বিএনপি আহূত আজকের হরতাল নিয়ে ক্ষমতাসীন দল ও তার সহোদরের মধ্যে অভূতপূর্ব এক অস্বস্তির সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে হয়। সরকার এই হরতাল প্রতিহত করার জন্য সর্বশক্তি নিয়োগ করেছে এবং ইতোমধ্যে দেশব্যাপী বিএনপি জামায়াতের কয়েক হাজার নেতাকর্মীকে গ্রেফতার করেছে। হরতালের ব্যাপারে সরকার ও সরকারি দলকে মাঠে ময়দানে যত সক্রিয় দেখা যাচ্ছে বিরোধী দলকে তত সক্রিয় বলে মনে হচ্ছে না। যতটুকু সক্রিয় তাদের হবার কথা ছিল সরকারের পুলিশ বাহিনী ও দলীয় ক্যাডাররা তাতেও বাধার সৃষ্টি করছে। মজার ব্যাপার হচ্ছে আওয়ামী নেতৃত্বাধীন যে সরকারের নেতাকর্মীরা যেখানে আজীবনই হরতালের সাথে বসবাস করেছে, হরতালই যাদের জীবনযাত্রার অংশ ছিল তারাই হরতালের বিরোধিতা করছে এবং জোরের সাথে বলছে যে, এই হরতালের পেছনে ব্যক্তিস্বার্থ ছাড়া জাতীয় কোন ইস্যু নেই। বিএনপি নেতা ড. খন্দকার মোশাররফ সম্প্রতি বলেছিলেন যে, হরতালের বিরুদ্ধে কথা বলার নৈতিক অধিকার এই সরকারের নেই। দৈনিক যুগান্তর তার এই মন্তব্যটিকে জনমত জরিপে নিয়ে আসে। এতে দেখা যায় যে, জরিপে অংশগ্রহণকারীগণ ৯৭ শতাংশ লোকই তার সাথে একমত। এটি সরকারের একটি পরাজয় বলেই আমার ধারণা।
সরকারের একজন মন্ত্রী বিএনপিকে হরতাল না করে সংসদে যাবার পরামর্শ দিয়েছেন। পরামর্শটি আমার কাছে ভালই মনে হয়েছে। তবে অতীতের অভিজ্ঞতাকে সামনে রাখতে এর মধ্যে আমি ফলপ্রসূ কিছু দেখতে পাই না। এই সংসদের আমলেই বাংলাদেশের অস্তিত্ববিনাসী একটি বড় ঘটনা ঘটেছে। বিডিআর বিদ্রোহ হয়েছে এবং ৫৭ জন আর্মি অফিসার খুন হয়েছেন, তাদের পরিবারের উপর অমানুষিক নির্যাতন হয়েছে। আমাদের সংসদে এ বিষয়ে কোনও আলোচনা হতে দেখা যায়নি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী গত জানুয়ারি মাসে দিল্লী গিয়ে অনেকগুলো চুক্তি করেছেন, ভারতকে ট্রানজিট, করিডোর, বন্দর, গ্যাস, কয়লা ব্যবহারের সুবিধা দিয়ে এসেছেন। সংসদে এ সম্পর্কে আলোচনা হয়নি এবং চুক্তির শর্তাবলী সংসদকে অবহিত করা হয়নি। একইভাবে ভারতকে ট্রানজিট ফি মওকুফ করা হচ্ছে তাও সংসদে আসেনি। এই অবস্থায় সংসদের তুলনায় রাজপথই বিরোধী দলের আন্দোলনের প্রধান ক্ষেত্রে পরিণত হওয়া অস্বাভাবিক নয় বলেই দেশবাসী মনে করেন। তাদের সামনে যে ইস্যুগুলো রয়েছে দেশ ও জাতির অস্তিত্বের জন্য সেগুলো অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এর প্রথমটি হচ্ছে আধিপত্যবাদ। সরকার বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বকে আধিপত্যবাদের হাতে তুলে দিয়েছেন বলে দেশের বৃহত্তম জনগোষ্ঠীর ধারণা। এর প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসেবে এই সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পরপরই সেনাবাহিনীর উপর হামলা হয়েছে, আমাদের সীমান্ত রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত বিডিআর বাহিনীকে ধ্বংস করা হয়েছে। ২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পিলখানায় যত সেনা কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন নয় মাসের স্বাধীনতা যুদ্ধে শত্রু বাহিনীর হাতেও তত কর্মকর্তা নিহত হয়নি। মেধাবী ও চৌকষ এসব কর্মকর্তাকে খুন করে আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের প্রতীক সেনাবাহিনীকে পঙ্গু ও অকার্যকর করে দেয়া হয়েছে। পরিকল্পিত এই হত্যাকান্ডের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাথে ক্ষমতাসীন দলের একাধিক মন্ত্রী, এমপি গোপন বৈঠক করার তথ্য প্রমাণপত্র পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। একজন এমপি টেলিভিশন চ্যানেলে পিলখানার তিন কিলোমিটার এরিয়ার মধ্যে অবস্থিত সকল বাড়িঘর খালি করে দেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন; বিডিআর হেডকোয়ার্টার এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল এবং এভাবে এলাকায় অন্ধকার ও জনমানবশূন্য করে বিদ্রোহী ও ঘাতকদের পালিয়ে যাবার সুযোগ করে দেয়া হয়েছিল। সরকার এ ক্ষেত্রে যে ভূমিকা পালন করেছিলেন তা ছিল ন্যক্কারজনক। সরকারি তদন্ত কমিটির রিপোর্টে সরকারি ব্যর্থতার অভিব্যক্তি ফুটে উঠেছিল এবং তারা এই ষড়যন্ত্রের mastermind-দের খুঁজে বের করার জন্য অধিকতর তদন্তের সুপারিশ করেছিল। একইভাবে সামরিক বাহিনীর তদন্ত রিপোর্টেও Terms of Reference-এর ত্রুটি দেখিয়ে প্রকৃত তথ্য উ ঘাটনের সমস্যা তুলে ধরে আরো তদন্তের সুপারিশ করা হয়েছিল কিন্তু সরকার অজানা ভয়ে সে পথে আগায়নি এবং সিআইডির অবসরপ্রাপ্ত ও বশংবদ এক কর্মকর্তাকে চাকরিতে ফিরিয়ে এনে তাকে দিয়ে ফরমায়েশী তদন্তের মাধ্যমে জনগণকে ধোঁকা দেয়ার একটি নাটক মঞ্চস্থ করেন। এই তদন্তের প্রক্রিয়ায় নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে প্রায় ৯০ জন বিডিআর সদস্য প্রাণ হারান। অভিযোগ উঠেছে যে, এদেরকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। কেননা এই হত্যাকান্ডের সাথে সরকারি দল ও বিদেশী একটি শক্তির সম্পৃক্ততা সম্পর্কে তাদের কাছে তথ্য প্রমাণ ছিল। আমাদের সীমান্ত এখন অরক্ষিত। বিএসএফএর লোকদের মেহেরবানীর উপর আমাদের নির্ভর করে থাকতে হচ্ছে। তাদের ইচ্ছামত বাংলাদেশী লোকদের তারা হত্যা করছে, প্রতিবাদ করার সাহসও আমাদের নেই। তাদের ছত্রছায়ায় ভারতীয়রা এসে আমাদের জমি দখল করছে, চাষাবাদ করছে, ফসল, গরু, ছাগল নিয়ে যাচ্ছে, মাছ নিচ্ছে আমরা কিছুই করতে পারছি না। খোলা সীমান্ত দিয়ে মাদক আসছে, চরিত্র বিধ্বংসী ইয়াবা আসছে এবং আমাদের যুব সমাজ ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। চোরাচালান তথা অবৈধ সীমান্ত বাণিজ্য আমাদের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিচ্ছে, আমাদের তামাশা দেখা ছাড়া আর কোনও করণীয় নেই। বিগত কুরবানীর ঈদের সময় ভারতীয় গরুর অস্বাভাবিক সমাগম সীমান্ত এলাকায় আমাদের চাষীদের জন্য সর্বনাশ ডেকে এনেছে। তারা তাদের মোটাতাজা করা পশুর দাম পায়নি। সীমান্ত খোলা থাকায় ভারতীয় পণ্যের বন্যায় আমাদের জাতীয় অর্থনীতি এখন বিপর্যয়ের মুখে, দেশ কার্যতঃ ভারতের বাজারে পরিণত হচ্ছে। মাদকসামগ্রী ও ভারতীয় সংস্কৃতির অপপ্রভাব আমাদের জাতীয় সংস্কৃতি ও মূল্যবোধকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। মানুষ সেনা কর্মকর্তাদের প্রকৃত হত্যাকারীদের বিচার চায়, সেনাবাহিনীকে তার সার্বভৌম অবস্থানে ফিরে পেতে চায় এবং আধিপত্যবাদ থেকে মুক্তি চায়। আমরা ভারতকে বন্ধু হিসেবে দেখতে চাই, প্রভু হিসেবে নয়। বন্ধুত্বের অর্থ যে দাসত্ব নয় তাদেরকে তা বুঝিয়ে দেয়ার দরকার রয়েছে।
মহাজোট সরকারের লীড এজেন্সি আওয়ামী লীগ তার নির্বাচনী ইশতেহারে অগ্রাধিকার তালিকায় যে বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিয়েছিল তার মধ্যে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণ, আইন-শৃক্মখলা পরিস্থিতির উন্নয়ন, দুর্নীতি দমন, জ্বালানি সংকট নিরসন তথা বিদ্যুৎ-গ্যাস সরবরাহের উন্নতি, দারিদ্র্য বিমোচন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি প্রভৃতি ছিল মুখ্য। সরকারের অগ্রাধিকার বর্ণিত এই বিষয়গুলোর প্রতিটি ক্ষেত্রেই তার ব্যর্থতা সুস্পষ্ট। মানবাধিকার সংগঠনগুলো ছাড়াও সরকারের সৃষ্ট মানবাধিকার কমিশনের প্রধান নিজেই বলছেন, বাংলাদেশে এখন মানবাধিকার বলতে কিছু নেই, মানুষের জীবন ও সম্পদ, সম্মান কোন কিছুরই এখন নিরাপত্তা নেই। এই সরকারের আমলে লাম্পট্য অপ্রতিরোধ্য হয়ে পড়েছে। বখাটে লম্পটরা শুধু মেয়েদেরই শিকার বানাচ্ছে না, তাদের মা, বাবা, ভাই, বোন, দাদা, শিক্ষক প্রতিবেশী যারাই তাদের লালসা পূরণে বাধা দিচ্ছে অথবা প্রতিবাদ করছে তাদেরই নির্মমভাবে প্রহার করছে এবং কোন কোন ক্ষেত্রে মেরেই ফেলছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত করেও মেয়েদের উত্ত্যক্ত করার ঘটনা রোধ করা যাচ্ছে না। মেয়েরা শংকিত। দেশব্যাপী এই মহামারির কারণ অনুসন্ধান করে দেখা গেছে যে, এর সাথে শতকরা নববই ভাগ ক্ষেত্রে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা জড়িত। সরকার তাদের ব্যাপারে নির্লিপ্ত ও সহানুভূতিশীল। ফলে রাষ্ট্রীয়ভাবে নিরাপত্তার গ্যারান্টি নিয়ে তারা তাদের লাম্পট্য চালিয়ে যাচ্ছে। বস্তুত: যে দলের নেতাকর্মীরা ধর্ষণের ন্যায় জঘন্য অপরাধ করে প্রকাশ্যে শততম ধর্ষণের উৎসব উদযাপন করতে পারে তাদের হাতে দেশের নারী সমাজ নিরাপদ থাকতে পারে না। এই দলেরই ছাত্র সংগঠনের বালিকা শাখার নেত্রীদের বিরুদ্ধে দেহব্যবসার অভিযোগ উঠেছে। ইডেন ও বদরুন্নেছা কলেজসহ দেশের শীর্ষস্থানীয় মহিলা কলেজগুলোর ছাত্রীরা সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেছে যে, এই সংগঠনের নেত্রীরা ছাত্রনেতা-রাজনৈতিক নেতাসহ ব্যবসায়ী, শিল্পপতিদের মনোরঞ্জনে জুনিয়র ছাত্রীদের বাধ্য করে। তাদের আদেশ অমান্য করলে হল থেকে বের করে দেয় এবং শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করে। অনৈতিক কাজে ছাত্রীদের বাধ্য করার এই ঘটনাগুলো নজিরবিহীন এবং আওয়ামী লীগ সরকার অদ্যাবধি এ ব্যাপারে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। এর ফলে তাদের দাপট শুধু অপ্রতিরোধ্য হয়নি সারাদেশেও ছড়িয়ে পড়েছে এবং জনজীবনকে বিধ্বস্ত করে তুলেছে।
জনপ্রশাসন, পুলিশ প্রশাসনসহ রাষ্ট্র ব্যবস্থার সর্বত্র নির্লজ্জ দলীয়করণ বর্তমানে অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। দলীয় আনুগত্য এখন পদোন্নতি-পোস্টিং-এর প্রধান শর্তে পরিণত হয়েছে। দক্ষতা, যোগ্যতা, দেশপ্রেম, চাকরি জীবনের কৃতিত্ব ও নিরপেক্ষ আচরণ অযোগ্যতা হিসেবে এখন চিহ্নিত হচ্ছে। যারা আওয়ামী লীগ করে না, দল নিরপেক্ষভাবে জনগণের খেদমতে বিশ্বাসী তারা চিহ্নিত হচ্ছে পাকিস্তানপন্থী, বিএনপি, জামায়াতপন্থী হিসেবে। প্রধানমন্ত্রীর সংস্থাপন উপদেষ্টা এইচটি ইমাম সম্প্রতি কোনও প্রকার রাখঢাক ছাড়াই ঘোষণা করেছেন যে, জনপ্রশাসনে পাকিস্তানপন্থীরা পদোন্নতি পাবে না। আমি বাংলাদেশের নাগরিক জন্মসূত্রে, পূর্বপুরুষ সূত্রে, খাজনা, ট্যাক্স দেই এবং প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ সরকারি চাকরিতে এসেছি, খাঁটি বাংলাদেশী হিসেবে সরকারি কর্মচারীদের জন্য প্রণীত আইন ও বিধিমালা অনুযায়ী তারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী কোনও দলের নয় এবং এখানে দল করা, দলের আশ্রয় নেয়া, দলকে চাঁদা দেয়া নিষিদ্ধ। সরকার এই নিষিদ্ধ কাজে এখন উৎসাহ শুধু দিচ্ছে না যারা তা করছে তাদের পুরস্কৃতও করছে। বাংলাদেশের একজন কর্মকর্তা পাকিস্তানী হন কি করে? ভারত কর্তৃক স্থল ও নৌ ট্রানজিট ব্যবহারের জন্য ফি আদায়ের সুপারিশ করে নথিতে নোট দেয়ার জন্য, না সীমান্তে বিএসএফ কর্তৃক বাংলাদেশী নাগরিকদের পাখির ন্যায় গুলী করে হত্যা করার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করার উদ্দেশ্যে ইন্ডিয়ান হাইকমিশনারকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে ডেকে পাঠানোর প্রস্তাব করার অপরাধে? জলাতঙ্ক রোগীর ন্যায় সরকার এখন দুটি আতঙ্কের শিকার হয়ে বেসামাল হয়ে পড়েছেন বলে মনে হয়। এর একটি হচ্ছে পাকিস্তান আতঙ্ক, অন্যটি ধর্মাতঙ্ক। যে কেউ ভারতীয় আধিপত্যবাদের বিরোধিতা করবে, আওয়ামী লীগের প্রতি আনুগত্যে নিষ্ক্রিয় থাকবে অথবা নিরপেক্ষতা অবলম্বন করবে এ সরকারের দৃষ্টিতে এ দেশে থাকার এবং রাজনীতি করার তার কোনও অধিকার নেই। ক্ষমতাসীন দল নির্বাচনের আগে প্রতি পরিবারের কমপক্ষে একজনকে চাকরি দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। ক্ষমতায় এসে তারা এখন প্রকাশ্যে ঘোষণা করছেন যে, ছাত্রলীগ-যুবলীগের নেতাকর্মী ছাড়া অন্য কাউকে সরকারি চাকরি দেয়া হবে না এবং কার্যত তাই করছেন। চাকরি এখন সোনার হরিণ। ক্ষমতাসীনরা এই সুবিধাকে উপার্জনের মাধ্যম করে নিয়েছেন। কমপক্ষে ৩ লাখ টাকা না হলে প্রাইমারী স্কুলের শিক্ষকের চাকরি পাওয়া যায় না। পিয়ন দারোয়ানের চাকরিও ঘুষ না দিলে হয় না। পুলিশ কনস্টেবলের চাকরি পেতে হলে ৮/১০ লাখ টাকা লাগে। সরকারের একজন উপদেষ্টা কোনও প্রকার রাখ ঢাক না করেই ঘোষণা করেছেন, টাকা যদি নিতেই হয় নিজের লোকদের থেকেই টাকা নিয়ে চাকরি দেয়া হবে। জামায়াত বিএনপির লোকের কাছ থেকে টাকা নেয়ার দরকার কি? দেশে কর্মসংস্থানের বাজার এখন আক্রা, বিদেশের দ্বার রুদ্ধ। সরকারের অযোগ্যতা ও কূটনৈতিক অদক্ষতা জনবল রফতানির বাজারকে ধ্বংস করে দিয়েছে। জনগণ তাদের সামনে পরিত্রাণের কোনও পথ খুঁজে পাচ্ছে না। জনপ্রশাসনকে যে বিশৃক্মখল অবস্থার দিকে ঠেলে দেয়া হয়েছে তা থেকে আশু উত্তরণের সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। এ হচ্ছে বিদ্যমান প্রশাসনের অবস্থা। পাবলিক সার্ভিস কমিশন নতুন যে জনবল নিয়োগ করছে তাতেও মেধার পরিবর্তে দলীয় আনুগত্যকে প্রধান নিয়ামক হিসেবে দেখা হচ্ছে। চাকরি প্রার্থীর ছাত্রজীবনে ছাত্রলীগ করতো কি না, তার ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজনদের মধ্যে কে কোন দলের সমর্থক ছিল, বিএনপি-জামায়াত কিংবা আওয়ামী লীগের প্রতিপক্ষ অন্য কোনো দলের সমর্থক ছিল কি না এসব বিষয়কেও তুলে আনা হচ্ছে। আবার প্রার্থীরা শুধু আওয়ামী লীগ হলে হবে না। কোনো কোনো ক্ষেত্রে দেখা গেছে যে, আওয়ামী লীগ হবার পাশাপাশি যদি অমুসলিম বিশেষ একটা সম্প্রদায়ের লোক হয় তাহলে ডাবল বোনাস পাবার যোগ্য হয়। নন-গেজেটেড কর্মচারী নিয়োগের বেলায়ও সাধারণ মানুষের ছেলে-মেয়েরা বঞ্চিত হচ্ছে। আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীরা নিয়োগ পরীক্ষা হতে দিচ্ছে না, হল ভাংচুর করছে, সরকারি কর্মকর্তাদের মারধর করে পরীক্ষা ভন্ডুল করে দিচ্ছে। সরকার এ ক্ষেত্রে শুধু নির্বিকার নয়, অপরাধীদের অপরাধ কর্মের উৎসাহদাতার ভূমিকাও পালন করছে। এই প্রবণতা দিন দিন বাড়ছে।
শিক্ষাঙ্গন, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অঙ্গনে ছাত্রলীগের অপরাধ তৎপরতা দেশ-বিদেশে এখন আলোচনার বিষয়বস্তু। স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও এর নিন্দা করে এই অঙ্গ-সংগঠনটির সাংগঠনিক নেতৃত্ব থেকে পদত্যাগ করেছিলেন। একাধিক জাতীয় দৈনিক ক্ষমতাসীনদের এই ছাত্র সংস্থাটির অপকর্মের দৃষ্টান্ত ও ফিরিস্তি দিয়ে বিশেষ রিপোর্ট, প্রবন্ধ-নিবন্ধ এমনকি বিশেষ সাপ্লিমেন্টও প্রকাশ করেছে। ‘‘প্রধানমন্ত্রী, এদের সামলান’’ শিরোনাম দিয়ে সম্পাদকীয় লেখা হয়েছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় শিক্ষাবিদ-বুদ্ধিজীবীরা ছাত্রলীগের অপকর্ম রোধ এবং মারাত্মক অপরাধের সাথে সংশ্লিষ্ট নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পত্র-পত্রিকায় বিবৃতি দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর প্রতি আহবান জানিয়েছিলেন। কিন্তু লোক দেখানো দু'একটা এরেস্ট ছাড়া আর কিছু হয়নি। হত্যা, খুন, ধর্ষণ, রাহাজানি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা, টেন্ডারবাজি, দখলবাজি, ভর্তি বাণিজ্য- অনৈতিক এমন কোনও কর্মকান্ড নেই যার সাথে ক্ষমতাসীন দলের এই ছাত্র সংগঠনটির সম্পৃক্ততা নেই। তাদের কর্মকান্ডে দেশব্যাপী মানুষ ত্যক্ত-বিরক্ত। কিন্তু দেশবাসী কি দেখছে? এদের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ অথবা তাদের সংযত করার পরিবর্তে সরকার অনেক ক্ষেত্রে আইন-শৃক্মখলা বাহিনীকে তাদের বশংবদ বানিয়ে দিচ্ছে। প্রতিপক্ষের ওপর তারা সশস্ত্র হামলা করছে, তাদের পেছনে পুলিশ এসে নির্যাতিতদের এরেস্ট করছে। কোথাও ছাত্রলীগ পুলিশের অগ্রগামী বাহিনী হিসেবে কাজ করছে, আবার কোথাও পুলিশী একশানের পর ছাত্রলীগ প্রতিপক্ষের ওপর আবার হামলা করছে। প্রতিপক্ষ রাজনৈতিক দল ও ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীদের হাতে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে অস্ত্র ধরিয়ে দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র মামলা ঠুকে দেয়া হচ্ছে। পক্ষান্তরে ছাত্রলীগসহ ক্ষমতাসীন দল ও তার অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীরা দেশীয় ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্য রাজপথে মহড়া দেয়া সত্ত্বেও তাদের বিরুদ্ধে পুলিশকে কিছুই করতে দেখা যায় না। বরং সরকারকে এখানে দুটি মারাত্মক কাজ করতে দেখা যায়। এক. ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীদের পুলিশ ও আইন-শৃক্মখলা বাহিনীতে absorb করা; দুই. তাদের এই সন্ত্রাসী কর্মকান্ডকে সারাদেশে ছড়িয়ে দেয়া। অভিযোগ উঠেছে গত ২২ মাসে পুলিশসহ আইন-শৃক্মখলা বাহিনীতে যত লোক নিয়োগ করা হয়েছে তার ৯০ শতাংশ ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসী গ্রুপগুলো থেকে এসেছে। পাঠকদের নিশ্চয়ই মনে আছে যে ছাত্রলীগের কর্মকান্ডকে দেশব্যাপী ছড়িয়ে দেয়ার লক্ষ্যে তারা গত অক্টোবর মাসে ইউনিয়ন পর্যায়ে কনভেনশন অনুষ্ঠান শুরু করেছে এবং এতে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দও অংশ নিচ্ছে। অপকর্ম দোষে দুষ্ট ও স্বয়ং আওয়ামী লীগ কর্তৃক নিন্দিত ও স্বীকৃতি প্রত্যাহৃত এই সংগঠনটির নেতৃত্ব বাছাইয়ের এক প্রক্রিয়ায় অত্যন্ত হাস্যাস্পদভাবে এক সময় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর তত্ত্বাবধানে নেতৃত্ব প্রার্থীদের রক্ত ও পেশাবের বিশুদ্ধতা পরীক্ষার নিয়ম চালু করা হয়েছিল। কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। সরকার তাদের অপকর্ম প্রতিহতও করেনি বরং সারাদেশে তা ছড়িয়ে দিয়েছেন। এর অর্থ কি এ দাঁড়ায় না যে সরকারের নীল-নকশাতেই তারা কাজ করছে এবং প্রতিদ্বনদ্বীদের নির্মূলে এই অপশক্তিকে তারা অস্ত্র সজ্জিত করে ব্যবহার করছে? এখন তো অবস্থা এমন দাঁড়িয়েছে যে, যেখানে অপরাধ-অপকর্ম সেখানেই ছাত্রলীগ। তাদের সাথে এখন শিক্ষা, শিক্ষাঙ্গন ও শিক্ষার্থীর কোনও সম্পর্ক নেই। দেশ এ অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চায়।
দেশজুড়ে চলছে চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি ও সন্ত্রাস। এর সাথে যুক্ত হয়েছে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস যার সামান্য নমুনা বেগম জিয়াকে বাড়ি থেকে উৎখাতের মধ্যদিয়ে দেশবাসী দেখেছে। গুপ্ত হত্যা, পুলিশ হেফাজতে খুন, আইন-শৃক্মখলা রক্ষাকারী বাহিনীর পরিচয়ে অপহরণ ও গুম, ছিনতাই, ডাকাতি, হানাহানি, মারামারি দেশব্যাপী এখন ছড়িয়ে পড়েছে। দেশে এখন এমন সব ভয়ঙ্কর অপরাধ হচ্ছে যা ইতঃপূর্বে মানুষ শোনেনি। ইভটিজিং, নারী নির্যাতন নতুন মাত্রা পেয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের চরমপন্থী সন্ত্রাসী এবং পার্বত্য চট্টগ্রামের সশস্ত্র বিদ্রোহীরা এখন মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। হিন্দু সম্প্রদায়সহ ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু নির্যাতন অতীতের সকল রেকর্ড ভঙ্গ করেছে। মামলাবাজি নিত্যনতুন কৌশলে বন্দি নির্যাতন এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূলের সরকারি অপপ্রয়াস ও অঙ্গীকার এর আগে আর কখনো দেখা যায়নি। এর সাথে যুক্ত হয়েছে ইসলামী ও জাতীয়তাবাদী শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করার লক্ষ্যে পরিচালিত তথাকথিত যুদ্ধাপরাধ এজেন্ডা বাস্তবায়নের বিদেশী পরিকল্পনা। ধর্মকে যারা আফিম তুল্য বলে মনে করেন, স্রষ্টার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করাকে যারা জীবনের প্রধানতম লক্ষ্য বলে গ্রহণ করেছেন রাষ্ট্র পরিচালনায় তারাই এখন আওয়ামী লীগের সহযোগী হয়ে এই দেশকে ধর্মহীন করার ষড়যন্ত্রে মেতে উঠেছে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অনুষ্ঠানে যুবক-যুবতীর অশ্লীল ব্যালে নৃত্যের দৃশ্য যারা পত্র-পত্রিকায় দেখেছেন তাদের কাছে এখন পরিষ্কার যে সরকার কোন্ ধরনের ইসলাম চায়। সরকারের দৃষ্টিতে আমাদের হক্কানী আলেম উলামারা এখন গোমরাহ, ইসলামের ব্যাখ্যা করেন মদ্যপ মন্ত্রী ও সুরঞ্জিতের মত ব্যক্তিরা। তাদের দৃষ্টিতে আলেম উলামা, মাদরাসার ছাত্র, দাড়ি টুপিওয়ালা ধার্মিক ব্যক্তি মাত্রই জঙ্গি এবং এদের উৎখাত করার জন্য প্রতিবেশী দেশের সহযোগিতায় তারা একটি টাস্কফোর্সও গঠন করেছেন। এই অবস্থায় এ দেশের মুসলমানরা কি বসে থাকবেন? ধর্ম, ধর্মীয় বিশ্বাস, নীতি নৈতিকতা কোনটাই আজ এই সরকারের কাছে নিরাপদ নয়। এর নিরাপত্তা বিধানে জাতিকেই এগিয়ে আসতে হবে।
দ্রব্যমূল্য ও মানুষের জীবনযাত্রার অবস্থা তো আরো ভয়াবহ। ১০ টাকা সের চাল আর বিনা পয়সায় সার দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় যাবার দু'মাসের মধ্যেই প্রধানমন্ত্রী এই প্রতিশ্রুতি অস্বীকার করে। চাল-ডালসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যসামগ্রীর মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে মানুষের নাগালের বাইরে চলে গেছে। বিএনপি জোটের আমলে যে চালের দাম কেজি প্রতি ১৪ টাকা ছিল তা এখন অন্যূন ৩৫ টাকায় উঠেছে। আঠার টাকা কেজি দরের চাল এখন ৪৮ থেকে ৫০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। সয়াবিন তেল, রসুন, পিঁয়াজ, মসল্লা, তরিতরকারি এমন কোনও পণ্য নেই যার মূল্য তিন থেকে দশ গুণ বৃদ্ধি পায়নি। দুই শয়নকক্ষের যে ঘর ভাড়া ছিল সর্বোচ্চ ৬ হাজার টাকা তা এখন ১০ হাজার টাকায় উঠেছে। যে দূরত্বে ১০ টাকা ভাড়ায় রিকশা যেতো সে দূরত্বে এখন ত্রিশ টাকা দিতে হয়। বাস ভাড়া, ট্রেন ভাড়া, লঞ্চ ভাড়া, বিদ্যুৎ, গ্যাসের দামসহ বাড়েনি এমন পণ্য ও সেবা সামগ্রী নেই। অথচ এর তুলনায় সাধারণ মানুষের আয় ১০ শতাংশও বাড়েনি। প্রধানমন্ত্রী বিরোধী দলে থাকাকালে ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের অভিযোগ তুলে ৪ দলীয় জোট সরকার তার মেয়াদকালে ১৮৬০০০ কোটি টাকা অবৈধভাবে উপার্জন করেছে বলে অভিযোগ করেছিলেন। এখন গত ২২ মাসে তার সরকার ও দল কত লক্ষ কোটি টাকা উপার্জন করেছেন তার হিসাব দেয়ার সময় সম্ভবত এসেছে। তার মন্ত্রীরা সিন্ডিকেটের অস্তিত্ব স্বীকার করেছেন তবে তা ভাঙ্গা যাবে না বলেও জানিয়ে দিয়েছেন। এ প্রেক্ষিতে সরকারি দল ও ব্যবসায়ীদের সমন্বয়ে গঠিত সিন্ডিকেটের যাঁতাকল থেকে বেরিয়ে আসতে হলে দেশবাসীর সামনে আন্দোলন ছাড়া আর কি কোন বিকল্প আছে?
বিদ্যুৎ গ্যাসের সংকট সরকার নিরসন করতে পারেনি। নিজের অযোগ্যতা ও দুর্নীতি ঢাকার জন্য এখনো তারা জোট সরকারের ওপর দোষ চাপিয়ে দিচ্ছেন। এই খাতগুলো এখন প্রতিবেশী দেশের কব্জায় আবদ্ধ। ক্ষমতার বিনিময়ে ক্ষমতাসীনরা এমন অবস্থার সৃষ্টি করেছেন যে বাংলাদেশের গ্যাস ও কয়লা ব্যবহার করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে ভারত আমাদের দেশে বিদ্যুৎ রফতানির জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন করার প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই প্রস্তুতির আমরাও অংশীদার। জনগণ কি এ ব্যাপারে নির্লিপ্ত থাকতে পারে? বিদ্যুতের অভাবজনিত লোডশেডিং এ তাদের জীবন এখন বিপন্ন, কলকারখানার উৎপাদন বিঘ্নিত, নতুন কারখানা তৈরি বা সম্প্রসারণ প্রক্রিয়া বন্ধ, ফলে স্থানীয় ও বিদেশী বিনিয়োগ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সামষ্টিক অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি হার মারাত্মকভাবে হ্রাস পাচ্ছে এবং বেকার সমস্যা চরম আকার ধারণ করেছে। সরকার এ ক্ষেত্রে নির্লিপ্ত। কাজেই পরিত্রাণের উপায় দেশবাসীকেই বের করতে হবে।
এই সরকারের দুর্নীতি দমন তৎপরতা সম্পর্কে যত কম বলা যায় ততই মঙ্গল। সরকারের এমন কোনও খাত নেই যেখানে এখন দুর্নীতি নেই। এ ব্যাপারে বদরুদ্দীন ওমরের একটি কথা প্রণিধানযোগ্য। তিনি বলেছেন, সমাজে আজ যেভাবে সব ধরনের দুর্নীতির বিস্তার ঘটেছে রন্ধ্রে রন্ধ্রে দুর্নীতি তার শেকড় বিস্তার করেছে এর মূল কারণ ১৯৭২ সাল থেকে সরকারি পর্যায়ে ও সরকারের লোকজনদের দ্বারা ঘটতে থাকা দুর্নীতি, ১৯৭২ সালে সরাসরি লুটপাট দিয়ে শুরু হলেও ক্রমেই তা প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে। লুটপাট এখন বাংলাদেশে এক সুসংগঠিত ব্যাপার। লুটপাটকে দায়মুক্তি দিয়ে এই সরকার পার্লামেন্টে আইনও করেছে। বলাবাহুল্য, ৭২ সালের সরকার আর বর্তমান সরকার একই দলের ও চরিত্রের সরকার। বৃটিশ রাজ পরিবারের রাজা বা রাণী ছাড়া আর কারুর দায়মুক্তি নেই কিন্তু আমাদের দেশে আছে বলে মনে হয়। প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবারের সদস্যদের দুর্নীতির কথা বলা এখানে মহাপাপ। বললে মানহানির মামলা হয়। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা হলে তার বিচার হয় না, তা প্রত্যাহার হয়ে যায়। এই অবস্থায় দেশ যদি দুর্নীতির আখড়া না হয়, তাহলে কি হবে? দেশের মানুষ যদি তা না চান তাহলে পথে নামা ছাড়া বিকল্প কিছু আছে বলে মনে হয় না।