Flickr

Thursday, 2 February 2012

মূল্যস্ফীতি এখন দেশের জন্য বড় সমস্যা

Posted by   on

কোনোভাবেই বাগে আনা যাচ্ছে না মূল্যস্ফীতিকে। মূল্যস্ফীতি এখন দেশের জন্য বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। অনেক চেষ্টা করেও সরকার এর লাগাম টেনে ধরতে পারছে না। অথচ এটা সরকারের নির্বাচনী অঙ্গীকারের মধ্যে ছিল। গত বছরের ডিসেম্বরের চেয়ে জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি বেশ বেড়েছে। ডিসেম্বরে মূল্যস্ফীতি ছিল ১০.৬৩%। আর জানুয়ারিতে মূল্যস্ফীতি এসে দাঁড়িয়েছে ১১.৫৯%_এ । বিশেষজ্ঞদের মতে গত বছরের ডিসেম্বরে জ্বালানি তেলের দাম দুই দফা বাড়ানোর ফলে এ প্রভাব পড়েছে। ফলে মূল্যস্ফীতির সঙ্গে পাল্লা দিতে পারছে না দেশের সীমিত আয়ের সাধারণ মানুষ। তাদের আয় যত বেড়েছে তার তুলনায় ব্যয় বেড়েছে অনেক বেশি। অথচ সরকার অনেকটা অসহায়ের মতো হাল ছেড়ে বসে আছে। আমাদের প্রশ্ন এ ক্ষেত্রে সরকারের কি কিছুই করণীয় নেই। উচ্চ মূল্যস্ফীতির বিপরীতে সরকারের পক্ষ থেকে আয় বাড়ানোর ব্যাপারে নানা বক্তব্য রাখা হলেও সরকারি পরিসংখ্যানেই পাওয়া যাচ্ছে উল্টো চিত্র। বিগত পাঁচ বছরে মানুষের আয় বেড়েছে ৫৯.৩৮%। আর জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়েছে ৮২.৫৯%। যা রীতিমতো উদ্বেগজনক। বাজারে ইতোমধ্যে নতুন করে বেশকিছু পণ্যের দাম বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে ডিম, মুরগি, পেঁয়াজ ও শাকসবজির দাম অনেক বৃদ্ধি পেয়েছে। গরম শুরু হলে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করবে। মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাচ্ছে অথচ প্রবৃদ্ধি অর্জন সন্তোষজনক হচ্ছে না। এটা আমাদের দেশের অর্থনীতির জন্য একটি সতর্ক-সঙ্কেত।

 মূল্যস্ফীতি বাড়ার প্রবণতা খাদ্যদ্রব্যের ক্ষেত্রেই বেশি দেখা যাচ্ছে। দ্রব্যমূল্য যে হারে বাড়ছে তাতে আগামীতে এ মূল্যস্ফীতির হার কোথায় গিয়ে ঠেকে তা বলা কঠিন। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে সরকারের কোনো পদক্ষেপই ফলপ্রসূ হচ্ছে না। মূল্যস্ফীতির কারণে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সমাজের স্বল্প আয়ের মানুষ। বিশেষ করে খাদ্যসূচকে মূল্যস্ফীতি ঘটলে সমাজের দরিদ্ররাই বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জিনিসপত্রের দাম বাড়লেও নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের আয় বাড়েনি। ফলে তারা বাধ্য হচ্ছে আগের চেয়ে কম খেয়ে জীবনযাপন করতে। কেউ কেউ অনাহারে-অর্ধাহারেও দিন কাটাচ্ছে। অথচ সরকারের পক্ষ থেকে বারবার বলা হচ্ছে দেশের মানুষ আগের চেয়ে অনেক ভালো আছে।


  
আমরা মনে করি মূল্যস্ফীতি স্থিতিশীল বা কমিয়ে আনার ব্যাপারে এখনই যদি উদ্যোগ না নেয়া হয় তাহলে সীমিত আয়ের মানুষের টিকে থাকা বড় কঠিন হয়ে যাবে। আমাদের প্রত্যাশা, সরকার স্বল্প আয়ের মানুষের কথা বিবেচনা করে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ব্যবস্থা নেবে।

 দ্রব্যমূল্য ও কর্মসংস্থান এ দুটিই এখন দেশের সবচেয়ে আলোচিত বিষয়। দুটি বিষয় আবার একটি আরেকটির সঙ্গে জড়িতও। দ্রব্যমূল্য বাড়ার অনুপাতে যদি মানুষের আয় বাড়ত এবং পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান সৃষ্টি হতো তাহলে মানুষকে এতটা ভোগান্তিতে পড়তে হতো না।

 মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষকে এখন লড়তে হচ্ছে নিজের ও পরিবারের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে। বেকারত্ব বেড়ে যাওয়ায় পরিবার ও সমাজে এক ধরনের ক্ষোভ, হতাশা ও অনিশ্চয়তা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। অন্য দিকে বেড়ে যাচ্ছে নানা ধরনের সামাজিক অপরাধ।

 একটি দেশে ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ মানুষ বেকার অবস্থায় থাকলে সমাজ ও পরিবারে অস্থিরতা এবং হতাশা ব্যাপক পরিমাণে দেখা যায়। এর ফলে দেশের উন্নয়নই শুধু বাধাগ্রস্ত হয় না, পারিবারিক ও সামাজিক স্থিতিশীলতাও বিনষ্ট হয়। এ বিশাল সংখ্যক জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগাতে না পারলে দেশের অর্থনৈতিক সঙ্কট কমবে না বরং আরো বাড়বে।
এ মুহূর্তে সরকারের উচিত কর্মসংস্থান সৃষ্টির দিকে গুরুত্ব সহকারে নজর দেয়া। সরকার যেহেতু দ্রব্যমূল্য কমাতে পারছে না তাই মানুষ যাতে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্য কিনে খেতে পারে সে ব্যবস্থা সরকারকে করতে হবে। আমরা আশা করব, দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটাতে সরকার আন্তরিক প্রচেষ্টা চালাবে।

No comments:
Write comments
Hey, we've just launched a new custom color Blogger template. You'll like it - https://t.co/quGl87I2PZ
Join Our Newsletter