‘বিচারের আশা দুরাশা মাত্র’

লেখক ও কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেছেন, গত কয়েক বছরে যেসব গুপ্ত হত্যা হয়েছে, সেগুলোর একটিরও বিচার হয়নি। যে কারণে প্রকাশক ফয়সাল আরেফিন দীপনের বাবা ছেলে হত্যার বিচার চান না। এই হত্যাকাণ্ডের বিচার আশা করা দুরাশা মাত্র।
আজ রোববার সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে প্রকাশক ফয়সাল হত্যা এবং আরেক প্রকাশকসহ তিনজনকে হত্যাচেষ্টার প্রতিবাদে শিক্ষক-শিক্ষার্থী, লেখক ও নাগরিকবৃন্দের ব্যানারে বিক্ষোভ সমাবেশ হয়।
সেখানে দেওয়া বক্তৃতায় সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, রাষ্ট্রের বিচারব্যবস্থার প্রতি মানুষের অনাস্থা তৈরি হয়েছে। আজ মানুষ এসব হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া জানাতেও ভুলে যাচ্ছে। রাষ্ট্র যদি তার অবস্থান নিশ্চিত না করে, তবে রাষ্ট্রের প্রতি জনগণের আস্থা নষ্ট হবে। এটি রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর, জনগণের জন্যও ক্ষতিকর। এই হত্যাকাণ্ডের হয়তো বিচার হবে না; তবুও আমরা আজকে যারা এখানে একত্র হয়েছি, সবাই এই হত্যাকাণ্ডের ন্যায়বিচার চাই।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক তানজীমউদ্দিন খান বলেন, ‘রাষ্ট্র প্রতিটি পর্যায়ে গণতান্ত্রিক স্পেস বিনষ্ট করেছে। এমন পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রের প্রতি আস্থাহীনতাই স্বাভাবিক। এই অনাস্থাই জানিয়েছেন দীপনের বাবা।’
রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক শান্তনু মজুমদার বলেন, সরকার মধ্যপন্থা ও নিরপেক্ষতার নাম করে আক্রমণকারী ও আক্রান্তদের একই পাল্লায় রেখে দিচ্ছে। সরকারের উচিত এখনই তার অবস্থান নিশ্চিত করা।
প্রকাশক দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘আমার কথা তিনটা। হয় ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এই হত্যার বিচার করতে হবে, অথবা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আমাকেও হত্যা করতে হবে, অথবা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে হবে।’
শ্রাবণ প্রকাশনীর কর্ণধার রবিন আহসান এ সময় বাংলাদেশ পুস্তক প্রকাশক ও বিক্রেতা সমিতির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করে বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আগামীকাল সোমবার সারা দেশে সারা দিন বইয়ের দোকান বন্ধ থাকবে।
এ সময় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক শফিক-উজ-জামান, ফাহমিদুল হক, সামিনা লুৎফা, আকমল হোসেন, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রাজীব মীর প্রমুখ বক্তব্য দেন।
সমাবেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, প্রকাশক, সুশীল সমাজ ও বিভিন্ন ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
No comments:
Write comments