শিরোনামহীন

- সৈয়দ জাহেদ হোসেন

সেই দিন থেকে জমা করেছি সমুদ্রজল,
হাত ফস্কে ছুটে গেল যেদিন শরীরের কোলাহল।
আটকে রাখব না তোমায়,করব আঁধার সঞ্চয়,
শুধাও আমায় তুমি, মুদ্রণহীন ক্রমিক আলোয়।

আমার বুকের বাম পাশটায় অস্ফুট গুঞ্জরন,
বিলাসী আগুনে চলছে অযুত ক্ষরণ।
অনাড়ম্বর ছায়ালোকে অব্যক্ত স্বনির্বাসনে,
আপন আঁধারে যাচ্ছে দিন একান্ত আপনমনে।

কে বলেছে আজ ভোর হবে

কে বলেছে আজ ভোর হবে

- সৈয়দ জাহেদ হোসেন

নিরুদ্দেশ রাত্রির খোঁজে বিরতিহীন প্রার্থনায়,
সময়ের নির্ঘুম ইতিহাসে দিনেরা মুখ ধোয়।
কে বলেছে আজ  ভোর হবে?
কেউ তো বলেনি,
নিদারুণ ক্ষুধায় অসহ্য কেঁপেছিলে গা,
রাত বারো বাজলেই বারোটা বেজে যায় দিনের,
কাল যারা ছিল আড়ালেই, আজো থাক তারা,
ভোরের আলোয় মুখ ঢাকুক,
ক্রেতাদের ভীড়ে
রাজনীতির অজাচার নিকেতনে।
শোষন, ত্রাসের প্রহারে পিষ্ট আলোর রেশ চোখ দিয়ে  
নিষ্প্রদীপ বাঁধনে থাকুক তারা,
কে বলেছে আজ  ভোর  হবে?
কেউ তো বলেনি,
যদিও কেউ বলে থাকে, দুঃস্বপ্নে বাঁচিয়ে রেখেছে।

মৌলবাদী ভালোবাসা

- সৈয়দ জাহেদ হোসেন

 

আমার আঠারোতে জেনেছিলাম তোমার ত্বকের স্বাদ,
বিনা সুদে উশুল হয়ে যায় অকৃত্রিম মাটির উঠোন,
তোমার আঠারো গোপন চোখে তাকিয়ে রয়,
রৌদ্রের খরতাপ ভীত পায়ে পাড়ি জমায় আপাদমস্তক,
আঠারো শতাব্দীর অন্ধকার জ্বরে কেঁপেছিল তোমার বুক।
তোমার আমার কী হয়েছিল! মৌলবাদী ভালোবাসায়
সময়ে অসময়ে, অপ্রাসঙ্গিক আলোয়, অন্ধকারে
দিন রাত্রির তলদেশ ভেদ করে কর্মহীন দু’জন
কি খুঁজে খুঁজে কাটিয়ে দিত বেলা।
ঝাপসা হয় চোখ, স্মৃতিরা লুকোয়,
টেবিলচেয়ার, ঝুলন্ত বারান্দায় আঙুলের ছাপে নিঃসঙ্গতা আছে,
নোনা জলের বেদনা, অহঙ্কার  সবই আছে,
শুধু সেই শব্দের স্পর্শটুকু নেই।
সন্নাসীর ত্যাগে আজ আকাশের সঙ্গ মিলেছে,
মিলেছে বিষণ্নতা, অন্তরের আরতির আগুনে মিলেছে নির্জনতা।
আমাকে ক্ষয়ে যায়, তবুও রেখে যায় অবশেষ।
আঠারো আটাশ হল, আটাশ আঁটত্রিশ হবে,
আটষট্টি’র কোন এক রাতে রূপের দানী খুলে ঠোঁট রাঙ্গাবে,
উষ্ণ প্রস্রবণে গোপন করবে বিষাদের বিফল দিন গুলো
আঠারোর বুক খুলে দেখো তোমার কাছে গচ্ছিত রাখা ফুলেল আঁচড়,
আমি তো আটাশে পেয়েছি প্রণয়ের দারুণ আকাল,
ভালোবাসার পাশে শুয়ে থাকা হিংস্র সব রাত্রি,
ছাই ভস্মে মাখা নির্বাসিত জীবন।

গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার নামে উসকে দেয়া মৌলবাদ

মৌলবাদ দমনে বিশ্বের নীতিনির্ধারকরা প্রকৃতপক্ষে আন্তরিক কি না তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। কারণ, মৌলবাদ সব সময়ই সামন্তবাদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে এসেছে। বিশেষ করে সমাজতান্ত্রিক বিশ্বকে ভেঙে খান খান করে দিতে পুঁজিবাদীরা এটাকে ব্যবহার করেছে। এমন কি গোত্রগত সংঘাত চাঙ্গা করে রাখতেও ব্যবহৃত হয়েছে মৌলবাদী দানতন্ত্র। তবে কি পরোক্ষভাবে গণতন্ত্রই মৌলবাদের সহচর? আসতে পারে সে প্রশ্নটিও।

দেখা গেছে, গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠার নামে কোন কোন দেশে মৌলবাদকে উসকে দেয়া হয়েছে। বলা হয়েছে- এটাও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রাম। পুঁজিবাদীরা একে ব্যবহার করেছে তাদের প্রয়োজনে। পরে দেখা গেছে এভাবেই ছড়িয়ে পড়েছে বিষবাষ্প। দূষিত হয়ে গিয়েছে ক্রমশ! গোটা বিশ্বের মুক্তিকামী গণতান্ত্রিক মানুষের নিঃশ্বাসের আবাসস্থল।

সাম্প্রতিক উদাহরণ হিসেবে ইরাকের কথাই ধরা যাক। ইরাকের শাসক সাদ্দাম হোসেন স্বৈরাচারী ছিলেন। ইরাক শিয়া অধ্যুষিত দেশ। তারা সংখ্যাগরিষ্ঠ। ভোট হলে শিয়ারা ক্ষমতায় থাকবে সারাজীবন। সুন্নী পন্থী সাদ্দাম হোসেন টুঁটি চেপে ধরে ছিলেন। ক্ষমতায় ছিলেন বলপূর্বক। এই সাদ্দাম একসময় ঘনিষ্ঠ বন্ধু ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের। সে সম্পর্কে ফাটল ধরার পরই তিনি যুক্তরাষ্ট্রের শাসকদের কাছে চোখের বালিতে পরিণত হন।
সাদ্দামের দেশ ইরাকে গণবিধ্বংসী পরমাণু অস্ত্র আছে, এমন ধুয়া তুলে যুক্তরাষ্ট্র। তারপর যুদ্ধ বাধায়। সে যুদ্ধ এখনো চলছে। ইরাক এখন ধ্বংসস্তূপ। তারপরও পুঁজিবাদীর দৃষ্টি সেখানে প্রসারিত। নেপথ্য নিয়ন্ত্রণ রাখার মরিয়া প্রচেষ্টা চলছে। অন্যদিকে বিদ্রোহীরা মৌলবাদী লেবাসে হোক আর জঙ্গিবাদী লেবাসে হোক প্রতিদিন চোরাগোপ্তা হামলা করছে। শেষ সময়ে এসে আক্রান্ত হয়েছেন স্বয়ং মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ বুশ। একজন সাংবাদিক বুশকে জুতো নিক্ষেপ করেছেন। তার নাম মুন্তাজার আল যাইদী। জাইদীর ক্ষোভ ছিল ভীষণ, তিনি স্বজন হারিয়েছেন এই যুদ্ধে। নিজে বন্দি থেকেছেন। ইরাক যুদ্ধে নিহত মানুষের লাশ জাইদীকে ব্যথিত করেছে। তিনি তার ঘৃণার চরম বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। এমন ঘৃণা পুঁজিবাদী দুঃশাসন এবং মৌলবাদী হায়েনা দুটোকেই উসকে দেয়। বুশের মাথার ওপর দিয়ে একজোড়া জুতো উড়ে যাওয়ার পর বুশ সাংবাদিকদের হেসে কি বলেছেন- সেটা দেখুন। বুশ মসকারা করে বলেছেন- ‘ইট ওয়াজ এ সাইজ টেন’! অর্থাৎ জুতা জোড়া দশনম্বর ছিল। ভাবটা যেন এমন, চৌদ্দ নম্বর জুতা তার মাথার ওপর দিয়ে উড়ে গেলেও তার কিছু যায় আসে না! এর কারণ কি? কারণটি হচ্ছে সামন্তবাদ ধরে রাখতে হলে এমন ঘটনাবলী সহজে গ্রহণ করার মানসিকতা থাকতেই হয়! বুশ জানেন, ইরাক যুদ্ধে চার হাজার দুইশ’র বেশি মার্কিনী সৈন্য প্রাণ দিয়েছে। পরিসংখ্যানটি সরকারি। বেসরকারিভাবে এর সংখ্যা বেশি হতে পারে। আর কতজন ইরাকি প্রাণ দিয়েছে এর হিসাব শুধু মহাকালই জানে। ইরাকে বর্তমানে শিয়া-সুন্নির মাঝে যে গৃহযুদ্ধ চলছে এর শেষ কোথায় তা স্বয়ং বুশও জানেন না। তবে বুশ এ জন্যই সন্তুষ্ট, তিনি যুদ্ধটি বাধাতে পেরেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অব স্টেট মিস কন্ডোলিৎসা রাইস বলেছেন, ইরাকীরা যে তাদের মৌলিক স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে, এই ঘটনা তার প্রমাণ। কি আহাম্মকি মার্কা কথাবার্তা! ইরাকে কি তাহলে আগে মৌলিক স্বাধীনতা ছিল না? অবশ্যই ছিল, বরং শিয়া-সুন্নির মাঝে গোত্রগত স্থায়ী সংঘাতের জন্ম দিতে পেরে সে স্বাধীনতায় কেরোসিন ঢেলে দিয়েছে পুঁজিবাদীরা। দোহাই দিয়েছে মৌলবাদের। আর এ সুযোগে কাগুজে বাঘ বিন লাদেনের নামে জোশ পেয়ে মধ্যপ্রাচ্যে গড়ে উঠেছে অনেক আত্মঘাতী স্কোয়াড। এরা নানাভাবে তটস্থ রাখছে গোটা বিশ্বকে।
ধরা যাক আলজিরিয়ার কথা। সেখানেও গোত্রীয় সংঘাত বাঁচিয়ে রাখা হচ্ছে এই মৌলবাদী ঝা-াকে বাঁচাবার জন্য। উপমহাদেশে হিন্দু মৌলবাদ, মুসলিম মৌলবাদ- এই দুয়ের চরিত্রই আমরা জানি। মৌলবাদ এভাবেই ব্যবহৃত হচ্ছে জঙ্গি গ্রুপের হাতে, পুঁজিপতি শাসকদের হাতে, মুনাফাখোর বণিকদের হাতে। সিঁড়ি হিসেবে ব্যবহার করে মৌলবাদের মাধ্যমে প্রকারান্তরে চলমান সমকালকে ধ্বংস করে দিতে চাইছে এরা। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে গোঁড়া মৌলবাদীরা সভ্যতার নান্দনিক বিবর্তনকে স্বীকৃতি দিতে মোটেই রাজি হয় না। আর বুনিয়াদী স্বার্থপর মৌলবাদের পৃষ্ঠপোষকরা সভ্যতা-সংস্কৃতিকে লোক দেখানো স্বীকৃতি দিলেও এটাকে তারা বাণিজ্যকরণের সর্বাত্মক চেষ্টা চালায়। আর বাণিজ্য করতে গেলে তখন প্রগতিবাদ ও মৌলবাদ মিশে একাকার হয়ে যায়। ড. আহমদ শরীফ এই মিশ্রণকে চমৎকার অভিধায় ভূষিত করেছিলেন। তিনি বলতেন, সুবিধাবাদী প্রগতিবাদ ও কট্টর মৌলবাদ মিলে জন্ম নেয় ‘প্রলয়বাদ’। আর এই প্রলয় ধ্বংস করে দেয় মানুষের অগ্রসর হওয়ার সব স্বপ্নমালা। বন্ধ করে দেয় সমাজের উন্নয়নের সব মুক্তপথ।

সমকাল সব সময়ই পরিবর্তনকে সূচি করে অগ্রসর হতে চায় আর দানবিক পেশিশক্তী এক ধরনের ত্রাস সৃষ্টি করে বিনষ্ট করতে চায় সামাজিক সম্প্রীতি। বাংলাদেশে যখন ভোটের রাজনীতি শুরু হয় তখন এসব মৌলবাদী গোষ্ঠী একদিকে অপতৎপরতা চালায়, অন্যদিকে ভোটও চায় সাধারণ মানুষের কাছে। ভাবতে অবাক লাগে, এরা অতীতে পাশও করেছে। গিয়ে বসেছে সংসদেও। অথচ ত্রিশ লাখ শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই জাতীয় সংসদ, এই জাতীয় সংবিধান-মুক্তিকামী সাধারণ মানুষের নিয়ন্ত্রণেই থাকার কথা ছিল। উন্নত গণতান্ত্রিক দেশগুলোর রাষ্ট্রপ্রধানরা শোষণের মানসিকতা ও ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে বিশ্বে মৌলবাদীকে নানাভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করেছে। এখনও করছে।

নিজ দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট হন

অজস্র সৌন্দর্যের ভা-ার এ পৃথিবী। আর এসব সৌন্দর্য যাদের জন্য উৎসর্গ করা হয়েছে তারা হলো সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব মানুষ। কারণ মানুষ এ অপার সৌন্দর্যের মূল্যায়ন করতে জানে। তবে সে মানুষ শিক্ষার দ্বারা, জ্ঞানের দ্বারা নিজেকে আলোকিত ও বিকশিত করতে পারে। যারা প্রকৃত শিক্ষার আলোয় আলোকিত নয় তারা মানুষ বটে তবে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। আর যারা জ্ঞানচর্চার মাধ্যমে নিজের আত্মাকে বিকশিত করে না তারা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী।

 এমনই একটি প্রতিবন্ধকতাপূর্ণ এলাকা হলো টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী থানা। এ এলাকায় শিক্ষাব্যবস্থার তেমন বিশেষ উন্নয়ন এখানে লক্ষ্য করা যায় না। যদিও বেশ কিছু বিল্ডিং এখানে স্কুল-কলেজ নামে সুসজ্জিত রয়েছে। তবে এখানে প্রকৃত শিক্ষার আলো নেই।

এখানকার প্রাইমারি স্কুলগুলোতে বাচ্চারা কেবল মুখস্থ বিদ্যা শেখে। অর্থাৎ বইয়ের পাতায় ছাপা অক্ষরগুলো কেবল আত্মগোচর করে কিন্তু এর অর্থ তারা বোঝে না। তারা শিখে ক্লাস রুম ঝাড়ু দেয়া, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চা, পান, বিস্কিট এগুলো এনে দেয়া। অথচ তাদের কাছে যদি পাঠ্য বইয়ের একটি ইংরেজি কবিতার অর্থ জানতে চাওয়া হয়, উত্তরে তারা জানায় 'মেডাম তো শিখায় নাই কা'।

প্রতিটি সাময়িক পরীক্ষায় চারু ও কারুকলা নামে একটি পরীক্ষার উল্লেখ থাকলেও অবাক হওয়ার বিষয় এটাই যে, এ পরীক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের চিত্রাঙ্কন বা এ জাতীয় কিছু নেয়া হয় না। এ পরীক্ষায় ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষকদের ঝাড়ু, কুলা, দড়ি, চালা এসব কিনে দেয় এবং যে যতো দামি জিনিস দেবে তার নাম্বার ততো বেশি হবে এবং পরীক্ষা শেষে শিক্ষকরা নিজেদের মধ্যে এসব জিনিস ভাগ করে নেন।

 প্রকৃত অর্থে আমরা যারা এ সমাজে বসবাস করি তারা কেউই প্রতিবন্ধী নয়। সবাই কেবল প্রতিবন্ধী সেজে নিজেদের দায়িত্ব এড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছিল। আর আমাদের এ দায়িত্বহীনতার মাশুল দিতে হচ্ছে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে। তারা সত্যি সত্যিই প্রতিবন্ধী হয়েই বেড়ে উঠেছে।

 তাই সমাজের সুস্থ সবল এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত মানুষের কাছে আমার অনুরোধ, আপনারা দায়িত্ব এড়িয়ে না গিয়ে, নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট হন এবং আপনাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি সুস্থ সাবলীল জীবন গড়ে  দিন। যারা প্রকৃত শিক্ষার আলোয় আলোকিত হবে এবং জ্ঞান চর্চার মাধ্যমে নিজেদের সুস্থ চিন্তা চেতনাকে বিকশিত করবে।

বাদুড়ঝোলা যাতায়াত ব্যবস্থা

বাড়ছে মানুষ, সেই সঙ্গে বাড়ছে শহরগামী লোকদের ভিড়। রাজধানী শহর ঢাকাতে এখন প্রায় এক কোটি লোকের বসবাস। জীবন ও জীবিকার প্রয়োজনে প্রতিদিন আমরা রাস্তায় নামি এবং অবধারিতভাবে নানা ধরনের ভোগান্তির শিকারে পরিণত হই। সময় মতো বাস, রিকশা কিছুই পাওয়া যায় না। বাদুড়ঝোলা হয়ে জীবন হাতে নিয়ে চলাফেরা করাটাই যেন আমাদের নিয়তি।

 আশপাশের জেলাগুলো থেকে প্রচুর লোক প্রতিদিন ঢাকায় আসে, অনেকটা বাধ্য হয়েই তাদের আসতে হয়। নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, সাভার এমনকি নরসিংদী ও মানিকগঞ্জ থেকেও কর্মজীবীরা প্রতিদিন ঢাকায় আসেন। তাদের নির্ভর করতে হয় পাবলিক ট্রান্সপোর্টের ওপর। কিন্তু পাবলিক ট্রান্সপোর্টে বিরাজমান অনিয়ম ও নৈরাজ্য মানুষের জীবনকে ভোগান্তিময় ও ঝুঁকিপূর্ণ করে তুলেছে।

ধারণ ক্ষমতার অনেক বেশি লোকের বসবাস এবং আনাগোনা এ ঢাকা মহানগরীতে। টাউন প্ল্যানিংয়ের ফর্মুলা অনুসারে যতোটুকু রাস্তা থাকা দরকার ছিল তার সিকিভাগও নেই এ শহরে। তাই পিক আওয়ারে সবাই রাস্তায় নামলে প্রাইভেট কার, বাস, রিকশা ইত্যাদিতে রাস্তা পরিপূর্ণ হয়ে যায়, গাড়ি চলার জায়গা থাকে না। অবশ্যম্ভাবী ফলাফল ট্রাফিক জ্যামে নষ্ট হয় মহামূল্যবান সময়।

 মনো রেল, পাতাল রেল, ফ্লাইওভার ইত্যাদি বড় ধরনের স্বপ্নবিলাসী পরিকল্পনার কথা শোনানো হয় আমাদের। কিন্তু বাস্তবে এর কোনো প্রতিফলন দেখা যায় না। শুধু সমন্বয় সাধন ও শৃঙ্খলা বজায় রাখলেই বর্তমান পরিস্থিতির অনেক উন্নতি ঘটানো সম্ভব। দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনারও দরকার আছে। কিন্তু সবার আগে দরকার বিদ্যমান লোকবল ও রাস্তার সুষ্ঠু ব্যবহার।

 রাজধানীর ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমে শৃঙ্খলা আনার জন্য বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। কখনো বেবি ট্যাক্সি বা স্কুটার নিষিদ্ধ করা হয়েছে, কখনো বা রুট পারমিট প্রদানে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। অন্যদিকে বিত্তশালীদের চলাফেরার সুবিধার্থে কিছু রোড রিকশামুক্ত ঘোষণা করা হচ্ছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের জন্য বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে না। ঢাকার ট্রান্সপোর্ট সিস্টেমে শৃঙ্খলা আনার নামে সব সময় কিছু নির্দিষ্ট মহলের স্বার্থ রক্ষার চেষ্টাই করা হয়েছে। এর কুপ্রভাবে নাগরিক জীবন বিষময় হয়ে উঠেছে।

 বিআরটিসির বাস সংখ্যা, বিশেষত দোতলা বাস বাড়ানো হলে নগরীর যানজট অনেক কমবে, যাত্রীরা উপকৃত হবে। কালো ট্যাক্সি ক্যাবগুলোর অবস্থা শোচনীয়ই বলা চলে। এ ধরনের ভাঙাচোরা ট্যাক্সি ক্যাব শুধু নগরীর সৌন্দর্যই নষ্ট করছে না, এতে চলাচলে মানুষের জীবনের ঝুঁকিও রয়েছে। রাজধানীতে চলাচলের অনুমতি দেয়ার আগে যানবাহনগুলোর ব্যাপারে দুটি বিষয় লক্ষ্য রাখতে হবে। এটি মানুষের জীবনের জন্য নিরাপদ কি না এবং তা নগরীর যানজট দূরীকরণে সহায়ক কি না। এছাড়া পরিবেশের বিষটিকেও প্রাধান্য দিতে হবে।

 আমরা আশা করবো, সরকার রাজধানীর যানবাহন ব্যবস্থায় একটি শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনতে কার্যকর পদক্ষেপ নেবে এবং নগরীর যাতায়াত ব্যবস্থাকে আরো আধুনিক ও যুগোপযোগী করে গড়ে তুলবে।

নিঃশ্বাসে শূন্যতা

- সৈয়দ জাহেদ হোসেন

 

প্রত্যেকটা ভালোবাসা কিছু শূন্যতা উপহার দেয়,
কাছে এসেছিলে, তাই হয়তো বুঝতে পেরেছি,
সবুজ বনভূমি শীতের আগমনে কেমনটি মর্মর হয়!
তোমার যাওয়া ও আসার মাঝের সময়টুকুতে
নির্মোহ এই বনভুমিতে বসন্ত এসেছিলো।
আমার সাথে এখন আর কোনো ঋতু নেই,
আমার ভিতরে, বাহিরে, আকাশে, পায়ের তলায়
বসন্তের আসার আর কোন সম্ভাবনা নেই, আমি
এখন আকাশের রঙ বদলানো খেলা দেখে যাই।

একটুকরো নিঃশ্বাসে আগুনের ফুলকি ছড়াল,
শাখা প্রশাখা মেলেছে বছরের পর বছর,
দাবালনের নিত্য নতুন সংবাদ শুনে বিমর্ষ হও,
যে আগুন জ্বালিয়েছ নিজের অজান্তে,
কাছে এলে হয়তো শুনতে পাবে,  
সারা জীবন ধরে আগুনের যজ্ঞ চলেছে অজ্ঞাতবাসে।
কোন ছায়ায় তুমি পা ভিজিয়ে রাখো? নির্ভুল রোদ্দুরের মাঝে,
কোন সকাল তুমি দেখ? সাদা,হলদে,কিংবা লাল?
আমার পিছনে সামনে পাশে কেউ নেই, ছিল না কস্মিনকালেও
তোমাকে আমি কখনো বলিনি,
যৌবনে যে সত্য তোমাকে ভাবায়নি।
সারারাত্রি পৃথিবীকে সেই গল্প শুনাও।

দখল ও দূষণ মুক্ত হোক

একটি শহরের সৌন্দর্য ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় রাখতে লেকের অবদান অপরিসীম। ঢাকার বুকেও ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে কয়েকটি লেক। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে, ঢাকায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে লেকগুলোর দখল ও দূষণের মাত্রাও তীব্রভাবে বেড়ে চলেছে। দখলের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছে না রাজধানীর লেকগুলো। গুলশান লেকের বেশ কিছু জায়গায়ই ইতোমধ্যে দখল হয়ে গেছে। জায়গা দখল করে বহুতল ভবন, টিনশেড ঘর, বসত্মি তৈরি করা হয়েছে।
বিপুল জনসংখ্যার নগরী ঢাকা। পরিবেশ বিপর্যয়সহ নানা কারণে ঢাকা দিন দিন বসবাসের অযোগ্য হয়ে পড়ছে। প্রশস্ত রাস্তা নেই, খেলার মাঠ নেই, উদ্যান নেই, প্রয়োজনীয় জলাশয় নেই। নদী-নালা সব দখলদূষণে পরিত্যক্ত প্রায়। এ অবস্থায় এখানে জীবন ধারণ করাই কঠিন। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের মতো স্বল্পোন্নত দেশগুলো সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধি ছাড়া আমাদের টিকে থাকা দায়। এ কারণে নিজেদের স্বার্থেই রাজধানীর জলাশয়গুলো বাঁচিয়ে রাখার কোনো বিকল্প নেই। আমরা যদি দখলদারিত্বে মেতে থাকি তাহলে এই অবিমৃষ্যকারিতার পরিণাম কী হবে একবার ভেবে দেখা দরকার।

  

ভূমি আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়া ভূমিদস্যুরা যাতে প্রশাসনের সহযোগিতায় সরকারি সম্পত্তি জবরদখল করার সুযোগ না পায়, সেই লক্ষ্যে ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইনের যুগোপযোগী সংস্কার সাধনের পাশাপাশি অপরাধীদের বিচার ও কঠোর শাস্তি বিধান ছাড়া এই অনাচার হতে দেশ মুক্ত হবে না। এ জন্য দখলদারিত্ব বন্ধে রাজউকসহ সংশ্লিষ্ট সব সংস্থাকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে। দখলের প্রশ্নে কোন আপস বা নতি স্বীকারের সুযোগ নেই। অনিয়ম, দুর্নীতি সহ্য করাও হবে আত্মঘাতী। দখলদাররা যত শক্তিশালীই হোক না কেন, তারা সংখ্যায় কম। গুটিকয়েক মানুষের স্বার্থ হাসিলের জন্য বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর স্বার্থ জলাঞ্জলি দেয়ার কোনো সুযোগ নেই। গুলশান লেক পুনরুদ্ধারে সর্বশক্তি নিয়োগ করা হবে, আমরা তেমনটাই প্রত্যাশা করি।
 রাজধানীর প্রাকৃতিক পরিবেশ টিকিয়ে রাখতে কয়েক বছর আগে লেকগুলো সংস্কারের মহাপরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়। লেক খনন, ওয়াকওয়ে নির্মাণসহ ব্যাপক পরিকল্পনা নেয়া হয়। কিন্তু মহাপরিকল্পনা গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের মধ্যে যে উৎসাহ কাজ করে বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তার দেখা পাওয়া ভার। রাজধানীর লেকগুলোর অন্যতম উত্তরা লেক। এ লেকটির আধুনিকীকরণের ৭৫ কোটি ৫৮ লাখ টাকার একটি প্রকল্প সরকার ইতোমধ্যে চূড়ান্ত করেছে। শিগগিরই এর কাজ শুরু হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ধানম-ি লেক আধুনিকায়নে নেয়া ২৩ কোটি টাকার একটি প্রকল্পের কাজ এখন রয়েছে চলমান অবস্থায়। গুলশান-বারিধারা লেকের আধুনিকায়নে ৪১০ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ চলছে কয়েক বছর ধরে। কিন্তু কোনো কাজেরই সমন্বয় নেই। সিটি করপোরেশন, রাজউক এবং ওয়াসার মধ্যে কাজের সমন্বয় না থাকায় এ খাতে ব্যয়িত কোটি কোটি টাকা ভেস্তে যেতে পারে_ এমন আশঙ্কাও কম নয়। রাজধানীর প্রাকৃতিক লেকগুলো বাঁচাতে হলে দখল ও দূষণের আগ্রাসন বন্ধে জরুরি পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। দূষণের হাত থেকে রক্ষার বদলে রাজধানীর বর্জ্যের একটা বড় অংশ পড়ছে লেকগুলোতে। সবক'টি লেকের পানি এতই বিবর্ণ ও দুর্গন্ধ যে, সেগুলো মূলত মশক উৎপাদনের কারখানা হিসেবে ব্যবহূত হচ্ছে।
 ধানম-ি লেকের পানি নিষ্কাশনব্যবস্থা দীর্ঘ সময়েও সংস্কার করা হচ্ছে না। প্লাস্টিকের বোতল, ফোম, ছেঁড়া ময়লা জুতাসহ অন্যান্য দ্রব্য লেকের পানিতে ভাসতে দেখা যায় প্রতিনিয়ত। উত্তরার ৩, ৫, ৭ ও ১৩ নম্বর সেক্টরের সংযোগস্থলের মধ্য দিয়ে বয়ে যাওয়া লেকটি উত্তরা মডেল টাউনের সৌন্দর্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশ বজায় রাখতে সহায়তা করে। বর্তমানে লেকটি দূষণাক্রান্ত। লেকটির কিছু অংশে যুক্ত হয়েছে স্যুয়ারেজ লাইন, নির্বিচারে ফেলা হচ্ছে আবর্জনা। ঢাকার লেকগুলোর একটি গুলশান-বারিধারা লেক। লেকটি প্রাকৃতিকভাবে ড্রেনেজ সিস্টেমের কাজ করে। পরিবেশ সংরক্ষণ ও আইনের আওতায় ২০০১ সালে লেকটিকে পরিবেশগতভাবে নাজুক এলাকা হিসেবে ঘোষণা করা হয়।
 রাজধানীর তিনটি প্রধান লেকসহ সব জলাধার সংরক্ষণে কড়াকড়ি ব্যবস্থা নেয়া দরকার। দেড় কোটি মানুষের অস্তিত্বের স্বার্থে দূষণ ও দখলের কবল থেকে নদী, খাল ও লেকের সংরক্ষণে শুধু আইনগত পদক্ষেপ নয়, সামাজিক আন্দোলনও গড়ে তোলা দরকার।

বিশালতার খোঁজে শূন্যতা অনুসরণে

- সৈয়দ জাহেদ হোসেন

 

এতদিন তুমি ছিলে না বলেই পুষে ছিলাম মেঘ,
তাই আমাকে দাঁড়াতে হতো আকাশের নীচে,
ব্যাকুল শুশ্রুষায় বাতাসকে বিশুদ্ধ করতাম,
তুমি কতো দিন এইভাবে আমাকে অপেক্ষায় দেখেছ,  প্রেম!
আমি গোপন রাখিনি কিছুই,
সবুজ প্রান্তর থেকে নীল দিগন্ত,
লন্ঠনের আহ্বানে যেটুকু আলো ছিল, তাতেই সকল ছায়া মুছে,
শাশ্বত তোমাকে চিনে নিয়েছি,
দ্বিধা ছিল কিসে? এত দেরী করে কেন এলে?
আমি  বিশালতার খোঁজে শূন্যতা অনুসরণে,
মেঘের ছায়াচিত্রে সুসময়ে দুঃসময়ে,
জীবনের শান্ত ছবি এঁকেছি।

আমি নরক দেখি

- সৈয়দ জাহেদ হোসেন

 

রাত নিশ্চুপ হলে নিশ্চল হয় ছায়া,
ঘড়ির কাটার শব্দগুলো মৌনতা ভাঙ্গে,
নিদিষ্ট সময়ের ব্যবধানে নিস্তব্ধতায় ফেলে কঠিন দীর্ঘশ্বাস।
আজ রাত্রি হারিয়েছে অনেক কিছু,
শূণ্যতার অদ্বিতীয় উদাহরণ,
লক্ষ লক্ষ তারার আকাশ, চিত্তের মালিন্য।
যে নারী নরক হয়েছে, সে কি ভাবে?
আমাদের সেই সবরাত্রি, প্রেম-ইতিহাস।
নিঃশব্দে বিছানা থেকে উঠে গিয়ে খোলা জানালায়,
প্রতিদিন পিছনে ফিরে আমি নরক দেখি।

নির্জনতার অশান্ত গল্প

- সৈয়দ জাহেদ হোসেন

 

আমার জন্য তোমার কোনো নির্জনতা নেই,ছিল না কখনো
অহোরাত্রি সযত্নে গায়ে মেখে দিলে ভুলের হাওয়া,
তুমি ছিলে চারপাশ, তাই উপরে নীচে কী অপুর্ব অসুখ।
সামনে উম্মুক্ত নীল আকাশে নিদারুন স্তব্ধতা,
সমর্পণ করেছি,তোমার দুর্দিনেও প্রণয় হবে,
জীবনের সব বিশৃঙ্খলতায় যতই নিষ্পন্ন হোক জীবন,
অবাঞ্চিত হয়ে থাকি যুগ থেকে যুগ,
অবেলার বয়ে যাওয়া ঝরে,
আদিম উৎসবের মগ্ন মন্ত্র পাঠে,
তুমি যদি চাও,
এই প্রাণের আশ্চর্য টানে জেগে উঠবে নির্জনতার অশান্ত গল্প।

যদি না বুঝ

- সৈয়দ জাহেদ হোসেন

 

যদি না বুঝ,কখনো বুঝতে দিব না, এড়িয়ে যাবো,
বার বার পুরনো সিন্দুকের দিকে তাকিয়ে থাকার মতো,
পুজা অর্চনায় এতকাল কাটিয়ে দিলাম,
তুমি ছাড়া আর এমন কে আছে,
যার পায়ের কাছে পুষ্প অর্ঘ রেখে চলেছি।
উল্টো হয়ে পড়ে আছে,আমার যত অসহায় নক্ষত্রের তরঙ্গ-ধুলি,
মলিন হয়ে আছে সব কটি নিঃশ্বাস।
আমার ভিতরে কোনো কষ্ট নেই,আছে,
দলবদ্ধ ভাবে চলে, আনন্দের আকাশে অজস্রবর্ণে।
ভালোবাসা থেকে জন্ম নেয়া এক একটি কষ্ট,
যে হারাতে হারাতে শূণ্যতাও হারাবার অপেক্ষায়,
হিসেব ছাড়াই খরচ হয়ে গেছে অনেকটা জীবন,
এই পাংশুবেলায় কষ্ট আজ অশরীরী প্রতিমা,
এখন তুমিই বলো এই প্রতিমা ছাড়া কিভাবে পার হবে বাকী জীবন,
ব্যাকুল শুশ্রুষা দিয়ে লালন করছি,যতই দিয়ে যাচ্ছে দুঃখ দহন।

কোনো কিছুই আমাকে স্পর্শ করে না

- সৈয়দ জাহেদ হোসেন

 

কোনো কিছুই আমাকে স্পর্শ করে না,
যে টুকু স্পর্শ করে তোমার নীরবতা,
দিয়ে গেলে যতই বিপ্লব সংঘাত,
অলস দুপুরে ক্লান্তির সুরে দুর্দান্ত নিঃসঙ্গতা।

আমি স্বপ্ন নিয়ে পার করি দিন রাত,
নীরবে নীরবে সাজাই রাতের তৃষা,
ভোরের ধোঁয়াশা চোখে দেখি ক্লান্তির জল,
ক্ষয়িষ্ণু সূর্যাবয়বে নিদারুন হতাশা।

আমার যত কবিতায়, প্রেম নেই
মনে পড়ে সুখ খুঁজেছিলে বুক জুড়ে,
ইচ্ছার মুখোমুখি আজ ধূসর মরুভূমি,
হৃদয় কি বাজে বিদিশার সুরে?

সব কিছুই এলোমেলো, কি করছ ঐ মেঘেরদেশে?
আমার সামনে সমানে দুরন্ত আগুন,
বেঁচে আছি নীরবে গতিময় যন্ত্রণায়,
ভেঙে গেছে মন,তন্দ্রার অলিগলিতে মর্মর ফাগুন।

জলন্ত অগ্নি-উগারী

- সৈয়দ জাহেদ হোসেন

নারী,
এই নামটি প্রতিটি ক্ষণে বুকে বাজে,
বিসুভিয়াস, ফুজিয়ামা জলন্ত অগ্নি-উগারী।

পতন আমার পতনের ডাক দিল প্রথম নারীর মুখে,
বিশুদ্ধ দাবানলে সকল প্রান্তে,
দগ্ধিত হয়ে আছি শতবর্ষ জুড়ে, নারীর নিষ্পাপ বুকে।

নারী আমার দুকুল ভাঙ্গা নদী, জীবনের সবুজ সকালে
মেহেদির রঙ্গে সূর্য উঠিয়েছে,
জ্বালায়ে মহাকাব্যের আঙিনা,আলো রেখেছে পদতলে।

নারী আমার হৃদয়ে হৃদয়ে সঞ্চিত যৌবনের অঙ্গার,
জ্বলন্ত শিখায় উলঙ্গ রাজনীতিতে তাঁর শুদ্ধ চালে,
বিনম্রতায় ফিরিয়ে দিইনি কখনো অবহেলার ভার।

জলশূন্য

- সৈয়দ জাহেদ হোসেন

তাঁর বুকে মিশে জলশূন্য হয়ে গেছে নদী,
ঢেউয়ের আঘাত নেই আর, তবে প্রচণ্ড খরা,
যাত্রী হলাম মরুর দেশে,
আমি ভাবতেও পারি না,
সকল মৌনতায় ক্ষণ গাঢ় দাগে জন্ম নিল ক্যাকটাস।
ধ্বস্ত বিমূঢ় শরীর ভাষ্যে,
দীর্ঘশ্বাসের দীর্ঘ শ্বাসবিদ্ধ করুণ কাতরতায়,
বিশ্বায়নে ভালোবাসার প্রবল ধ্বসে,
উদাহরণহীন কাটছে রাতগুলো।
আকাশে নেমে এসেছে অরণ্যের প্রগাঢ় পদছাপ,
যন্ত্রণা বয়ে বেড়ায় তাঁর ঠিকানা।
জীবনের ঠিকানা বদলেছে তাঁর মতই,
জীবন শব্দই আজ অন্তিম শয্যায়।

যাতনার চিলেকোঠায়

- সৈয়দ জাহেদ হোসেন

 

আমার যাতনার চিলেকোঠায় তোমারই বসবাস,
মৃত রোদ্রের ঘ্রাণ পৌছে যতটুকু সীমানায়,
আমাকেই চিরজন্মে সংগোপনে খুঁজে গেল অন্তিম কিছু শব্দ।
তোমাকে পেলাম না কখনো বাক্যের সম দৈর্ঘ্যে,
তুমি নষ্ট রাখীর বন্ধনে বেশ সুখেই আছো,
নিজেকে লুকিয়ে রেখেছ পুঁজিবাদী চোখে,
আমি সকাল, দুপুর,রাত্রি খুঁজে ক্লান্ত,
যদিও ফিরে পাই কিছুটা বিদঘুটে ছায়া।
মিত্রতা তোমাকে মহান করেছে, আমাকে শিখিয়েছে
মৃত্যুর আবেদন,
তোমার নষ্ট আদালতে বিনাবিচারে,
বিচারক,এইটুকু সাজাও কি পাওয়ার অধিকার নাই।

The BDR Revolt and Role of Bangladesh Intelligence Agencies

The BDR Revolt and Role of Bangladesh Intelligence Agencies

Dr. Abdul Momen

 

Today’s revolt in the BDR HQ in Dhaka is an eye-opener.  Due to revolt, reportedly 50 lives were lost. Many civilian also died owing to stray bullets. Whatever the causes of the revolt, it is a fact that there has been a serious lapse of intelligence failure and secondly the death of civilians, closure of schools and postponement of exam demands a serious debate on the merits of keeping headquarters of security forces or cantonments inside crowded localities of the nation’s capital.

In USA, the forefathers of its independence nearly 230 years ago decided not to allow heavy weapons within the borders of capital i. e. Washington D. C or the District of Columbia.   However, it allowed individual citizen to bear arms for their self protection.   In the case of Bangladesh given its history of coups and counter coups, it may be necessary to forbid heavy weapons within 50 miles radius of the capital city of Dhaka.  The recent BDR revolt and especially killing of innocent civilians and bystanders once again reminded the Bangladeshi nationals to seriously discuss this issue of relocating both the Dhaka cantonment and the BDR HQ away from the city limit.  

If the BDR Headquarters would have been outside Dhaka away from Pilkhana, an overcrowded area of civilian population surrounded by schools and shops, such casualties could be minimized.  Therefore, it may be recommended to relocate BDR HQ away from capital city.

Similarly, there is hardly any rationale to have Army Cantonment within the capital city.  This may be relocated 50 miles away from the capital city to a remote locality.   In that case, prime and expensive lands will be made available for growth and expansion of Dhaka city.   Moreover, fear and tension of revolt within the cantonment causing disruption of normal life would be lessened.

In Dhaka, civilian vehicles are not allowed to go through the cantonment area and such is an additional cause for bumper-to-bumper hour-long traffic jams on the VIP road.  If the Cantonment is relocated away from its current location, such horrendous traffic congestion could be lessened.  Bangladesh Army is a part of Bangladesh society and it desires to improve quality of life of its countrymen.  In spite of this, it is unfortunate that they have not opened up their roads to the general public yet on their own initiative.  Since army fails to open them up on its own, it may be necessary to relocate Dhaka cantonment for the good of the nation.

The BDR Revolt that occurred following Prime Minister’s trip to the BDR HQ is mind boggling. If this would happened during Prime Minister’s visit, it could have created a national crisis.  Naturally, serious questions could be raised as regards the efficiency of the Bangladesh intelligence agencies.  According to many, the focus of the Bangladesh Intelligence Agencies both the DGFI and the NSI have been basically pivots around finding and codifying information regarding civilian opinion leaders and political leadership.  The rationale for secretly recording phone, fax and mobile calls of politicians, journalists, opinion leaders and talk-show participants in Bangladesh in addition to lawyers and businessmen has been designed with a view to collect information about civilian activities.  Even their everyday activities and mobility are being watched in the name of nation’s interest.  Unfortunately, such appears to be uncommon in the area of security forces.  No wonder, Bangladesh Intelligence Agencies miserably failed in protecting its founder President Bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman or founder of the BNP party, General Ziaur Rahman.  It even failed to provide intelligence information regarding the terrorist bombing attack of a public rally of Sheikh Hasina on August 21, 2004 in which 23 people were killed including the wife of current President of Bangladesh, Zillur Rahman and nearly 370 were wounded or maimed for life.  It failed to provide intelligence information regarding grenade attacks on the former Finance Minister ASM Kibria or on British High Commissioner Anwar Chowdhury.   It also failed to furnish intelligence information regarding jehadi bombings in 493 towns and cities of Bangladesh simultaneously. 

 In fact, the performance record of Bangladesh Intelligence Agencies till to-date is very poor. It gets an F grade.   The recent BDR revolt is a case in point. 

Bangladesh Intelligence Agencies are mostly headed by military personnel unlike industrialized countries.  Most of the heads of the DGFI and the NSI in Bangladesh have been active duty military officials.  In contrast, most of the heads of U. S. and the British Intelligence Agencies, for example, FBI, CIA, or MI5 (British) are non-military personnel.  

The current FBI Director is Robert Mueller. He has been a lawyer.  The current CIA Chief is Leon Panetta, a former congressman and a head of a Public Policy Institute at the California University.  He was formerly Chief of Staff of President Clinton. 

If we investigate the personal history of the heads of FBI for the last quarter century, one will be surprised that most of the intelligence heads were lawyers or judges.  For example, there has been a total of 7 FBI Directors from February 23, 1978 till to-date of which three were Acting Directors.  All four Directors were lawyers/judges, and among the Acting Directors, two were career intelligence officers and one was an accountant.  William Webster (1978-87), William Sessions (1987-93), Louis Freeh (1993-2001) and Robert Mueller (2001-current) were Directors and all of them were lawyers/judges.  The Acting ones; John Otto (26/5/87-2/11/87) and Floyd Clarke (19/7/93-1/9/93) were special FBI agents, and Thomas Pickard (25/6/01-4/9/01) was a CPA.  

Given the limitations, the performance record of FBI and the CIA that are mostly run by civilian authority is much superior to that our DGFI or the NSI which are mostly headed by active-duty military officials. 

Take the case of the British Intelligence Agencies.  The British Military Intelligence Section 5 known as MI-5 or its agencies like SIS, MI-6, QCHQ or DIS are again mostly headed by civilian officials unlike Bangladesh.  For example, the current head of MI5 is Mr. Jonathan Evans, a career intelligence officer.  Prior to him Baroness Manningham-Buller (2002-07), a former school teacher headed it for 5 years. During 2000-02, Sir Stephen Lander, a PhD in History was its head. Prior to him, Dame Stella Rimington (1992-96), a diplomat’s wife headed the British intelligence organization. It may surprise Bangladeshi military leaders that a well known football player, Sir Patrick Walker headed MI-5 from 1988 through 1991.

There is no denying that the Intelligence Agencies of USA and UK are superior to that of Bangladesh.  Admittedly they have more resources and superior information technology vis-à-vis Bangladesh. However, they have also more restrictions as they have to work within many legal limitations and restrictions unlike Bangladesh. Instead of this, their performance record is superior. 

This raises a valid question.  Should we stop appointing active-duty military personnel in the intelligence agencies that mainly focus their attention on political or civil leaderships?  Instead should we follow that of the USA and UK for the greater interest of the country? 

It is a fact that in Bangladesh, two of its Presidents were assassinated not by their political supporters or by any public citizen. They were assassinated by members of active-duty security forces.  It is unfortunate, and it looks odd when in the name of security, a head of the government for example, Sheikh Hasina is kept at a distance from public thus denying her from mingling with her electorates in Bangladesh.  This was true in the case of Khaleda Zia as well.  In addition, it looks odd when security personnel stand next to the head of the government in all public events. This custom must be done away with to improve nation’s image both home and abroad.  Remember, such practice is not common in civilized countries like USA, UK, France, Italy, Switzerland, Finland and the like. Remember, their heads of governments in no way, less exposed to security risk.  The custom in USA is that once a person is allowed to enter the premises through checking, he/she is allowed to meet the President freely.  The security forces stay at a distance unlike Bangladesh.  The way the Bangladeshi security forces behave is deplorable. They literally keep the Prime Minister away from the public. It is a disgrace in the name of security.  When the Prime Minister is surrounded by security officers overlooking her shoulder, it lowers our image in the free world.  Such basically shows that the political leadership of Bangladesh is still under military subjugation or control in spite of a free, fair, transparent and credible election.  Under such aggressive security guardianship, it can neither improve its image nor can attract increasing FDI. 

সমুদ্রেরও আমার মত তৃষ্ণা আছে

সমুদ্রেরও আমার মত তৃষ্ণা আছে

- সৈয়দ জাহেদ হোসেন

যে-টুকু কাছে এলে,
তোমাকে দেখে সমুদ্র উত্তাল হল,
সৈকতের বাঁধা পরিধি যত তুচ্ছ করে,
আমি বুঝে নিই-
সমুদ্রেরও আমার মত তৃষ্ণা আছে।

Roles of MPs: In light of the constitution

Roles of MPs: In light of the constitution

 Md. Anwarul Kabir

 

Article 65 (1) There shall be a Parliament for Bangladesh (to be known as the House of the Nation) in which subject to the provisions of this Constitution, shall be vested the legislative powers of the Republic….

The Constitution of the People’s Republic of Bangladesh  

 

 

The 9^th Parliament has initiated with a promise to establish true democratic ethos in the country in the changed political context. Although in 1991, after the fall of prolonged autocracy, Bangladesh restarted parliamentary democracy, it failed to erect an effective and efficient Parliament. Especially, the controversial role of the speaker, session boycotts, quorum crisis, sidelining Parliamentary Standing Committees were marked as salient features of the immediate past parliament. In true sense, the parliament became insignificant and moth-eaten due to the hegemony of the corrupt MPs and so virtually the republic was administered by the Prime Minister and her kitchen cabinet. This unaccountability of the government sharply violated the Article 55(3) of the constitution which explicitly states that, “The Cabinet shall be collectively responsible to Parliament”. 

 

Voters this time have rendered AL a landslide victory as it has pledged for bringing a positive change by rendering Good-Governance. For this, the first and foremost task is to make the Parliament an efficient and effective one.  Over the decades, our MPs in previous parliaments totally lost their focal point in discharging their obligations.  According to Article 65(1), MPs are vested with legislative powers of the Republic and so their supreme obligation is to formulate, modify various legislations with a view to administering country in righteous ways following the peoples’ aspiration as the Article 7(1) confirms that all powers in the Republic belong to the people. Instead of working at the policy level, MPs in the past involved in local development works which ultimately led them to be involved in all pervasive financial corruptions. For them, the major motivation for becoming MPs was to be a “millionaire” within a shortest possible time at the cost of public fund. Consequently, the nation observed the influence of black money in the electoral races. Due to this paradigm shift of politicians’ psyche, the Parliament became ineffective and democracy was at a stake.

 

For survival and strengthening our democracy, the Parliament must be the focal point of our national politics. To bring a positive change, while discharging their obligations, MPs must be aware of their constitutional roles and jurisdictions. MPs are not meant for involving themselves in local development works, rather they have to work at national policy level. According to Article 59(1) the local government bodies in every administrative unit of the republic are the major actors of all sorts of local development works.  Yes, the Parliament has something to do for the local government and this is also defined in our constitution. Article 60 has clearly defined, “….. Parliament shall, by law, confer powers on the local government bodies, including power to impose taxes for local purposes, to prepare their budgets and to maintain funds”. So the Parliament is constitutionally bound to provide the local government bodies with full autonomy. Hopefully, instead of involving the MPs in local development works, this Parliament will facilitate the local governments to be effective and efficient in line with the constitution.

 

As we are following the West Minister style parliamentary system, we should consider the roles of MPs in the British Parliament. British MPs split their time between working in Parliament itself, working in the constituency that elected them, and working for their political party. In their constituency, MPs often hold a ‘surgery’ in their office, where local people can come along to discuss any matter that concerns them. MPs also attend functions, visit schools and businesses and generally try to meet as many people as possible. This gives MPs further insight and context into issues they may discuss when they return to Westminster. As in Britain, our MPs should also play vital roles both in the Parliament and their respective constituencies.

 

For this, Government may allocate offices for the MPs in their constituencies so that they can keep in close touch with the people at grass root levels with a view to assessing the opinions of the people regarding laws to be introduced and other government policies. Besides, MPs should monitor different activities of the local government bodies from a distance just to ensure that they follow the Parliament adopted policies justifiably.    

  

Our constitution has rendered the Parliament a supreme honour considering MPs  sensible and responsible citizens. For instance, Articles 78(1), 78(2), 78(3), 78(4) render the special immunity to MPs and they are not accountable to any court for their utterance in any parliamentary session. Unfortunately, in the past, many MPs misused this privilege and turned the Parliament into unprofessional and unethical discussion forum. Hopefully, this time, MPs through their performance will enhance the dignity of the Parliament.   

 

In the past we observed that many of the Parliament sessions were either suspended or adjourned due to serious quorum crisis. It may be noted that according to the Article 72(2), to run a session, the presence of only 60 members out of 300 members is required. It was a shame for the past Parliaments that they failed to ensure the presence of this minimum number of MPs in many sessions. MPs must be aware that each session of the Parliament costs huge amount of Tax Payers’ money. So, on part of an MP, attending Parliament sessions is a moral obligation, if not legal one.

 

Continuous boycott of Parliamentary sessions by the opposition made the last Parliaments ineffective. Due to partisan roles of the speakers, row over trifling matters led the opposition party to boycott the Parliament. This time, people have wanted to see the different scenario. However, this is unfortunate that raising dispute over mere seat arrangement, this time too, the opposition has refrained from attending the session.  The crisis of sitting arrangement could be easily resolved if the notion of the treasury bench changes in accordance with the Prime Minister’s quotable quote, “The opposition will not be evaluated in terms of numbers.” On the other hand, people of the country are not approving the present rigid stance of the opposition on the issue. We hope, both the opposition and treasury benches will resolve the problem immediately.

 

To make the Parliament effective, Article 76 dictates for appointing Standing Committees

of Parliament on different issues of public importance. These highly empowered committees should examine draft bills and other legislative proposals, review the enforcement of laws and monitor the activities of the concerned ministries.  Definitely, this will promote the good governance of the country. However, our past Parliaments undermining the Parliamentary Standing Committees curbed the roles of the Parliament in Governments activities. However, it is appreciative that the new Parliament has initiated its encouraging step to empower these Standing Committees. Besides, it is a praiseworthy gesture of the treasury bench that it has offered at least four chairmanships to opposition in such Committees. In this context, it is expected that this Parliament will establish the office of the Ombudsman following Article 77 as it will further enhance the accountability of the government.   

 

Finally, it is expected that all MPs for the greater interest of the country should play active participation in the Parliamentary session. For this, they should acquire adequate knowledge on constitution and other government policies. However, at present for a healthy parliamentary debate, Article 70(1) is a barrier. This article restricts an MP to vote against the decision of his/her party. This is a severe blow to the fundamental freedom of expression. Conscious citizens of the country expect the wipe out of this article from our constitution soon. In fact, the Parliament should be a place, in Tagore’s words, “Where the mind is without fear and the head is held high/Where knowledge is free/Where the world has not been broken up into fragments by narrow domestic walls/
Where words come out from the depth of truth/
Where tireless striving stretches its arms towards perfection/
Where the clear stream of reason has not lost its way into the dreary desert sand of dead habit/ Where the mind is led forward by thee into ever-widening thought and action”.

 

---

Md. Anwarul Kabir is an educationalist and a freelance writer. He can be reached at kabiranwar@yahoo.com

দিন ভালো নেই

- সৈয়দ জাহেদ হোসেন

দিন ভালো নেই, দিন ভালো নেই
সূর্য নেই, তাই আলো নেই
মেঘ নেই, তাই বৃষ্টি নেই,
চাঁদ নেই, তাই রাত নেই
দিন ভালো নেই।
আমার দিন ভালো নেই

মরুভূমির দাহে ধু ধু চর জেগেছে,তাই
সব হারিয়ে ভুলে গেছে দগ্ধ বুকের জ্বালা।
কিসের টানে রাত্রি কাঁদে?
বলেছে কি দিন? ভেবেছি নিথর হব এই বেলা।

দিন ভালো নেই, দিন ভালো নেই
আমি আকাশ শেষে খুঁজব দিনের বাড়ী,
তোমার সামনে জাগব সেইদিন,
যেদিন তুমি হবে নারী।

দিন ভালো নেই, দিন ভালো নেই
কিসের আশায় দিন খুঁজি?
শুন্যতাই ভালো জানে সব,
ভালবাসবে? শূন্যতাই এখন পুঁজি।

ইসলামের জন্ম, বিকাশ ও প্রাসাদ ষড়যন্ত্র (শেষ পর্ব)

ইসলামের জন্ম, বিকাশ ও প্রাসাদ ষড়যন্ত্র (শেষ পর্ব)

হজরত আলি দুনিয়া ছেড়ে চলে গেলেন কিন্তু মুয়াবিয়া আলি পরিবারের পিছু ছাড়লেন না। হজরত হাসান (রাঃ) ঘরমুখো নিরীহ সরল স্বভাবের মানুষ ছিলেন, রাজনীতি বা ক্ষমতালোভী ছিলেন না তবে নারীলোভী ছিলেন। হজরত আলির ভক্তগণের চাপে হাসান প্রথমে অস্বীকার করে পরে অনিচ্ছাকৃতভাবে খেলাফত গ্রহণ করেন। হাসানকে ক্ষমতা থেকে সরানো এখন হজরত মুয়াবিয়ার (রাঃ) জন্যে মাটির পুতুল ভাঙার মতোই সহজ। এক নাগাড়ে দীর্ঘ তিন যুগের শাসনকার্য পরিচালনায় দক্ষ মুয়াবিয়া সবগুলো কাজ করেন সুপরিকল্পিতভাবে। তিনি জানেন ধর্ম অশিক্ষিত ও দুর্বল মানুষকে ধোঁকা দেয়ার একটি সহজ অথচ শক্তিশালী অস্ত্র, তা দিয়ে উন্নতশীল রাষ্ট্রগঠন বা গণকল্যাণমুখী কোনো কাজ সাধন হয় না। তাই মাঝে-মাঝে তিনি প্রয়োজনে খুব সতর্কতার সাথে ধর্ম ব্যবহার করতেন কিন্তু রাষ্ট্র পরিচালনায় ধর্মের ধারে কাছেও যেতেন না, বরং তিনি পার্শ্ববর্তী খ্রিস্টান রাজ্য বাইজানটাইন, আরমানিয়ার রাষ্ট্র পরিচালনা পদ্ধতি অনুসরণ করতেন। পরবর্তীতে ঐ সকল এলাকা দখল করে বহু খ্রিস্টান ও ভিন্ন ধর্মাবলম্বী লোকজনকে রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ পদে নিযুক্ত করেন। বহুজাতিক সম্মিলিত প্রচেষ্টায় রাজতন্ত্রের আদলে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় হজরত মুয়াবিয়া ধর্মনিরপেক্ষ এক শক্তিশালী রাষ্ট্র গড়ে তোলেন। যুদ্ধকালীন কঠিন দুর্যোগপূর্ণ সময়ে সিরিয়ার জনগণ সবসময় তাদের নেতার পাশে থেকে সমর্থন দিয়েছেন। পক্ষান্তরে হজরত আলির ধর্মতান্ত্রিক ঘুনে ধরা সমাজ ব্যবস্থায় মানুষ অনাস্থা এনে দলে দলে মুয়াবিয়ার দলে আসতে থাকে। হজরত আলির একান্ত বাধ্য সৈন্যগণ এমনকি নবী বংশের হজরত হাসানের আপনজন চুরি দুর্নীতি মিথ্যাচারে জড়িয়ে পড়েন। হাসান একদিন দুঃখ করে বলেন, এই দুনিয়ায় নবীর আদর্শ কোরআন হাদিসের অনুসারী একজন মানুষও কি বেঁচে নেই?

হজরত মুয়াবিয়া কুফা ও বসোরার অবস্থা পরখ করার লক্ষ্যে দুইজন গুপ্তচর পাঠালেন। একই সাথে কুফার অদূরে ৬০ হাজার সৈন্য মোতায়েন করে হাসানকে পত্রমারফত জানিয়ে দিলেন- “স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পন করো নইলে অস্ত্রের মাধ্যমে কুফা দখল করা হবে”। হাসান তাঁর পিতার রক্ষিত ৪০ হাজার সৈন্য থেকে হজরত কায়েসকে সেনাপতি করে ১২ হাজার সৈন্য মুয়াবিয়ার মুকাবিলায় সীমান্তে পাঠিয়ে দিয়ে নিজে পারস্যের প্রাচীন বিলাসবহুল কুসুম কাননে বিশ্রাম নেন। বিশ্রামরত অবস্থায় হাসানের কাছে খবর এলো যে, সেনাপতি হজরত কায়েস আর বেঁচে নেই, সৈন্যগণ রণভঙ্গ দিয়ে পলায়ন করেছে। পালিয়ে আসা হাসানের নিজের সৈন্য ও বিক্ষুদ্ধ জনতা দৌঁড়ে এসে তাঁর রঙ্গমঞ্চের তাঁবু ছিড়ে ছিন্নভিন্ন করে তাদের মনের ক্ষোভ ও ঘৃণা প্রকাশ করলো। যে মখমল কার্পেটে বসে তিনি আয়েশে আরাম করছিলেন, একজন লোক হেঁচকা টানে কার্পেটটি উঠিয়ে নেয়, তারা হাসানকে কাফের মুশরিক বলে গালি দিতে লাগলো। অবস্থা বেগতিক দেখে হজরত হাসান পালিয়ে আত্মগোপন করলেন। ভীরু ভীত্ হাসান মুয়াবিয়ার কাছে সংবাদ দিলেন যে, তিনি বিনা যুদ্ধে দুটি শর্তে আত্মসমর্পন করতে রাজি আছেন। শর্তনামায় হজরত হাসান লিখলেন : এক. কুফায় বাবার পৈত্রিক সম্পত্তি রাজস্বখাতে জমাকৃত সোনা-দানা টাকা-পয়সা আমাকে দিতে হবে, যাতে বাকি জীবনটুকু কাটাতে আমাকে আর্থিক সমস্যায় পড়তে না হয়। দুই. আমার বাবা ও আমাদের পরিবারের নামে জুমার নামাজে খুৎবা পাঠে অভিশাপ দেয়া বন্ধ করতে হবে। মুয়াবিয়া ইচ্ছে করলে বলপূর্বক কুফা দখল করতে পারতেন। কুফার সামান্য ধনের পিপাসা মুয়াবিয়ার নেই, আছে নবী মুহাম্মদের বংশের রক্তপান করার নেশা। বুদ্ধিমান মুয়াবিয়া অপ্রয়োজনে তাঁর একটি সৈন্যও হারাতে রাজি নন। হাসানের দুটো শর্তই তিনি মেনে নিলেন। তবে দ্বিতীয় শর্তের ব্যাপারে বললেন- রাষ্ট্রীয়ভাবে আলি পরিবারকে অভিশাপ দেয়ার বাধ্যবাধকতা উঠিয়ে দেয়া হলো, তবে জনগণ যদি স্বেচ্ছায় তা চর্চা করে তাতে সরকারের কিছু বলার থাকবে না। হজরত আলির অন্ধ সমর্থক, বেঁচে থাকা অবশিষ্ট শিয়াদের পানে ব্যক্তি স্বার্থপর হাসান ফিরে তাকালেন না। রাজস্ব কিছু সম্পদ নিয়ে তিনি স্বপরিবারে মদিনায় চলে যান। কুফায় হাসান আত্মসমর্পন করার কিছুদিন আগেই বসোরার গভর্নর (নবীবংশের) ওবায়দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রাঃ) হজরত মুয়াবিয়াকে চিঠি লিখে আত্মসমর্পন করে তার দলে যোগ দিয়েছিলেন। ইবনে আব্বাস (রাঃ) রাষ্ট্রীয় সম্পদ চুরির অভিযোগে আলির যুগেই অভিযুক্ত হয়েছিলেন। স্বেচ্ছায় বসোরার গভর্নরপদ ত্যাগ করার আগে রাজভাণ্ডার শূন্য করে নিয়ে যান। মুয়াবিয়া এখানেও অসন্তুষ্ট হলেন না। এখন শুধু হাসান আর হোসেনের প্রাণ দুটো হাতে এলেই হয়, মুয়াবিয়ার মিশন সম্পূর্ণ কমপ্লিট।

সমস্ত আরব বিশ্বের একচ্ছত্র অধিনায়ক সম্রাট মুয়াবিয়া রাজকীয় বেশে কুফায় প্রবেশ করলেন। জনগণ প্রফুল্লচিত্তে ফুলের মালা দিয়ে তাঁকে বরণ করলো। কুফা নগরীকে বসোরার অন্তর্ভুক্ত করা হলো,দামেস্ক হলো মুসলিম সাম্রাজ্যের রাজধানী। এবার গোপনে সকলের অগোচরে কাঁটা দিয়ে কাঁটা তুলে নিলেই হয়। হজরত মুয়াবিয়া (রাঃ) গুপ্তচরের মাধ্যমে হজরত হাসানের স্ত্রী যায়েদা বিনতে আশাত বিন কায়েসকে জানিয়ে দিলেন যে, যায়েদা যদি তার স্বামী হাসানকে হত্যা করতে পারে তাহলে তাকে একলক্ষ দিরহাম পুরস্কার দেয়া হবে এবং খলিফার পুত্রবধু করে রাজপ্রাসাদে নিয়ে যাওয়া হবে। একদিন হাসান রোজা ছিলেন,যায়েদা তার স্বামীকে দুধে বিষ মিশিয়ে ইফতার করতে দেন। বিষ পানের চল্লিশ দিন পর ৬৭০ খ্রিস্টাব্দে আরবি ৫০ হিজরির সফর মাসে হজরত হাসান (রাঃ) ইহলোক ত্যাগ করেন। যায়েদা স্বামীকে হত্যা করে যখন মুয়াবিয়ার কাছে তার পুরস্কার দাবি করলেন, হজরত মুয়াবিয়া যায়েদাকে একলক্ষ দিরহাম পাঠিয়ে দিয়ে বললেন- স্বামী হত্যাকারী মহিলাকে আমার পুত্রবধু বানাতে পারি না। মুয়াবিয়া এবার ভাবলেন, নিজে ক্ষমতায় থাকতেই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা উমাইয়া বংশের হাতে রাখার চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত করতে হবে। প্রথমে বিশ্বস্ত ব্যক্তিবর্গের সাথে আলোচনা করলেন, স্বপুত্র এজিদকে রাজপুত্র ঘোষণা দিয়ে রাজতন্ত্র কায়েম করবেন। বিষয়টা সারা দেশে তুমুল আলোড়ন সৃষ্টি করলো। হজরত মুয়াবিয়া তাঁর পুত্র এজিদকে রাজকুমার, না খলিফা ঘোষণা দিয়েছিলেন এবং গণতান্ত্রিক পন্থায় জনগণের সমর্থনে না বল প্রয়োগ করে পুত্রের হাতে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা অর্পণ করেছিলেন, এ নিয়ে ঐতিহাসিকগণের মধ্যে সীমাহীন মতোবিরোধ দেখা যায়। আমরা প্রবন্ধ সংক্ষিপ্ত রাখার লক্ষ্যে দু-একটি উদাহরণের প্রতি আলোকপাত করবো। ইবনে খালেদুন তাঁর Qayd ‘AL-Shareed min Akhbar Yazeed’ বইয়ের ৭০ পৃষ্ঠায় বলেছেন : Mu’awiyah was eager for people’s agreement to give allegiance to his son Yazeed. He resolved to take allegiance to Yazeed as crown prince. So he consulted the grandest companions, the masters of the people and the district’s governors. They all accepted. Delegations from the districts came with acceptance to give allegiance to Yazeed. Many companions gave him the allegiance as well. Hafij Abdul ghoni says, ‘His (Yazeed) caliphate is reightful, sixty of the companions of the prophet gave him the allegiance. Abdullah Ibn’Umar was one of them’.
এই তথ্যানুযায়ী নবীর সহচরী ৬০ জন সাহাবি স্বতঃস্ফূর্তভাবে মুয়াবিয়ার প্রস্তাব সমর্থন করেছিলেন। সুতরাং এজিদকে ইসলাম বিরোধী বললে সাহাবিদেরকেও অপমান করা হবে। হয় এজিদ ও সাহাবিগণ সত্যের পথে ছিলেন, না হয় যে অপরাধে এজিদ দোষী সেই অপরাধে সাহাবিগণও দোষী। মুয়াবিয়া তাঁর পুত্র এজিদকে বলেন- ‘O my son, I have arranged everything for you, and I have made all the Arabs agree to obey you. No one will now oppose you in your title to the caliphate, but I am very much afraid of Husayn Ibn Ali, Abdullah Ibn Umar, Abdur Rahman Ibn Abu Bakr, and Abdullah Ibn Zubayr. Among them Husayn Ibn Ali commands great love and respect because of his superior rights and close relationship to the Prophet. I do not think that people of Iraq will abandon him until they have risen in rebellion for him against you. As far as possible, try to deal with him gently. But the man who will attack you with full force, like a lion attacks his prey, and who will pounce upon you like a fox when it finds its opportunity to pounce, is Abdullah Ibn Zubayr. Whenever you get a chance, cut him into pieces’. (ইক্বদ আল ফারিদ, ভলিউম ৪, পৃষ্ঠা ২২৬ )। আব্দুল্লাহ ইবনে জুবায়েরকে এজিদ কেটে কুটরো টুকরো করেছিলেন কিনা জানা যায়নি তবে পিতার অসম্পূর্ণ কাজটি তিনি পূরণ করেছিলেন। এজিদ অত্যন্ত নৃশংস অমানুষিকভাবে হজরত হোসেনকে (রাঃ) কারবালা প্রান্থরে স্বপরিবারে হত্যা করেন। মৌলানা সাঈদ কুতুবের লেখা ‘Social Justice in Islam’ বইয়ের ২০৯-২১০ পৃষ্ঠায় আমরা আরও দেখতে পাই- After the oath was taken to Yazid in Syria Muawiya gave Syed ibn Aas the task of gaining the acceptance of the people of the Hejaz. This he (Syed ibn Aas) was unable to do. So Muawiya went to Mecca with an army and with full treasury. He called together the principal Muslims and addressed them thus: ‘you all know that I nave lived among you, and you are aware also of my ties of kindred with you. Yazid is your brother and your nephew. It is my wish that you take the oath of allegiance to Yazid as the next Caliph. Muawiya was answered by Abullah ibn Zubair, who gave him a choice of three things to do, first he might do as Allah’s Massenger had done and appoint no successor, second he might do as Abu Bakr had done and nominate a successor, third he might do as Umar had done and hand over the whole matter to a council of six individuals. Muawiya’s anger was kindled, and he asked Abullah ibn Zubair, ‘Have you anymore to say?’ ‘No; said Abullah ibn Zubair. Muawiya turned to the others and said ‘And you?’ ‘We agree with what Abullah ibn Zubair said’ they replied. Then Muawiya addressed the meeting in threatening terms-‘I stand to my words and I swear by Allah that if any of you speaks one word against the decision that I take up, no word of answer will he receive, but first the sword will take his head and no man can save his life’. So the people took the oath. (ঈষৎসংক্ষেপিত)। মৌলানা হজরত রসিদ আখতার (দেওবন্দি) তাঁর ‘তাহজীব আওর তামাদ্দুনে ইসলাম’ বইয়ের ১ম পৃষ্ঠায় উল্লেখ করেন যে- হজরত মুয়াবিয়া (রাঃ) সাধারণ মানুষকে জোরপূর্বক এজিদকে খলিফা মানতে বাধ্য করেছিলেন। একই বক্তব্য পাওয়া যায় সিরিয়ান লেখক হজরত রসিদ রেজার ‘ইমামাতুল উজমা’ বইয়ের ৯৯ পৃষ্ঠায়। অধ্যাপক সাইয়্যেদ আকবর এলাহাবাদী তার ‘মুসলমানৌ কা উরজ ও জাওয়াল’, পৃষ্ঠা ৫৩ এবং সাইয়্যেদ আবুল আলা মওদুদি তার ‘খেলাফত আওর মুলকিয়াত’, পৃষ্ঠা ১৬৪/১৬৫ বইয়ে উভয়েই মুয়াবিয়াকে অন্যায়ভাবে জোরপূর্বক এজিদকে খলিফা মানতে বাধ্য করার দায়ে অভিযুক্ত করেন। তবে সুখের কথা হলো কোনো প্রকার সংঘাত, প্রাণহানী ছাড়াই হজরত মুয়াবিয়া তাঁর রাজতন্ত্র কায়েম করার ইচ্ছে সফলভাবে বাস্তবায়ন করতে পেরেছিলেন। ৬৮০ খ্রিস্টাব্দে মুয়াবিয়ার মৃত্যুর পর এজিদ তার পিতার স্থলাভিষিক্ত হন। উমাইয়া বংশ ৬৬১ থেকে ৭৫০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত এক নাগাড়ে প্রায় ৯০ বৎসর রাজত্ব করেছিলেন। তাই হজরত মুয়াবিয়া (রাঃ) আরব বিশ্বে উমাইয়া রাজতন্ত্রের স্থপতি হিসেবেই চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। মিথ্যা, প্রতারণা, প্রবঞ্চণার উপর ভিত্তি করে যে ইসলামের জন্ম, জগতের অগণিত নিরপরাধ শিশু-কিশোর, নারী-পুরুষের রক্ত পান করে যার বিকাশ, প্রাসাদ ষড়যন্ত্র তার বেঁচে থাকার অনিবার্য অবলম্বন।

– সমাপ্ত

নোটঃ এই সিরিজটি লিখতে গিয়ে বহু গ্রন্থের সাহায্য নেয়া হয়েছে। ইসলামের ইতিহাসের প্রেক্ষাপট পর্যালোচনায় সবচেয়ে প্রমান্য দলিল হিসেবে গন্য করা হয় সহি বুখারি, সিরাত এবং তারিখ আল্‌ তাবারি’র তারিক আল রসুল ওয়াল মুলুককে।  এগুলো ছাড়াও মৌলানা সাঈদ কুতুবের ‘আদালাহাল ইজতিমাইয়্যা ফিল্ ইসলাম’, সাইয়্যেদ আবুল আলা মওদুদির ‘খেলাফত ও রাজতন্ত্র’, খিলাফত ওয়া মুল্কিয়াত, মুসলমানৌ কা উরজ ও জাওয়াল, রাবিউল আবরার ওয়া নুসুসুল আখবার সহ বহু গ্রন্থের সাহায্য নেয়া হয়েছে।  লিখেছেন আকাশ মালিক

সর্বস্বান্ত

- সৈয়দ জাহেদ হোসেন

 

যতন দিয়েই আমি পতন ডেকেছি,
এক বুক কলঙ্ক লুকিয়ে রেখেছ মেঘের আড়ালে,  
ভাবনা তোমার, নিজে যেন একটা চাঁদ!
ঘুমভাঙা বেদনায় বিদ্ধ চোখে কি দুঃস্বপ্ন দেখালে!

স্বপ্নচারীর গেল গেল সব গেল,
ভেঙে দিয়েছ মন,
অরণ্যের কেন আয়ু ক্ষয়ে যায়?
বিদঘুটে নিবিড় বন্ধন।

আর কী আছে?
পূর্ণ কর ইচ্ছের ষোলকলা,
মেঘশূণ্য আকাশে নেই অবশেষ,
তবুও ভালোবাসার কথা বলা।

চির নারী,ভালোবাসার কথা তোমার কোন মুখে,
বাজে আমার কানে বিষাদ বাঁশীর সুরে,
বিশ্ব তুমি, দেখো কী নিখুঁত জাদুমন্ত্র!
পৃথিবীর আঁচলে দ্বিধার চাষাবাদ, ফসল দেহজুড়ে।

জানিনা, সবাই কেমন প্রেম পায়,
কেমন করে দেখে বাঁচার স্বপন,
আগুনে আগুনে দগ্ধ এ উদ্যান,
সর্বস্বান্ত সর্বহারা, কি আছে আমার? কিইবা করব বপন?

Bible Contradictions

Bible Contradictions

Dan Barker

---

 

[Moderator’s note: The following article is excerpted from Dan Barker’s recent book,  “Godless”. Dan Barker (born June 25, 1949) is a prominent American atheist activist who served as a Christian preacher and musician for 20 years, but left Christianity in 1984. After almost 20 years of evangelical preaching, missionizing, and Christian songwriting, Dan Barker started loosing his faith in faith. In Godless, Barker describes the intellectual and psychological path he followed in moving from fundamentalism to freethought. Godless includes sections on biblical morality, the historicity of Jesus, biblical contradictions, the unbelievable resurrection, and much more. It is an arsenal for skeptics and a direct challenge to believers. Along the way, Barker relates the positive benefit readers will experience from learning to trust in reason and human kindness instead of living in fear of false judgment and moral condemnation. He is the current co-president of the Freedom From Religion Foundation, an American Freethought organization that promotes the separation of church and state.
While Abul Kasem is writing an important  series on Quranic contradictions in our site, I thought readers will be interested to know the contradictions in other ‘holy books’ too!

---

 

“It ain’t those parts of the Bible that I can’t understand that bother me, it is the parts that I do understand.” ~ Mark Twain

PAUL SAID, “God is not the author of confusion,” (I Corinthians 14:33), yet never has a book produced more confusion than the bible! There are hundreds of denominations and sects, all using the “inspired Scriptures” to prove their conflicting doctrines.
Why do trained theologians differ? Why do educated translators disagree over Greek and Hebrew meanings? Why all the confusion? Shouldn’t a document that was “divinely inspired” by an omniscient and omnipotent deity be as clear as possible?
“If the trumpet give an uncertain sound,” Paul wrote in I Corinthians 14:8, “who shall prepare himself to the battle? So likewise ye, except ye utter by the tongue words easy to be understood, how shall it be known what is spoken? for ye shall speak into the air.” Exactly! Paul should have practiced what he preached. For almost two millennia, the bible has been producing a most “uncertain sound.”
The problem is not with human limitations, as some claim. The problem is the bible itself. People who are free of theological bias notice that the bible contains hundreds of discrepancies. Should it surprise us when such a literary and moral mish-mash, taken seriously, causes so much discord? Here is a brief sampling of biblical contradictions.

Should we kill?

• Exodus 20:13 “Thou shalt not kill.”
• Leviticus 24:17 “And he that killeth any man shall surely be put to death.” vs.
• Exodus 32:27 “Thus sayeth the Lord God of Israel, Put every man his sword by his side, . . . and slay every man his brother, . . . companion, . . . neighbor.”
• I Samuel 6:19 ” . . . and the people lamented because the Lord had smitten many of the people with a great slaughter.”
• I Samuel 15:2,3,7,8 “Thus saith the Lord . . . Now go and smite Amalek, and utterly destroy all that they have, and spare them not; but slay both man and woman, infant and suckling, ox and sheep, camel and ass. . . . And Saul smote the Amalekites . . . and utterly destroyed all the people with the edge of the sword.”
• Numbers 15:36 “And all the congregation brought him without the camp, and stoned him with stones, and he died; as the Lord commanded Moses.”
• Hosea 13:16 “they shall fall by the sword: their infants shall be dashed in pieces, and their women with children shall be ripped up.” For a discussion of the defense that the Commandments prohibit only murder, see “Murder, He Wrote”, chapter 27 (Losing Faith In Faith: From Preacher To Atheist).

Should we tell lies?

• Exodus 20:16 “Thou shalt not bear false witness.”
• Proverbs 12:22 “Lying lips are an abomination to the Lord.” vs.
• I Kings 22:23 “The Lord hath put a lying spirit in the mouth of all these thy prophets, and the Lord hath spoken evil concerning thee.”
• II Thessalonians 2:11 “And for this cause God shall send them strong delusion, that they should believe a lie.” Also, compare Joshua 2:4-6 with James 2:25.

Should we steal?

• Exodus 20:15 “Thou shalt not steal.”
• Leviticus 19:13 “Thou shalt not defraud thy neighbor, neither rob him.” vs.
• Exodus 3:22 “And ye shall spoil the Egyptians.”
• Exodus 12:35-36 “And they spoiled [plundered, NRSV] the Egyptians.”
• Luke 19:29-34 “[Jesus] sent two of his disciples, Saying, Go ye into the village . . . ye shall find a colt tied, whereon yet never man sat: loose him, and bring him hither. And if any man ask you, Why do ye loose him? thus shall ye say unto him, Because the Lord hath need of him. . . . And as they were loosing the colt, the owners thereof said unto them, Why loose ye the colt? And they said, The Lord hath need of him.” I was taught as a child that when you take something without asking for it, that is stealing.

Shall we keep the sabbath?

• Exodus 20:8 “Remember the sabbath day to keep it holy.”
• Exodus 31:15 “Whosoever doeth any work in the sabbath day, he shall surely be put to death.”
• Numbers 15:32,36 “And while the children of Israel were in the wilderness, they found a man that gathered sticks upon the sabbath day. . . . And all the congregation brought him without the camp, and stoned him with stones, and he died; as the Lord commanded Moses.” vs.
• Isaiah 1:13 “The new moons and sabbaths, the calling of assemblies, I cannot away with; it is iniquity.”
• John 5:16 “And therefore did the Jews persecute Jesus and sought to slay him, because he had done these things on the sabbath day.”
• Colossians 2:16 “Let no man therefore judge you in meat, or in drink, or in respect of an holy-day, or of the new moon, or of the sabbath days.”

Shall we make graven images?

• Exodus 20:4 “Thou shalt not make unto thee any graven image, or any likeness of anything that is in heaven . . . earth . . . water.”
• Leviticus 26:1 “Ye shall make ye no idols nor graven image, neither rear you up a standing image, neither shall ye set up any image of stone.”
• Deuteronomy 27:15 “Cursed be the man that maketh any graven or molten image.” vs.
• Exodus 25:18 “And thou shalt make two cherubims of gold, of beaten work shalt thou make them.”
• I Kings 7:15,16,23,25 “For he [Solomon] cast two pillars of brass . . . and two chapiters of molten brass . . . And he made a molten sea . . . it stood upon twelve oxen . . . [and so on]”

Are we saved through works?

• Ephesians 2:8,9 “For by grace are ye saved through faith . . . not of works.”
• Romans 3:20,28 “Therefore by the deeds of the law there shall no flesh be justified in his sight.”
• Galatians 2:16 “Knowing that a man is not justified by the works of the law, but by the faith of Jesus Christ.” vs.
• James 2:24 “Ye see then how that by works a man is justified, and not by faith only.”
• Matthew 19:16-21 “And, behold, one came and said unto him, Good Master, what good thing shall I do, that I may have eternal life? And he [Jesus] said unto him . . . keep the commandments. . . . The young man saith unto him, All these things have I kept from my youth up: what lack I yet? Jesus said unto him, If thou wilt be perfect, go and sell that thou hast, and give to the poor, and thou shalt have treasure in heaven.” The common defense here is that “we are saved by faith and works.” But Paul said “not of works.”

Should good works be seen?

• Matthew 5:16 “Let your light so shine before men that they may see your good works.”
• I Peter 2:12 “Having your conversation honest among the Gentiles: that . . . they may by your good works, which they shall behold, glorify God in the day of visitation.” vs.
• Matthew 6:1-4 “Take heed that ye do not your alms before men, to be seen of them . . . that thine alms may be in secret.”
• Matthew 23:3,5 “Do not ye after their [Pharisees’] works. . . . all their works they do for to be seen of men.”

Should we own slaves?

• Leviticus 25:45-46 “Moreover of the children of the strangers that do sojourn among you, of them shall ye buy, . . . and they shall be your possession . . . they shall be your bondmen forever.”
• Genesis 9:25 “And he [Noah] said, Cursed be Canaan; a servant of servants shall he be unto his brethren.”
• Exodus 21:2,7 “If thou buy an Hebrew servant, six years he shall serve: and in the seventh he shall go out free for nothing. . . . And if a man sell his daughter to be a maidservant, she shall not go out as the manservants do.”
• Joel 3:8 “And I will sell your sons and your daughters into the hand of the children of Judah, and they shall sell them to the Sabeans, to a people far off: for the Lord hath spoken it.”
• Luke 12:47,48 [Jesus speaking] “And that servant, which knew his lord’s will, and prepared not himself, neither did according to his will, shall be beaten with many stripes. But he that knew not, and did commit things worthy of stripes, shall be beaten with few stripes.”
• Colossians 3:22 “Servants, obey in all things your masters.” vs.
• Isaiah 58:6 “Undo the heavy burdens . . . let the oppressed go free, . . . break every yoke.”
• Matthew 23:10 “Neither be ye called Masters: for one is your Master, even Christ.” Pro-slavery bible verses were cited by many churches in the South during the Civil War, and were used by some theologians in the Dutch Reformed Church to justify apartheid in South Africa. There are more pro-slavery verses than cited here.

Does God change his mind?

• Malachi 3:6 “For I am the Lord; I change not.”
• Numbers 23:19 “God is not a man, that he should lie; neither the son of man, that he should repent.”
• Ezekiel 24:14 “I the Lord have spoken it: it shall come to pass, and I will do it; I will not go back, neither will I spare, neither will I repent.”
• James 1:17 ” . . . the Father of lights, with whom is no variableness, neither shadow of turning.” vs.
• Exodus 32:14 “And the Lord repented of the evil which he thought to do unto his people.”
• Genesis 6:6,7 “And it repented the Lord that he had made man on the earth . . . And the Lord said, I will destroy man whom I have created from the face of the earth . . . for it repenteth me that I have made him.”
• Jonah 3:10 “. . . and God repented of the evil, that he had said that he would do unto them; and he did it not.” See also II Kings 20:1-7, Numbers 16:20-35, Numbers 16:44-50.See Genesis 18:23-33, where Abraham gets God to change his mind about the minimum number of righteous people in Sodom required to avoid destruction, bargaining down from fifty to ten. (An omniscient God must have known that he was playing with Abraham’s hopes for mercy–he destroyed the city anyway.)

Are we punished for our parents’ sins?

• Exodus 20:5 “For I the Lord thy God am a jealous God, visiting the iniquity of the fathers upon the children unto the third and fourth generation.” (Repeated in Deuteronomy 5:9)
• Exodus 34:6-7 ” . . . The Lord God, merciful and gracious, . . . that will by no means clear the guilty; visiting the iniquity of the fathers upon the children, and upon the children’s children, unto the third and to the fourth generation.”
• I Corinthians 15:22 “For as in Adam all die, . . .” vs.
• Ezekiel 18:20 “The son shall not bear the iniquity of the father.”
• Deuteronomy 24:16 “The fathers shall not be put to death for the children, neither shall the children be put to death for the fathers: every man shall be put to death for his own sin.”

Is God good or evil?

• Psalm 145:9 “The Lord is good to all.”
• Deuteronomy 32:4 “a God of truth and without iniquity, just and right is he.” vs.
• Isaiah 45:7 “I make peace and create evil. I the Lord do all these things.” See “Out of Context” for more on Isaiah 45:7.
• Lamentations 3:38 “Out of the mouth of the most High proceedeth not evil and good?”
• Jeremiah 18:11 “Thus saith the Lord; Behold, I frame evil against you, and devise a device against you.”
• Ezekiel 20:25,26 “I gave them also statutes that were not good, and judgments whereby they should not live. And I polluted them in their own gifts, in that they caused to pass through the fire all that openeth the womb, that I might make them desolate, to the end that they might know that I am the Lord.”

Does God tempt people?

• James 1:13 “Let no man say . . . I am tempted of God: for God cannot be tempted with evil, neither tempteth he any man.” vs.
• Genesis 22:1 “And it came to pass after these things, that God did tempt Abraham.”

Is God peaceable?

• Romans 15:33 “The God of peace.”
• Isaiah 2:4 “. . . and they shall beat their swords into plowshares, and their spears into pruninghooks: nation shall not lift up sword against nation, neither shall they learn war any more.” vs.
• Exodus 15:3 “The Lord is a man of war.”
• Joel 3:9-10 “Prepare war, wake up the mighty men, let all the men of war draw near; let them come up: Beat your plowshares into swords, and your pruninghooks into spears: let the weak say, I am strong.”

Was Jesus peaceable?

• John 14:27 “Peace I leave with you, my peace I give unto you.”
• Acts 10:36 “The word which God sent unto the children of Israel, preaching peace by Jesus Christ.”
• Luke 2:14 ” . . . on earth peace, good will toward men.” vs.
• Matthew 10:34 “Think not that I am come to send peace on earth: I came not to send peace, but a sword. For I am come to set a man at variance against his father, and the daughter against her mother, and the daughter in law against her mother in law. And a man’s foes shall be they of his own household.”
• Luke 22:36 “Then said he unto them, . . . he that hath no sword, let him sell his garment, and buy one.”

Was Jesus trustworthy?

• John 8:14 “Though I bear record of myself, yet my record is true.” vs.
• John 5:31 “If I bear witness of myself, my witness is not true.” “Record” and “witness” in the above verses are the same Greek word (martyria).

Shall we call people names?

• Matthew 5:22 “Whosoever shall say Thou fool, shall be in danger of hellfire.” [Jesus speaking] vs.
• Matthew 23:17 “Ye fools and blind.” [Jesus speaking]
• Psalm 14:1 “The fool hath said in his heart, There is no God.”

Has anyone seen God?

• John 1:18 “No man hath seen God at any time.”
• Exodus 33:20 “Thou canst not see my face: for there shall no man see me, and live.”
• John 6:46 “Not that any man hath seen the Father, save he which is of God [Jesus], he hath seen the Father.”
• I John 4:12 “No man hath seen God at any time.” vs.
• Genesis 32:30 “For I have seen God face to face.”
• Exodus 33:11 “And the Lord spake unto Moses face to face, as a man speaketh unto his friend.”
• Isaiah 6:1 “In the year that king Uzziah died I saw also the Lord sitting upon a throne, high and lifted up, and his train filled the temple.”
• Job 42:5 “I have heard of thee by the hearing of the ear: but now mine eye seeth thee.”

How many Gods are there?

• Deuteronomy 6:4 “The Lord our God is one Lord.” vs.
• Genesis 1:26 “And God said, Let us make man in our image.”
• Genesis 3:22 “And the Lord God said, Behold, the man has become as one of us, to know good and evil.”
• I John 5:7 “And there are three that bear witness in heaven, the Father, the Word, and the Holy Ghost: and these three are one.” It does no good to claim that “Let us” is the magisterial “we.” Such usage implies inclusivity of all authorities under a king’s leadership. Invoking the Trinity solves nothing because such an idea is more contradictory than the problem it attempts to solve.

Are we all sinners?

• Romans 3:23 “For all have sinned, and come short of the glory of God.”
• Romans 3:10 “As it is written, There is none righteous, no, not one.”
• Psalm 14:3 “There is none that doeth good, no, not one.” vs.
• Job 1:1 “There was a man . . . who name was Job; and that man was perfect and upright.”
• Genesis 7:1 “And the Lord said unto Noah, Come thou and all thy house into the ark; for thee have I seen righteous before me in this generation.”
• Luke 1:6 “And they were both righteous before God, walking in all the commandments and ordinances of the Lord blameless.”

How old was Ahaziah?

• II Kings 8:26 “Two and twenty years old was Ahaziah when he began to reign.” vs.
• II Chronicles 22:2 “Forty and two years old was Ahaziah when he began to reign.”

Should we swear an oath?

• Numbers 30:2 “If a man vow a vow unto the Lord, or swear an oath . . . he shall do according to all that proceedeth out of his mouth.”
• Genesis 21:22-24,31 ” . . . swear unto me here by God that thou wilt not deal falsely with me . . . And Abraham said, I will swear. . . . Wherefore he called that place Beersheba [“well of the oath”]; because there they sware both of them.”
• Hebrews 6:13-17 “For when God made promise to Abraham, because he could swear by no greater, he sware by himself . . . for men verily swear by the greater: and an oath for confirmation is to them an end of all strife. Wherein God, willing more abundantly to shew unto the heirs of promise the immutability of his counsel, confirmed it by an oath.” See also Genesis 22:15-19, Genesis 31:53, and Judges 11:30-39.vs.
• Matthew 5:34-37 “But I say unto you, swear not at all; neither by heaven . . . nor by the earth . . . . Neither shalt thou swear by thy head . . . . But let your communication be, Yea, yea; Nay, nay: for whatsoever is more than these cometh of evil.”
• James 5:12 “. . . swear not, neither by heaven, neither by the earth, neither by any other oath: but let your yea be yea; and your nay, nay; lest ye fall into condemnation.”

When was Jesus crucified?

• Mark 15:25 “And it was the third hour, and they crucified him.” vs.
• John 19:14-15 “And about the sixth hour: and he saith unto the Jews, Behold your King! But they cried out . . . crucify him.” It is an ad hoc defense to claim that there are two methods of reckoning time here. It has never been shown that this is the case.

Shall we obey the law?

• I Peter 2:13 “Submit yourself to every ordinance of man . . . to the king, as supreme; Or unto governors.”
• Matthew 22:21 “Render therefore unto Caesar the things which are Caesar’s.” See also Romans 13:1,7 and Titus 3:1. vs.
• Acts 5:29 “We ought to obey God rather then men.”

How many animals on the ark?

• Genesis 6:19 “And of every living thing of all flesh, two of every sort shalt thou bring into the ark.”
• Genesis 7:8-9 “Of clean beasts, and of beasts that are not clean, and of fowls, and of every thing that creepeth upon the earth, There went in two and two unto Noah into the ark, the male and the female, as God had commanded Noah.”
• Genesis 7:15 “And they went in unto Noah into the ark, two and two of all flesh, wherein is the breath of life.” vs.
• Genesis 7:2 “Of every clean beast thou shalt take to thee by sevens, the male and his female: and of beasts that are not clean by two, the male and his female.”

Were women and men created equal?

• Genesis 1:27 “So God created man in his own image, in the image of God created he him; male and female created he them.” vs.
• Genesis 2:18,23 “And the Lord God said, It is not good that the man should be alone; I will make him an help meet for him. . . . And Adam said, This is now bone of my bones, and flesh of my flesh: she shall be called Woman, because she was taken out of Man.”

Were trees created before humans?

• Genesis 1:12-31 “And the earth brought forth grass, and herb yielding seed after his kind, and the tree yielding fruit, whose seed was in itself, after his kind: . . . And the evening and the morning were the third day. . . . And God said, Let us make man in our image . . . And the evening and the morning were the sixth day.” vs.
• Genesis 2:5-9 “And every plant of the field before it was in the earth, and every herb of the field before it grew: for the Lord God had not caused it to rain upon the earth, and there was not a man to till the ground. .Ê.ÊAnd the Lord God formed man of the dust of the ground . . . And the Lord God planted a garden eastward in Eden; and there he put the man whom he had formed. And out of the ground made the Lord God to grow every tree that is pleasant to the sight, and good for food.”

Did Michal have children?

• II Samuel 6:23 “Therefore Michal the daughter of Saul had no child unto the day of her death.” vs.
• II Samuel 21:8 “But the king took the two sons of Rizpah . . . and the five sons of Michal the daughter of Saul.”

How many stalls did Solomon have?

• I Kings 4:26 “And Solomon had forty thousand stalls of horses for his chariots, and twelve thousand horsemen.” vs.
• II Chronicles 9:25 “And Solomon had four thousand stalls for horses and chariots, and twelve thousand horsemen.”

Did Paul’s men hear a voice?

• Acts 9:7 “And the men which journeyed with him stood speechless, hearing a voice, but seeing no man.” vs.
• Acts 22:9 “And they that were with me saw indeed the light, and were afraid; but they heard not the voice of him that spake to me.” (For more detail on this contradiction, with a linguistic analysis of the Greek words, see “Did Paul’s Men Hear A Voice?” by Dan Barker, published in the The Skeptical Review, 1994 #1)

Is God omnipotent?

• Jeremiah 32:27 “Behold, I am the Lord, the God of all flesh: is there anything too hard for me?
• Matthew 19:26 “But Jesus beheld them, and said unto them, With men this is impossible; but with God all things are possible.” vs.
• Judges 1:19 “And the Lord was with Judah; and he drave out the inhabitants of the mountain; but could not drive out the inhabitants of the valley, because they had chariots of iron.”

Does God live in light?

• I Timothy 6:15-16 ” . . . the King of kings, and Lord of lords; Who only hath immortality, dwelling in the light which no man can approach . . .”
• James 1:17 ” . . . the Father of lights, with whom is no variableness, neither shadow of turning.”
• John 12:35 “Then Jesus saith unto them, . . . he that walketh in darkness knoweth not wither he goeth.”
• Job 18:18 “He [the wicked] shall be driven from light into darkness, and chased out of the world.”
• Daniel 2:22 “He [God] knoweth what is in the darkness, and the light dwelleth with him.” See also Psalm 143:3, II Corinthians 6:14, and Hebrews 12:18-22. vs.
• I Kings 8:12 “Then spake Solomon, The Lord said that he would dwell in the thick darkness.” (Repeated in II Chronicles 6:1)
• II Samuel 22:12 “And he made darkness pavilions round about him, dark waters, and thick clouds of the skies.”
• Psalm 18:11 “He made darkness his secret place; his pavilion round about him were dark waters and thick clouds of the skies.”
• Psalm 97:1-2 “The Lord reigneth; let the earth rejoice . . . clouds and darkness are round about him.”

Does God accept human sacrifice?

• Deuteronomy 12:31 “Thou shalt not do so unto the Lord thy God: for every abomination to the Lord, which he hateth, have they done unto their gods; for even their sons and their daughters they have burnt in the fire to their gods.” vs.
• Genesis 22:2 “And he said, Take now thy son, thine only son Isaac, whom thou lovest, and get thee into the land of Moriah; and offer him there for a burnt offering upon one of the mountains which I will tell thee of.”
• Exodus 22:29 “For thou shalt not delay to offer the first of thy ripe fruits, and of thy liquors; the firstborn of thy sons shalt thou give unto me.”
• Judges 11:30-39 “And Jephthah vowed a vow unto the Lord, and said, If thou shalt without fail deliver the children of Ammon into mine hand, Then it shall be, that whatsoever cometh forth of the doors of my house to meet me, when I return in peace from the children of Ammon, shall surely be the Lord’s, and I will offer it up for a burnt offering. So Jephthah passed over unto the children of Ammon . . . and the Lord delivered them into his hands. . . . And Jephthah came to Mizpeh unto his house, and, behold, his daughter came out to meet him with timbrels and with dances: . . . And it came to pass at the end of two months, that she returned unto her father, who did with her according to his vow which he had vowed.”
• II Samuel 21:8-14 “But the king [David] took the two sons of Rizpah . . . and the five sons of Michal . . . and he delivered them into the hands of the Gibeonites, and they hanged them in the hill before the Lord: and they fell all seven together, and were put to death in the days of harvest . . . And after that God was intreated for the land.”
• Hebrews 10:10-12 ” . . . we are sanctified through the offering of the body of Jesus Christ . . . But this man, after he had offered one sacrifice for sins forever, sat down on the right hand of God.”
• I Corinthians 5:7 ” . . . For even Christ our passover is sacrificed for us.”

Who was Joseph’s father?

• Matthew 1:16 “And Jacob begat Joseph the husband of Mary, of whom was born Jesus.” vs.
• Luke 3:23 “And Jesus himself began to be about thirty years of age, being (as was supposed) the son of Joseph, which was the son of Heli.”

---

This chapter was first printed as a “nontract,” a freethinkers’ version of a (non-proselytizing) tract. Since it was first published, I have received numerous replies from Christians who think that these contradictions are either trivial or easily explained. Yet not a single “explanation” has been convincing. Most of them do little homework, inventing off-the-cuff defenses of what the bible “could have meant,” or devising creative explanations that actually make the problem worse. For example, one Christian, agreeing with Eusebius, explained that “Thou shalt not bear false witness” does not prohibit lies, and that God actually wants us to tell falsehoods if it will further the kingdom of heaven.
Many of the defensive attempts are arguments from silence. Some apologists assert that since the writer of John does not say that there were not more women who visited the tomb with Mary, then it is wrong to accuse him of contradicting the other evangelists who say it was a group of women. But this is a non-argument. With this kind of thinking, I could claim that the people who accompanied Mary to the tomb included Mother Teresa, Elvis Presley, and Paul Bunyan. Since the writer of John does not specifically exclude these people, then there is no way to prove that this is not true–if such fragile logic is valid.
All of the above contradictions have been carefully studied, and when necessary the original languages have been consulted. Although it is always scholarly to consider the original languages, why should that be necessary with the “word of God?” An omnipotent, omniscient deity should have made his all-important message unmistakably clear to everyone, everywhere, at all times. No one should have to learn an extinct language to get God’s message, especially an ancient language about which there is much scholarly disagreement. If the English translation is flawed or imprecise, then God failed to get his point across to English speakers. A true fundamentalist should consider the English version of the bible to be just as inerrant as the original because if we admit that human error was possible in the translation, then it was equally possible in the original writing. (Some fundamentalists do assert that the King James Version is perfect. One preacher reportedly said, “If the King James Version was good enough for the Apostle Paul, then it’s good enough for me.”) If a contradiction exists in English, then the bible is contradictory.
The above list of thirty-three contradictions is a very small portion of the thousands of biblical discrepancies that have been catalogued by scholars. See “Leave No Stone Unturned” for seventeen additional contradictions specific to the resurrection of Jesus. One monthly publication, “Biblical Errancy,” is devoted entirely to this topic (published by Dennis McKinsey, 3158 Sherwood Park Drive, Springfield OH, 45505.) Even if a defender of the bible were to eliminate all of the above (and no one has come close), we are still only scratching the surface. The bible is a flawed book.
Why should it surprise us that the Bible is contradictory? Pick up any newspaper and you will find the contradictions. The Bible was written by dozens of authors with diverse agendas, most of whom did not know each other, over hundreds of years. They were human beings, and human beings can make mistakes. The Bible does contain some truth but no honest person can pretend that it is a perfect book. Combined with the exaggerations, scientific inaccuracies, borrowing from pagan sources, evidence of tempering and clearly irrelevant passages aimed at bygone, primitive and superstitious people; the contradictions underscore the fact that on balance, the Bible is not a reliable source of truth.

Related:

• Did a historical Jesus exist?
• Did Jesus Really Rise From The Dead?