Flickr

Thursday, 28 August 2014

হা করে দাঁড়িয়ে আছে ভীতির এক পরিবেশ

হা করে দাঁড়িয়ে আছে ভীতির এক পরিবেশ
কি চেয়েছিল আর কি পেল দেশের জনগণ। শান্তির পরিবেশ পেল না, পেল না আলোকিত সমাজও। বরং সামনে হা করে দাঁড়িয়ে আছে এক আতঙ্কের পরিবেশ, ভীতির পরিবেশ। স্বাধীনতার ৪৩ বছর পরে এ কেমন সমাজ উপহার দিল আমাদের সরকার এবং গণতন্ত্রের চ্যাম্পিয়নরা! ৭ হত্যাকা-ের পর সারাদেশ যখন বিক্ষুব্ধ তখনও আতঙ্কের মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে নজরুলসহ নারায়ণগঞ্জের নিহত ৭ জনের পরিবারের সদস্যদের। পরিবারগুলোকে হত্যাকা- নিয়ে বাড়াবাড়ি না করতে নানাভাবে হুমকি দেয়া হচ্ছে। পরিবারের আরো সদস্য হারাতে হবে বলে হুমকিদাতারা জানিয়ে দিয়েছে। তবে কোত্থেকে তারা এই হুমকি দিচ্ছে সে বিষয়টি রহস্যঘেরা। নজরুলের পরিবারের পক্ষ থেকে গত মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে র‌্যাব’র বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। নজরুলের শ্বশুর শহীদ চেয়ারম্যান লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের কাছে। উল্লেখ্য যে, গত ২৭ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জ থেকে অপহৃত হন নজরুল, তার তিন বন্ধু, গাড়ির ড্রাইভার এবং সিনিয়র আইনজীবী চন্দন সরকার ও তার ড্রাইভার। অপহরণ ঘটনার পরই নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও সিদ্ধিরগঞ্জ আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি নূর হোসেন, থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইয়াসিন, হাসমত আলী হাসু, ইকবাল হোসেন ও আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ফতুল্লা থানায় মামলা দায়ের করা হয়। তবে এই আসামীদের কাউকেই গ্রেফতার করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো। এই ব্যর্থতার জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের বিরুদ্ধে উত্থাপিত হয়েছে নানা অভিযোগ। ইতোমধ্যে নারায়ণগঞ্জের ডিসি, এসপি, র‌্যাব ১১-এর কমান্ডিং অফিসার এবং ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসিকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আর এখন তো পত্র-পত্রিকার রিপোর্ট থেকে জানা যাচ্ছে যে, মন্ত্রীর ছেলের মধ্যস্থতায় নজরুল খুনের চুক্তি হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়ার জামাতা র‌্যাব ১১-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল তারেক সাঈদসহ তিন র‌্যাব কর্মকর্তাকে নারায়ণগঞ্জের ৭ ব্যক্তি অপহরণ ও খুনের ঘটনায় বরখাস্ত  করা হয়েছে। বরখাস্তকৃত বাকি দু’জন হলেন মেজর আরিফ ও লে. রানা। গত মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জ পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের নিচতলায় নামায ঘরে নিহত নজরুলের শ্বশুর শহীদ চেয়ারম্যান সাংবাদিকদের জানান, ৬ কোটি টাকার বিনিময়ে ৭ খুনের চুক্তি হয়। র‌্যাব’র সঙ্গে এ চুক্তি করেন নূর হোসেন। আর এ কাজে মধ্যস্থতা করে দেন এক মন্ত্রীর ছেলে। অভিযুক্ত নূর হোসেনের সঙ্গে সড়ক ও জনপথের ঠিকাদারি কাজ করতেন মন্ত্রীপুত্র। তারা ঢাকা-চট্টগ্রাম চারলেন সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের একটি অংশের উপকরণ সরবরাহের কাজ করছিলেন যৌথভাবে। কী অপূর্ব সম্মিলন- ঠিকাদারি, ব্যবসা, রাজনীতি, খুন সবই চলছিল একসাথে!
আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসনের লোকজন দায়িত্বে অবহেলা বা অপরাধ করলে সরকার শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেবেÑ এটাই স্বাভাবিক। তবে এই সব ব্যবস্থায় আন্তরিকতা কিংবা ন্যায় নিষ্ঠার অভাব থাকলে জনমনে হতাশার মাত্রা বাড়ে। যেমন নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় জনগণ এবং নিহতদের পরিবারের সদস্যরা এখন বলছেন, যেসব অভিযান ও ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে তা সবই লোক দেখানো। অভিযোগ জানানোর পরপরই দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেয়া হলে এতগুলো মানুষকে প্রাণ হারাতে হতো না। প্রসঙ্গত নারায়ণগঞ্জের ডিসি ও এসপিকে প্রত্যাহারের প্রসঙ্গটি এখানে উল্লেখ করা যায়। এ ব্যাপারে পত্রিকায় শিরোনাম করা হয়েছে, ‘নরায়ণগঞ্জে সেই ডিসি-এসপিকে প্রাইজ পোস্টিং।’ খবরটিতে বলা হয়, নরায়ণগঞ্জের আলোচিত জেলা প্রশাসক মনোজকান্তি বড়াল ও পুলিশ সুপার সৈয়দ নূরুল ইসলাম প্রাইজ পোস্টিং পেয়েছেন। চাঞ্চল্যকর ৭ অপহরণ ও হত্যাকা-ের ক্ষত শুকানোর আগেই তারা পদায়ন পেয়েছেন যথাক্রমে নৌ-পরিবহন মন্ত্রণালয় ও পুলিশের বিশেষ শাখায় (এসবি)। ব্যর্থতার অভিযোগে প্রত্যাহারের দিনই একই আদেশে তাদের নতুন কর্মস্থলে পদায়ন করা হয়। বিভাগীয় ব্যবস্থা বা অনুসন্ধান না করেই এই দুই কর্মকর্তাকে গুরুত্বপূর্ণ স্থানে পদায়ন করায় প্রশাসনে চলছে কানাঘুষা। অনেকেই বলছেন, এত বড় ব্যর্থতার পর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া উচিত ছিল। খতিয়ে দেখা উচিত ছিল তাদের ভূমিকা। কিন্তু তা না করে এদের পুরস্কৃত করা হয়েছে। তাছাড়া অপহরণ ও হত্যা মামলার প্রধান আসামী নূর হোসেন অস্ত্রের লাইসেন্স পেয়েছেন এই ডিসি ও এসপি’র মাধ্যমে। শুধু তাই নয়, নারায়ণগঞ্জের চিহ্নিত বহু ‘রাজনৈতিক অপরাধী’ও অস্ত্রের লাইসেন্স পেয়েছেন। ফলে যাচাই-বাছাই না করে যাকে- তাকে অস্ত্রের লাইসেন্স দেয়ার অভিযোগ উঠেছে তাদের বিরুদ্ধে। এমন চিত্র বিবেচনায় এনে এখন অনেকেই বলছেন, প্রশাসন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণেও আছে রকমফের। এজন্যেই বলা হচ্ছে সব ব্যবস্থাই ব্যবস্থা নয়, লোক দেখানো ব্যবস্থাও লক্ষ্য করা যায়। এ কারণেই হয়তো ৭ হত্যাকা-ের পরও দেশে গুম ও অপহরণের ঘটনা ঘটেই চলেছে। গত রোববার সুনামগঞ্জ থেকে গাড়িচালকসহ বিএনপি’র এক প্রবাসী নেতা ও সিলেট নগরী থেকে ব্যাংকের এক প্রহরী অপহৃত হয়েছেন। অপহরণের এইসব ঘটনায় সিলেটে ও সুনামগঞ্জে তোলপাড় চলছে। সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি’র সাবেক সহ-সভাপতি ও যুক্তরাজ্য যুবদলের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মুজিবুর রহমান মুজিব রোববার বিকেলে সুনামগঞ্জ থেকে ছাতকে ফেরার পথে গাড়িচালকসহ নিখোঁজ হন।
আমরা জানি, বর্তমান সরকারের কর্তাব্যক্তিরা গুম, অপহরণ ও বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ের বিরুদ্ধে বেশ শক্ত কথা বলেছিলেন। সুশাসন প্রতিষ্ঠার ব্যাপারেও তারা অঙ্গীকার করেছিলেন। কিন্তু তারা কথা রাখেননি। বিরোধীদলীয় নেতা-কর্মীদের দমন-পীড়নের ব্যাপারে তাদের অতি উৎসাহ লক্ষ্য করা গেলেও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তাদের তেমন আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। বরং র‌্যাব ও পুলিশকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহারের কারণে এখন তারা নিজেদের স্বার্থে নিজেদের ব্যবহারের ক্ষেত্রে বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরা এখন বলছেন, কর্তাব্যক্তিরা আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের দিয়ে একটি অন্যায় কাজ করালে, তারা নিজেরা আরো দশটি অন্যায় কাজ করার উৎসাহ পায়। এ কারণেই এখন হয়তো পত্রিকার প্রধান শিরোনাম হচ্ছে, ‘র‌্যাব-পুলিশই আইন মানে না।’ আমরা জানি, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে বলা হয় আইনের রক্ষক। দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন তাদের দায়িত্ব। এই লক্ষ্যে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি আইন লঙ্ঘনকারীদের বিচারের মুখোমুখি দাঁড় করানোর দায়িত্ব পালন করতে হয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের। কিন্তু দুঃখের বিষয় হলো, গত কয়েক বছরে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কিছু সদস্যের আইন লঙ্ঘনের প্রবণতা বেড়ে যাওয়ায় মহামারীতে রূপ নিয়েছে গুম, অপহরণ ও খুন। এর জন্য আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর রাজনৈতিক ব্যবহারকে দায়ী করছেন সমাজ বিশ্লেষকরা। লক্ষণীয় বিষয় হলো- কাউকে অন্যায়ভাবে গ্রেফতার বা আটক রেখেই নয়; ছিনতাই, ডাকাতি, চাঁদাবাজি, খুন-খারাবির মত বেআইনী কর্মকা-েও জড়িয়ে পড়েছে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কিছু বিপথগামী সদস্য। সম্প্রতি দেশে সংঘটিত অপহরণ-গুমের মত অপরাধে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্য, বিশেষ করে র‌্যাব’র সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ তুলেছেন অপহৃতদের আপনজনরা। এ কারণে রাষ্ট্র জননিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে বলে মনে করছেন পর্যবেক্ষকরা। এই প্রসঙ্গে মানবাধিকার কর্মী, নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও আইনবিদরা বলছেন-আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে রাজনৈতিক কাজে অতিমাত্রায় ব্যবহারের কারণে তাদের মধ্যে বেপরোয়া মনোভাব প্রবল হয়ে উঠেছে। একই সাথে প্রাতিষ্ঠানিক জবাবদিহির অভাবে এসব বাহিনীর অনেক সদস্য অপরাধ করেও পার পেয়ে যাচ্ছেন। এমন অবস্থা চলতে থাকলে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির আরো বিপর্যয় ঘটবে।
আমরা জানি, হতাশার মধ্যে কোনো মুক্তি নেই। বর্তমান পরিস্থিতিতেও আমরা আশাবাদী হতে চাই। তবে আশাবাদের বাস্তব ভিত্তি রচনায় সরকারের প্রতিশ্রুত দায়িত্ব পালন খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের রাজনৈতিক কিংবা নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থে ব্যবহারের পরিবর্তে জনস্বার্থে পেশাগত দায়িত্ব পালনে বিধিবদ্ধ স্বাধীনতা দেয়া প্রয়োজন। আর বর্তমান সময়ে জনমনে আতঙ্ক ও ভীতির যে অস্বস্তিকর অবস্থা বিরাজ করছে তা দূর করতে অপরাধীদের বিরুদ্ধে দ্রুত দৃশ্যমান কিছু শাস্তিরও ব্যবস্থা করতে হবে। সরকারের কর্তাব্যক্তিদের মধ্যে সময়ের এইসব দাবি পূরণে কাক্সিক্ষত চেতনা জাগ্রত হয় কি নাÑ সেটাই এখন দেখার বিষয়।

Thursday, 14 August 2014

পানি নয়, ভারতের সাথে সম্পর্ক দৃঢ় করাই যদি লক্ষ্য হয়

কবির ‘পথ পানে চেয়ে রই’ পর্যন্ত না যেতেই ‘খিরকি দুয়ার খুলে দিতে দিতেই’ মরা তিস্তায় ভরা যৌবন আবার হারিয়ে গেছে। হঠাৎ করে মরা গাঙে (তিস্তা নদী) ভরা যৌবন এসেছিল। সে যৌবনে মাতোয়ারা হয়ে উঠেছিল উত্তরাঞ্চলের কিষাণ-কিষাণী। তিস্তায় পানি এসেছে; জমিতে ফসল ফলবে। ২৪ ঘণ্টায় উবে গেল সে স্বপ্ন।
এভাবে হঠাৎ পানি দেয়া বা বন্ধ রাখার পরিবর্তে এ বিষয়ে একটা স্থায়ী চুক্তি সম্পদনই অধিক শুফলদায়ক হবে বলে আমাদের বিশ্বাস। এ ইস্যুতে দেশের রাজনীতি উত্তপ্ত হয়ে উঠলেও সরকার কিছু করতে পারছে না। কারণ ভারত ব্যস্ত লোকসভা নির্বাচন নিয়ে। ফলে দিল্লির মনোভাব বোঝা যাচ্ছে না। ঢাকায় এক কূটনীতিক বলেন, ‘ভারতের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা বলা যাচ্ছে না। তারা নির্বাচন নিয়ে ভীষণ ব্যস্ত।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বলেন, ‘ভারতে নির্বাচন থাকায় তিস্তা চুক্তি নিয়ে কাজ করার এখন উপযুক্ত সময় নয়। নির্বাচনের পর এ বিষয়ে আরও প্রচেষ্টা চালানো হবে।’ (সূত্রঃ দৈনিক যুগান্তর ২২ এপ্রিল ২০১৪)
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন পূর্ববর্তী সরকারের আমলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডাঃ দিপু মনি একবার দ্ব্যর্থহীন ভাষায় আশাবাদ ব্যক্ত করেছিলেন যে, তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা নিয়ে দু’দেশের মধ্যে অচিরেই চুক্তি সম্পাদিত হচ্ছে।
২০১১ সালের সেপ্টেম্বরে ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের বাংলাদেশ সফর যথাসময়ে অনুষ্ঠিত ও সমাপ্ত হলেও সফরে দীর্ঘ প্রত্যাশিত তিস্তা চুক্তি সম্পাদিত হয়নি। উভয় দেশ ২০ শতাংশ পানি নদীর স্বাভাবিক প্রবাহের জন্য ছেড়ে দিয়ে অবশিষ্ট পানি উভয় দেশ সমান ভাগে ভাগ করে নেয়ার লক্ষ্যে ১৫ বছর মেয়াদি অন্তর্বতী চুক্তির খসড়া প্রস্তুত করে। ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সে সফরে প্রত্যাশিত তিস্তা চুক্তি সম্পাদিত না হওয়ার কারণ হিসেবে তখন বলা হয়েছিল, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির ঐ চুক্তি স্বাক্ষরে উপস্থিত থাকার কথা ছিল, তিনি আসতে না পারায় চুক্তি সম্পাদিত হতে পারেনি। প্রকৃতপক্ষে মমতা ব্যানার্জি চুক্তির বিরোধিতা করায় তা সই হয়নি।
ইতোমধ্যে মমতা ব্যানার্জী বলেছেন, তিস্তায় যে ‘জল’ আছে তাতে পশ্চিমবঙ্গেরই প্রয়োজন মেটে না, বাংলাদেশকে ‘জল’ দেব কিভাবে? এই বাহানায়ই বাংলাদেশকে তিস্তা নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে।
তারপরও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ অধিবেশন, সার্ক সম্মেলনসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে যোগদান করতে যেখানে গেছেন সেখানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে তিস্তার পানির প্রসঙ্গ তুলেছেন। মনমোহন বিব্রতকর অবস্থায় তুলে ধরে তিস্তার চুক্তি নিয়ে আন্তরিকতার কথাও বলেছেন। যদিও সেটা বাস্তবে ঘটেনি।
তিস্তা বিষয়ে আওয়ামী লীগ প্রথম থেকেই ভারতের কাছে নতজানু নীতি গ্রহণ করেছে বলে মন্তব্য করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল। তিনি বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর ক্ষমতায় স্থায়ী হতে ভারত আওয়ামী লীগকে স্পষ্ট সমর্থন দিয়েছে। আর ক্ষমতাসীন দলটি এ কারণে ভারতের প্রতি আরও দুর্বল হয়ে পড়েছে। স্বাভাবিকভাবেই আওয়ামী লীগ ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতাবোধ থেকে বের হতে না পেরে তিস্তা বিষয়ে দেশটির প্রতি নতজানুমূলক নীতি নিয়েছে।
ড. আসিফ নজরুল বলেন, তিস্তার পানি আদায়ের বিষয়ে দেশের মানুষ সচেতন। আর সে কারণেই তারা সম্প্রতি বিএনপির তিস্তা অভিমুখী লংমার্চের সঙ্গে একাতœতা প্রকাশ করেছেন। এ ইস্যুতে শুধু বিএনপি একা নয়, সিপিবি ও বাসদসহ বাম সংগঠনগুলোও তিস্তা অভিমুখে যাত্রাসহ অন্য কর্মসূচি পালন করেছে। আমি মনে করি, নাগরিক হিসেবে নিজেদের অধিকার রক্ষার খাতিরে বিএনপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দলের সদস্যরা এসব কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে নিজেদের কর্তব্য করছেন। তবে সরকারের উচিত এ কর্মসূচিকে ইতিবাচকভাবে ভারতসহ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তুলে ধরা। বৃহত্তর স্বার্থে সরকারের দলমত নির্বিশেষে তিস্তা চুক্তি সম্পর্কিত সব আন্দোলন-কর্মসূচিকে ‘ক্যাপিটালাইজ’ করা উচিত। একই সঙ্গে সরকারের উচিত দেশের খাতিরে এ আন্দোলনকে আরও বেগবান ও শক্তিশালী করে ভারতের কাছে উপস্থাপন করা।
আসিফ নজরুল বলেন, নিজেদের দাবি আদায়ে ১৯৭৬ সালে জননেতা মওলানা ভাসানী ফারাক্কা অভিমুখে মিছিল করেছিলেন। পরে জিয়াউর রহমান তিস্তা বিষয়ে চাপ তৈরি করেছিলেন। সেভাবে আবারও এখন তিস্তার অধিকার আদায়ে আমাদের চাপ তৈরি করতে হবে। তবে তিনি বলেন, অভিন্ন নদীর পানিপ্রাপ্তিতে আমাদের আন্তর্জাতিক আদালতে যাওয়ার প্রয়োজন নেই। বরং আন্তর্জাতিক চাপ প্রয়োগ করা যেতে পারে। এ জন্য সংশ্লিষ্ট আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোয় বিষয়টি উপস্থাপন করা যেতে পারে।
আসিফ নজরুল বলেন, দেশের মধ্যে সব প্রধান রাজনৈতিক দলকে ভিন্ন প্লাটফর্ম থেকে হলেও তিস্তা চুক্তির বিষয়ে জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। আগের চেয়ে গুরুত্ব দিয়ে সব মহল থেকে এ বিষয়ে অভিন্ন দাবি করতে হবে।
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নীরব থাকার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, এবারের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকুক ভারত তা স্পষ্টভাবে প্রমাণ করেছে। আর ভারতের এ ধরনের পক্ষপাতিত্ব আওয়ামী লীগকে ভারতের প্রতি আরও দুর্বল করে রেখেছে। সে কারণে ক্ষমতাসীন দলটি ভারতের কৃতজ্ঞতাবোধ থেকে বের হতে পারছে না। কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকারের সঠিকভাবে দেশ চালাতে হলে ভারতের নয়, দেশের জনগণের চাহিদা ও সমর্থনকেই গুরুত্ব দিতে হবে। (সূত্রঃ দৈনিক বাংলাদেশ প্রতিদিন ২৫ এপ্রিল ২০১৪)
ভারতের মনোভাব জানার জন্য বাংলাদেশের অপেক্ষার বিকল্প নেই। নিজেদের সেচ কাজে তিস্তায় পানি সরিয়ে নেয়ার বিষয়ে পশ্চিমবঙ্গ অনড় অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি তা অনেকটাই স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
বোরো মওসুমের কারণে ভারতের নির্বাচনের ফল পর্যন্ত পানির অপেক্ষায় থাকা কৃষকের পক্ষে সম্ভব নয়।  বর্তমান পরিস্থিতিতে বিকল্প হিসেবে অগভীর নলকূপ বসিয়ে সেচের কাজ চালানো হচ্ছে। তবে এতে সেচের ব্যয় বেড়ে গেছে ১০ গুণের বেশি। অগভীর নলকূপ বসিয়ে পানি সেচে একর প্রতি তিন হাজার টাকা বেশি খরচ হচ্ছে। তিস্তায় পানি থাকলে প্রতি একরে সেচের ব্যয় ৩৫০ টাকা। কিন্তু নলকূপে একরে সেচের খরচ দাঁড়ায় ৩৬০০ টাকা।
তিস্তায় পানি সংকটে বাংলাদেশে রাজনীতির মাঠ উত্তপ্ত হলেও পশ্চিমবঙ্গ নিজেদের চাহিদা মেটানোর প্রতি গুরুত্ব দিচ্ছে। ক্ষমতাসীন কংগ্রেসের সঙ্গে বিরোধের কারণেও মমতা ব্যানার্জি তিস্তা চুক্তি সই করার বিরোধিতা করছেন। ভারতকে বঞ্চিত করে নয়, বরং প্রাপ্ত পানি সুষম বণ্টন করে তিস্তায় সেচ কাজ চালানো যেতে পারে। পাশাপাশি, বাংলাদেশ ও ভারতে ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা বিবেচনা করে তিস্তায় পানি প্রবাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে দুই দেশকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। তিস্তার অববাহিকাভিত্তিক পানি ব্যবস্থাপনাতেও যেতে হবে।
আগামী দিনে ভারতের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক উন্নত করার পথে তিস্তা ইস্যু বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে। এতে যারা বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সুসম্পর্ক চান না তারাই লাভবান হবেন। তাই এ সমস্যার সমাধান জরুরি ভিত্তিতে করতে দুই দেশকে কাজ করতে হবে।
গজলডোবায় পানি প্রত্যাহারের পরও এ সময়ে প্রাকৃতিকভাবে চার থেকে পাঁচ হাজার কিউসেক পানি আসার কথা। ভারত একতরফাভাবে পানিপ্রবাহ কার্যত বন্ধ করেছে। এটা অনৈতিক কাজ। এ বিষয়ে রাজনৈতিক সম্পর্কের ভিত্তিতে ভারতের সঙ্গে পারস্পরিক লাভজনক সমাধানে পৌঁছতে হবে।

Tuesday, 12 August 2014

Human Rights Defenders Beaten and Detained by Bangladesh Police

Human Rights Defenders Beaten and Detained by Bangladesh Police


Police violently attacked human rights protesters participating in a hunger strike.
Moshrefa Mishu by Nowrose
Moshrefa Mishu (Workers Party)
Photo by Nowrose (Link: https://www.flickr.com/photos/40381104@N08/

(LONDON) - H.E. Sheikh Hasina
Prime Minister of Bangladesh
Old Sangsad Bhaban Tejgaon
Dhaka-1215, Bangladesh
Your Excellency,
I am William Nicholas Gomes, Human Rights Activist and Freelance Journalist.
I came to know about the illegal detention of Human rights defender Ms Moshrefa Mishu, Ms Joly Talukder, Ms Shabnam Hafiz and Mr Quamrul Hasan detained by Bangladesh police.
I was infromed by frontline defenders that on 7 August 2014, police officers from the Detective Branch detained trade union leaders Ms Moshrefa Mishu and Ms Joly Talukder before releasing them at 9 pm that evening. One day earlier, police attacked a group of human rights defenders at the Hossain Market of Badda in Dhaka, where over a thousand Tuba Group garment workers have been protesting on hunger strike since 28 July 2014.
On 6 August 2014, the human rights defenders were violently beaten at the scene, including Ms Shabnam Hafiz and Mr Quamrul Hasan, who were temporarily detained in Badda police station.
Shabnam Hafiz is President of Garment Workers' Mukti Andolon (Garment Workers' Union) and Quamrul Hasan works with Activist Anthropologists, a group of social anthropologists who promote the rights of garment workers, particularly women.
Moshrefa Mishu is President of the Garments Sromik Oikko trade union, and had been leading the Tuba Group hunger strike since 28 July 2014.
Joly Talukder is Joint General Secretary of the Garments Sramik Trade Union Centre.
At least 1,200 workers from five factories under the Tuba Group have been on a hunger strike at Hossain Market since 28 July 2014 demanding three months of unpaid wages and festival bonuses. Several human rights defenders and union leaders have paid frequent visits to the protesters, bringing doctors and medicines including salines. The protesters have said that the hunger strike will end only when their demands are met.
Early on 6 August 2014, the main gate of Hossain Market was locked by an unknown individual. It is believed that this was done to stop human rights defenders from providing medical supplies to the hunger strikers.
When negotiations failed that morning, police broke the lock at around 12 pm and entered the market, while more police officers surrounded it to prevent human rights defenders and doctors from providing medicine and saline the hunger strikers.
By around 2 pm, a crowd had gathered outside Hossain Market and the police started charging the crowd with batons, specifically attacking union leaders and human rights defenders.
Members of the pro-government workers' union also reportedly joined in with the police in attacking human rights defenders.
Five human rights defenders, including Shabnam Hafiz and Quamrul Hasan, received violent beatings at the hands of police. The other human rights defenders are Ms Saydia Gulrukh of Activist Anthropologists, Professor Samina Lutfa Nitra of Dhaka University and Mr Salim Mahmud from trade union Garment Sramik Front.
Shabnam Hafiz and Quamrul Hasan were arrested and taken to Badda police station in Dhaka, and were released late on 6 August 2014.
On 7 August 2014, police reportedly used rubber bullets and tear gas on the crowd before arresting human rights defenders Moshrefa Mishu and Joly Talukder as they came out of Hossain Market. They were both released later that evening.
I urge the Government of Bangladesh to take action against the perpetrators of the violent beatings of human rights defenders and to take effective steps to meet the legitimate demand of the workers who remain on hunger strike.
I urge the authorities in Bangladesh to:
1. Carry out an immediate, thorough and impartial investigation into the violent beatings of human rights defenders Ms Shabnam Hafiz, Mr Quamrul Hasan, Ms Saydia Gulrukh, Ms Samina Lutfa Nitra and Mr Salim Mahmud with a view to publishing the results and bringing those responsible to justice in accordance with international standards;
2. Take all necessary measures to guarantee the physical and psychological integrity and security of Ms Shabnam Hafiz and Mr Quamrul Hasan, Ms Saydia Gulrukh, Ms Samina Lutfa Nitra, Mr Salim Mahmud, Ms Moshrefa Mishu, Ms Joly Talukder, and all other human rights defenders who are participating in peaceful protests;
3. Ensure that the provision of adequate medical supplies is not blocked from reaching the hunger strikers during the peaceful protests at Hossain Market;
4. Guarantee in all circumstances that all human rights defenders in Bangladesh are able to carry out their legitimate human rights activities without fear of reprisals and free of all restrictions.
Sincerely,
William Nicholas Gomes
Human Rights Ambassador for Salem-News.com, UK
www.williamnicholasgomes.com
Twitter: @Wnicholasgomes

______________________________
Salem-News.com Human Rights Ambassador William Nicholas Gomes is a Bangladeshi journalist, human rights activist. As an investigative journalist has written widely for leading European and Asian media outlets. William Gomes concentrates on humanity; his advocacy of human beings in dangerous, preventable circumstances does in fact lead to some of our most vital reports, because they give a voice to the voiceless.
William Gomes said, "I am against any form of intolerance alongside xenophobia and antisemitism. I am and will always stand strong in combating all forms of racial discrimination and intolerance any where." Read his letters and reports to see what the new generation of world journalists are doing to preserve human rights worldwide.

Monday, 4 August 2014

ঈদেও শ্রমিকদের কপালে অনশন!

ঈদেও শ্রমিকদের কপালে অনশন!
চোখ খোলার শক্তি নেই মনোয়ারার। কেমন আছেন, সেই প্রশ্নের জবাব দেয়ার শক্তিটুকুও হারিয়ে ফেলেছেন। প্রায় সংজ্ঞাহীন শীর্ণদেহ মনোয়ারার। শুধু বিড় বিড় করে বলে যাচ্ছিলেন, ‘এত খাটলাম, তবে বেতন পাই না কেন?’ অতটুকু বোঝা যাচ্ছিল। কয়েকদিনের অনশনে একেবারে বিছানার সাথে লেগে গেছে মনোয়ারার শরীর। অপুষ্টি আর অবহেলায় এমনিতেই শীর্ণদেহী, তার ওপর গত কয়েকদিনের অনশন, এখন মৃতপ্রায় মনোয়ারা। শুধু মনোয়ারাই নন,  তোবা গার্মেন্টের শতাধিক শ্রমিকের একই অবস্থা।
গত কয়েকদিন ধরেই পত্রপত্রিকায় তোবা গার্মেন্টের শ্রমিকদের দুঃখ-দুর্দশার চিত্র মুদ্রিত হয়ে আসছে। কিন্তু তাতে কর্তৃপক্ষের টনক নড়েনি। পবিত্র ঈদে বেতন পায়নি তারা। ফলে বাধ্য হয়ে অনশনের পথ বেছে নেয় শ্রমিকরা। ৩ আগস্ট তারিখে প্রথম আলোয় ‘সামর্থ্য থাকলেও বেতন দেয়নি তোবা গ্রুপ’ শিরোনামে মুদ্রিম প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, তোবা গ্রুপ গত জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে ৩৯ কোটি টাকার পোশাক রপ্তানি করেছে। নতুন কার্যাদেশ পেয়েছে দুই কোটি টাকার। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো ও মালিকপক্ষ এই তথ্য দিলেও গ্রুপের পাঁচ কারখানার এক হাজার ৬০০ শ্রমিক বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। মে, জুন ও জুলাই মাসের বেতন, ওভারটাইম ও ঈদ বোনাস বাবদ শ্রমিকদের পাওনা চার কোটি ১৩ লাখ ৭৭ হাজার ১২৭ টাকা। তবে মেরুল বাড্ডায় তোবা গার্মেন্টের আরেক কারখানার শ্রমিকরা নিয়মিত মজুরি পাচ্ছেন।
পোশাক শ্রমিকরা বলছেন, সামর্থ্য থাকলেও বেতন-ভাতা না দিয়ে মালিকপক্ষ তাদের জিম্মি করে তোবার মালিক দেলোয়ার হোসেনকে কারাগার থেকে মুক্ত করতে চেয়েছে। মালিকপক্ষের প্ররোচণায় আন্দোলনে নেমে পুলিশের গুলী খেয়েছেন তারা। এক শ্রমিক নেতার কথায় আবার রাস্তায় নেমে বিজিএমইএ কার্যালয় ঘেরাও করেছেন পাঁচবার। পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ-এর ভূমিকাও প্রশ্নবিদ্ধ। দেড় মাস আগে তোবার পাঁচ কারখানায় বেতন-ভাতা নিয়ে ঝামেলা হওয়ার আশংকা করে বিষয়টি শুধু সরকারকে জানিয়েই দায়িত্ব শেষ করেছেন তারা। নিজেরা কোনো পদক্ষেপই নেননি। উল্টো দেলোয়ারকে মুক্ত করতে বিজিএমইএর কোনো কোনো নেতা তাদের উসকে দিয়েছিলেন বলে অভিযোগ করেন শ্রমিকরা।
লক্ষণীয় বিষয় হলো, কঠোর পরিশ্রম করেও তোবা গ্রুপের শ্রমিকরা কয়েক মাস ধরে বেতন-ভাতা পাচ্ছেন না। ফলে ঈদের আগের দিন আমরণ অনশনে গেছেন তোবার পোশাক শ্রমিকরা। গত শনিবার ষষ্ঠদিনের মত অনশন করেছেন তারা। শনিবার পর্যন্ত অসুস্থ হয়েছেন ৯২ জন শ্রমিক, হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৯ জন। এমন অবস্থায় যদি পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়, তা হলে তার দায়িত্ব বর্তাবে কার ওপর? নিশ্চয় শ্রমিকদের ওপর নয়। পরিস্থিতির দায় মালিক, বিজিএমইএ, শ্রমিক নেতা, সরকার কেউই এড়াতে পারবে না। যার যতটুকু দায়িত্ব, তা পালিত হলে তোবা পরিস্থিতি আজ এ পর্যায়ে এসে পৌঁছত না। এখনও সময় আছে সঠিক পদক্ষেপটি নেয়ার। বিজিএমইএ সংকট সমাধানে শনিবার শ্রম প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হকের সঙ্গে এক দফা বৈঠক করেছে। তারা নিজেরাও বৃহস্পতিবারের মধ্যে শ্রমিকদের বেতন-ভাতা পরিশোধের ব্যাপারে বিশেষ উদ্যোগ নিচ্ছে বলে জানা গেছে। কিন্তু বেশ দেরি হয়ে যাচ্ছে। অনশনরত শ্রমিকদের অবস্থা বিবেচনা করে আরো দ্রুত সমাধানে পৌঁছা প্রয়োজন। ভাবতে লজ্জা লাগে, ঈদের সময় উৎসবের বদলে বাংলাদেশের শ্রমিকদের অনশন করতে হয়। আর তারা শ্লোগান দেয় ‘শ্রমিকরা কেঁদে মরে, প্রধানমন্ত্রী ঈদ করে।’ হয়তো অবজ্ঞা আর অবহেলার প্রতিক্রিয়ায় তাদের মধ্যে এভাবে ক্ষোভের সঞ্চার হচ্ছে। তবে ছোটদের অবহেলা করতে নেই। অবহেলায় অবহেলায় ছোটরা ক্ষোভে-দুঃখে ঐক্যবদ্ধ হয়ে গেলে তখন তারা অনেক বড় হয়ে ওঠে। তখন বড়রা ছোট হয়ে যায়, খুব ছোট। বিষয়টি সংশ্লিষ্টরা উপলব্ধি করলেই মঙ্গল।
Hey, we've just launched a new custom color Blogger template. You'll like it - https://t.co/quGl87I2PZ
Join Our Newsletter