Flickr

Wednesday, 6 June 2012

রুমির নৃশংস হত্যাকান্ড অনেক প্রশ্নই রেখে গেল

Posted by   on

রুমির নৃশংস হত্যাকান্ড অনেক প্রশ্নই রেখে গেল
রাজধানীর পরীবাগে নাহার প্লাজায় তরুণী রুমিকে হত্যার নৃশংস বর্ণনা দিতে গিয়ে ঘাতক সাইদুজ্জামান বাচ্চু বলেন, ‘রুমিকে গলাটিপে হত্যার পর সারারাত ধরে আমার অফিসে বসেই লাশ টুকরো টুকরো করি। নাড়ি-ভুঁড়িগুলো বাথরুমের কমোডে ফেলে দেই। তবে চর্বি ও রক্তাক্ত মাংসপিন্ড ভেসে ওঠায় বার বার ফ্লাস করতে হয়েছিল। জানালার ফাঁক দিয়ে মাথাটি বাইরে ফেলে দেয়া যাচ্ছিল না। পরে চাপাতি দিয়ে কেটে মাথাটি ছোট করতে বাধ্য হই।' ঢাকা মহানগর পুলিশের মিডিয়া সেন্টারে গত রোববার উপস্থিত সাংবাদিকসহ পুলিশের অনেক কর্মকর্তাই ঘাতকের এমন বর্ণনা শুনে শিউরে ওঠেন।
শুধু সাংবাদিক ও পুলিশই নয়, যে কোনো সুস্থ মানুষই রুমির নৃশংস হত্যার বর্ণনা শুনলে শিউরে উঠবেন। বন্য পশুও মানুষকে এত নৃশংসভাবে হত্যা করতে পারে না। অথচ আলোঝলমলে রাজধানীর ব্যস্ত বাণিজ্য পাড়ায় কী নির্বিকারভাবে হত্যা করা হলো তরুণী রুমিকে। আর হত্যাকারী কোনো পশু নয়, একজন মানুষ! এমন মানুষকেই বোধহয় বলা হয় নরাধম, নরপিশাচ! এমন নরাধমকে নিন্দা করার মত ভাষা আমাদের জানা নেই। রুমির নৃশংস হত্যাকান্ডের ঘটনায় আমাদের সামাজিক অবক্ষয়ের চিত্র আরেকবার স্পষ্ট হয়ে উঠলো। সমাজে মূল্যবোধ ও নৈতিকতার অবনতি না হলে এমন ঘটনা ঘটতে পারতো না। নৈতিকতার অবনতি হলেও আইন-শৃক্মখলার প্রতি সমীহ থাকলে মানুষ এমন নৃশংস ঘটনা ঘটাতে ভয় পেত। কিন্তু নানা কারণেই আমাদের আইন-শৃক্মখলা বাহিনী তাদের ইমেজ রক্ষা করতে সমর্থ হয়নি। আর অপরাধীদের মনে এমন ধারণা স্থির হয়ে গেছে যে, অর্থ ও রাজনৈতিক মদদের গুণে অপরাধ করেও সহজে পার পাওয়া যায়। এই বিষয়টি অপরাধীদের বেশ বেপরোয়া করে তুলেছে। জানি না আমাদের সরকার ও প্রশাসন আইন-শৃক্মখলা পরিস্থিতির উন্নয়নে কী পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। তবে সামাজিক বিপর্যয় রোধে বড় বড় বুলির বদলে তাদের যে কার্যকর কিছু করা প্রয়োজন, সেই বিষয়টি আলোচ্য ঘটনার পর আরও স্পষ্ট হয়ে উঠেছে।
রুমি হত্যার ঘটনায় মোবাইল ফোনের অপব্যবহার এবং তরুণ-তরুণীদের অবাধ মেলামেশার মন্দ দিকটি আবারো স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। আমাদের ধর্মে কেন এই বিষয়গুলোকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে তার যৌক্তিকতা কি আমরা এখনো উপলব্ধি করতে পারবো না? মোবাইলের অনাকাঙ্ক্ষিত আলাপন তাদের কোথায় নিয়ে গেল? রিপুর তাড়নায় পথভ্রষ্ট এক তরুণের আহবানে দায়িত্বহীনভাবে এগিয়ে গেল এক এক তরুণী। ধর্মীয় বিধিনিষেধকে কোনো গুরুত্বই দিল না তারা। যার পরিণামে ঘটলো ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা। ঘাতকের জন্যও হয়তো অপেক্ষা করছে কঠিন দন্ড। এমন পরিণাম কি কারো কাম্য হতে পারে? আর এই জন্যই কি মানুষের জন্ম? বিষয়টি নিয়ে যে শুধু সরকার ও সমাজবিজ্ঞানীরাই ভাববেন তা নয়, ভাবতে হবে প্রতিটি পরিবারকে এবং প্রতিটি মানুষকে। তাহলেই হয়তো রোখা যাবে সামাজিক অবক্ষয়ের অনাকাঙ্ক্ষিত ধারা।

No comments:
Write comments
Hey, we've just launched a new custom color Blogger template. You'll like it - https://t.co/quGl87I2PZ
Join Our Newsletter