অজস্র সৌন্দর্যের ভা-ার এ পৃথিবী। আর এসব সৌন্দর্য যাদের জন্য উৎসর্গ করা হয়েছে তারা হলো সৃষ্টির শ্রেষ্ঠ জীব মানুষ। কারণ মানুষ এ অপার সৌন্দর্যের মূল্যায়ন করতে জানে। তবে সে মানুষ শিক্ষার দ্বারা, জ্ঞানের দ্বারা নিজেকে আলোকিত ও বিকশিত করতে পারে। যারা প্রকৃত শিক্ষার আলোয় আলোকিত নয় তারা মানুষ বটে তবে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী। আর যারা জ্ঞানচর্চার মাধ্যমে নিজের আত্মাকে বিকশিত করে না তারা বুদ্ধি প্রতিবন্ধী।
এমনই একটি প্রতিবন্ধকতাপূর্ণ এলাকা হলো টাঙ্গাইল জেলার কালিহাতী থানা। এ এলাকায় শিক্ষাব্যবস্থার তেমন বিশেষ উন্নয়ন এখানে লক্ষ্য করা যায় না। যদিও বেশ কিছু বিল্ডিং এখানে স্কুল-কলেজ নামে সুসজ্জিত রয়েছে। তবে এখানে প্রকৃত শিক্ষার আলো নেই।
এখানকার প্রাইমারি স্কুলগুলোতে বাচ্চারা কেবল মুখস্থ বিদ্যা শেখে। অর্থাৎ বইয়ের পাতায় ছাপা অক্ষরগুলো কেবল আত্মগোচর করে কিন্তু এর অর্থ তারা বোঝে না। তারা শিখে ক্লাস রুম ঝাড়ু দেয়া, শিক্ষক-শিক্ষিকাদের চা, পান, বিস্কিট এগুলো এনে দেয়া। অথচ তাদের কাছে যদি পাঠ্য বইয়ের একটি ইংরেজি কবিতার অর্থ জানতে চাওয়া হয়, উত্তরে তারা জানায় 'মেডাম তো শিখায় নাই কা'।
প্রতিটি সাময়িক পরীক্ষায় চারু ও কারুকলা নামে একটি পরীক্ষার উল্লেখ থাকলেও অবাক হওয়ার বিষয় এটাই যে, এ পরীক্ষায় ছাত্রছাত্রীদের চিত্রাঙ্কন বা এ জাতীয় কিছু নেয়া হয় না। এ পরীক্ষায় ছাত্রছাত্রীরা শিক্ষকদের ঝাড়ু, কুলা, দড়ি, চালা এসব কিনে দেয় এবং যে যতো দামি জিনিস দেবে তার নাম্বার ততো বেশি হবে এবং পরীক্ষা শেষে শিক্ষকরা নিজেদের মধ্যে এসব জিনিস ভাগ করে নেন।
প্রকৃত অর্থে আমরা যারা এ সমাজে বসবাস করি তারা কেউই প্রতিবন্ধী নয়। সবাই কেবল প্রতিবন্ধী সেজে নিজেদের দায়িত্ব এড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছিল। আর আমাদের এ দায়িত্বহীনতার মাশুল দিতে হচ্ছে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে। তারা সত্যি সত্যিই প্রতিবন্ধী হয়েই বেড়ে উঠেছে।
তাই সমাজের সুস্থ সবল এবং দায়িত্বপ্রাপ্ত মানুষের কাছে আমার অনুরোধ, আপনারা দায়িত্ব এড়িয়ে না গিয়ে, নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে সচেষ্ট হন এবং আপনাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে একটি সুস্থ সাবলীল জীবন গড়ে দিন। যারা প্রকৃত শিক্ষার আলোয় আলোকিত হবে এবং জ্ঞান চর্চার মাধ্যমে নিজেদের সুস্থ চিন্তা চেতনাকে বিকশিত করবে।
No comments:
Write comments