Flickr

Tuesday, 30 September 2014

পার্বত্য চট্টগ্রামে দেশবিরোধী অপতৎপরতা

Posted by   on

পার্বত্য চট্টগ্রামে দেশবিরোধী অপতৎপরতা
আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামে তথাকথিত মানব সেবার নামে কর্মরত এনজিওগুলোর ওপর ক্ষমতাসীন আওয়ামী সরকারের কোনো প্রকারের নিয়ন্ত্রণ না থাকার কারণে এক শ্রেণীর চিহ্নিত এনজিও ধর্মান্তরিতকরণসহ নানা ধরনের রাষ্ট্রদ্রোহী কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে। দেশ ও জাতি বিরোধী অপরাধ কর্মকান্ডের সাথে জড়িত অন্তত চারটি এনজিও সম্পর্কে ইতোপূর্বে সরকারকে বারবার অবহিত করা সত্ত্বেও ঐ সবের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা কোন রহস্যজনক কারণে কোনো আইনানুগ কার্যব্যবস্থা গ্রহণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। ঐসব এনজিও নামধারী আন্তর্জাতিক অপরাধী চক্র আগের মতোই তাদের অপরাধকর্ম চালিয়ে যাচ্ছে। বিগত চার বছর ধরে পত্র-পত্রিকায় প্রকাশিত খবরাখবরে জানা গেছে, সরকারের অনেক দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় দেশ ও জাতিবিরোধী অপরাধকর্মের সাথে সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকটি এনজিও সম্পর্কে বর্তমান সরকারের কাছে বহু রিপোর্ট দিয়েছে। অথচ অভিযুক্ত এনজিওগুলো আগের মতো এখনো পার্বত্য তিন জেলার পাহাড়ী-উপজাতি, সশস্ত্র সন্ত্রাসবাদী ও বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলোকে উস্কে দেয়া, ধর্মান্তরিতকরণে সহযোগিতা দেয়া, অস্ত্র ও মাদক চোরাচালানে সহযোগিতা দেয়া, নানা ধরনের অস্ত্র ক্রয়ে কোটি কোটি টাকা যোগান দেয়া এবং পাহাড়ের গভীর অরণ্যে অস্ত্র চালনা ও নানা ধরনের নাশকতামূলক কর্মতৎপরতা এবং নৈরাজ্যকর পরিবেশ পরিস্থিতি সৃষ্টি করার অপতৎপরতা চালিয়ে যাচ্ছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখন্ডতা নস্যাতে এবং নিরাপত্তা, শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিনষ্টে লিপ্ত রয়েছে বলে গোয়েন্দা রিপোর্ট সরকারের কাছে অসংখ্যবার দাখিল করা হয়েছে। খবরে আরো উল্লেখ করা হয়েছে, সে সকল এনজিওর বিরুদ্ধে বারবার তদন্ত হওয়ার পর সেসবের বিরুদ্ধে দেশ ও জাতি বিরোধী কাজে জড়িত থাকার অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ পাওয়া গেলেও সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতর থেকে কোনো আইনানুগ কার্যব্যবস্থা নেয়া হয়েছে, এমন প্রমাণ পাওয়া যায় না। প্রকাশিত খবরে এ-ও জানা গেছে, পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক সংসদীয় কমিটি পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন পার্বত্য জেলায় কর্মরত এনজিওগুলোর কার্যকলাপ বিশেষ নজরে রাখার জন্য আইন-শৃক্মখলা বাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেয়ার পরও সরকার এনজিওগুলোর কাজের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করেনি। দেশপ্রেমিক সচেতন মহলের আশঙ্কা, এনজিওগুলোর দেশবিরোধী তৎপরতা প্রতিহত করার পাশাপাশি এনজিও কার্যক্রমের স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা না গেলে পার্বত্য চট্টগ্রামে সশস্ত্র সন্ত্রাস, বিশৃক্মখলা, অস্থিতিশীলতা ও রক্তাক্ত সহিংসতায় বিপর্যয়কর রূপ নিতে পারে।
পার্বত্য চট্টগ্রামের তিন জেলায় ছদ্মবেশে খৃস্টধর্মের প্রচার ও প্রতিষ্ঠায় খৃস্ট সাম্প্রদায়িক সশস্ত্র সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা, বিচ্ছিন্নতাবাদী তৎপরতার বিস্তার, রক্তাক্ত সাংঘর্ষিক পরিস্থিতির সৃষ্টি, বাংলাভাষী জনগণকে বিতাড়ন ইত্যাদির মতো অপতৎপরতা বেশ কয়েক বছর ধরেই চলছে। সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসবাদী অপশক্তিগুলো সেই বৃটিশ ঔপনিবেশিক আমল থেকেই পার্বত্য চট্টগ্রামের দরিদ্র উপজাতীয়দের খৃস্টধর্মে দীক্ষিত করার দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করে। ঐ অঞ্চলে একটি খৃস্ট রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠাই ছিল তাদের পরিকল্পনার মূল লক্ষ্য। তাদের এই লক্ষ্য অর্জনে পরিচালিত ‘খৃস্টান মিশনারী কার্যক্রম' প্রাথমিক পর্যায়ে ততোটা সফল না হলেও পরবর্তীতে অনেক উপজাতীয় ধর্মান্তরিত হয়ে খৃস্টান হয়ে গেছে। এই বাস্তবতায় খৃস্টরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সম্পর্কিত পরিকল্পনার বাস্তবায়ন জোরদার হয়েছে। অপরদিকে উপজাতীয়দের একাংশ এক সময় বাইরের কয়েকটি দেশের প্ররোচণায় পার্বত্য চট্টগ্রাম কেন্দ্রিক জুম্মরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য সশস্ত্র গেরিলা যুদ্ধের পথ বেছে নেয়। তথাকথিত শান্তিবাহিনী নামের আড়ালে এই সশস্ত্র বিচ্ছিন্নতাবাদীরা বাঙালিদের অপহরণ, হত্যা, খুন, গুম, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, ছিনতাই, ডাকাতি, লুটপাট, জ্বালাও পোড়াও এবং নাশকতার তান্ডব সৃষ্টি করে। ১৯৯৬ সালে শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরের পরও ভেতরে ভেতরে এই সন্ত্রাসবাদী তৎপরতা এখনো চালু রয়েছে। চুক্তির পক্ষে ও বিপক্ষে উপজাতীয়দের দুটি গ্রুপের জন্ম হলেও এবং তাদের মধ্যে সংঘাত-সংঘর্ষ অব্যাহত থাকলেও লক্ষ্যগত দিক থেকে তাদের মধ্যে খুব তেমন একটা পার্থক্য দেখা যায় না। তারা উভয় পক্ষই বাঙালিমুক্ত এবং উপজাতীয়দের একচ্ছত্র ক্ষমতা ও অধিকার নিয়ন্ত্রিত পার্বত্য চট্টগ্রাম চায়। ওদিকে গোটা পার্বত্য চট্টগ্রামে পশ্চিমা খৃস্ট সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসবাদী অপশক্তিগুলোও এখন আওয়ামী সরকারের আমলে খুবই সক্রিয় ও তৎপর। এই অপশক্তিদের বিপুল পরিমাণের অর্থায়নে পরিচালিত এনজিওগুলো তাদের হয়েই কাজ করে যাচ্ছে। এসব এনজিও একদিকে উপজাতি হিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের ধর্মান্তরিত করে খৃস্টান বানাচ্ছে এবং অপরদিকে সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলোকে বিচ্ছিন্নতাবাদের মদদ দিচ্ছে। শুধু দেশী-বিদেশী এনজিও নয়, ইউএনডিপির মতো সংস্থার বিরুদ্ধেও তথাকথিত সেবা ও উন্নয়নের নাম করে উপজাতি হিন্দু বৌদ্ধ ধর্মের নারী-পুরুষদের ধর্মান্তরিত করে খৃস্টান বানাচ্ছে। উল্লেখ্য যে, ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব তিমুর এবং সুদানের দক্ষিণ অংশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে দুটি খ্রিস্টরাষ্ট্র। অপশক্তিগুলোই আমাদের পার্বত্য চট্টগ্রামকেও পূর্ব তিমুর বা দক্ষিণ সুদান বানানোর অপচেষ্টা যে করছে, তা আর বাড়িয়ে বলার প্রয়োজন নেই। পার্বত্য চট্টগ্রাম আমাদের বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। আমাদের রাষ্ট্রীয় অখন্ডতা ও সার্বভৌমত্ব সুরক্ষায় এবং নিরাপত্তা বিধানে, শান্তি ও সুস্থিতি নিশ্চিতকরণে তথাকথিত ‘জুম্মরাষ্ট্র' কিংবা খ্রিস্ট সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাসবাদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পশ্চিমা অপশক্তির সকল অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে। আর যে সব সশস্ত্র সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী নির্বাধায়-নির্বিচারে অপহরন, হত্যা, খুন, গুম, ডাকাতি, ছিনতাই, চাঁদাবাজি, সন্ত্রাস, নাশকতাসহ বিচ্ছিন্নতাবাদী অপতৎপরতার সাথে যুক্ত সেসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে আইনানুগ কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। নাগরিক নিরাপত্তা বিধানে, শান্তি-শৃক্মখলা ও সুস্থিতি নিশ্চিতকরণে আইন-শৃক্মখলা বাহিনীসহ রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বাহিনীর সংখ্যা বৃদ্ধি করে শতভাগ উপস্থিতি ও নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে হবে। দেশের এক ইঞ্চি ভূমিও অরক্ষিত অবস্থায় ফেলে রাখা যাবে না। দেশের এক দশমাংশ ভূখন্ড নিয়ে যে চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র চলছে তা সত্যিই ভয়ংকর। তাই রাষ্ট্রের পক্ষে এখনোই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। একই সাথে বাঙালি ও উপজাতীয়দের মধ্যে সুসম্পর্ক, সম্প্রীতি ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান নিশ্চিত করার পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সামাজিত, সাংস্কৃতিক এবং ধর্মীয় সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানগুলো এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। রাষ্ট্রীয় ও বেসরকারি পৃষ্ঠপোষকতায় তাদের সেবা, উন্নয়ন ও কল্যাণমূলক কার্যক্রমে বাঙালি-উপজাতীয় সবাই উপকৃত হতে পারে বলেই আমাদের বিশ্বাস।

No comments:
Write comments
Hey, we've just launched a new custom color Blogger template. You'll like it - https://t.co/quGl87I2PZ
Join Our Newsletter