একজন মানুষকে যখন কেনাবেচার হাটে উঠানো হয় - একজন মানুষ হিসাবে আমরা খুবই ছোট হয়ে যাই।

No comments:
Write comments
Hey, we've just launched a new custom color Blogger template. You'll like it - https://t.co/quGl87I2PZ
Join Our Newsletter