Flickr

Wednesday, 12 September 2012

বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি ও নিম্নআয়ের মানুষ

Posted by   on


বিদ্যুতের যে পরিমাণ চাহিদা তার সঙ্গে লোডশেডিং ও দাম বৃদ্ধি কতটুকু যুক্তিযুক্ত এবং তা কীভাবে সরকার সামাল দিতে পারবে এই বিষয়ে ভেবে কার্যকর পদক্ষে নিতে হবে। একবিংশ শতাব্দীর এই সময়ে উৎপাদনশীল সব প্রতিষ্ঠানসহ মানুষের প্রাত্যহিক জীবনের সঙ্গে মিশে গেছে বিদ্যুতের প্রয়োজন বা চাহিদা। তাই দেশের সার্বিক উন্নতির ক্ষেত্রে এর জোগান বা সুষম বণ্টন যে অত্যন্ত প্রয়োজনীয় ও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এই বিষয়ে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বিভিন্ন রকম সমস্যার কারণে লোডশেডিং, উচ্চমূল্যে বিদ্যুৎ সুবিধা ইত্যাদির কারণে এখনো ভোগান্তির শেষ নেই।

 সম্প্রতি জানা গেল আবারো এক দফা বেড়েছে বিদ্যুতের দাম। আর খুচরা গ্রাহক পর্যায়েই বেড়েছে ২৬ থেকে ৩০ শতাংশ। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর এবার নিয়ে ৬ষ্ঠবারের মতো দাম বাড়ল। দাম বাড়ার কারণ হিসেবে যদিও বিইআরসি জানিয়েছে তেলভিত্তিক উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় এবার দাম বৃদ্ধি হলো। একে তো বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষই নিম্ন আয়ের, তার ওপর সব কিছুর সঙ্গেই জড়িয়ে গেছে বিদ্যুতের ব্যবহার, এমন অবস্থায় খুচরা গ্রাহকদের বিলই যদি ২৬ থেকে ৩০ শতাংশ বেড়ে যায় তবে তা উৎকণ্ঠার বিষয়। আর এর সঙ্গে সঙ্গে যতই বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হোক না কেন তাই বলে বিদ্যুতের নিশ্চয়তা বা জোগান দিতে বরাবরই তৈরি হচ্ছে নানারকম সমস্যা। দেশজুড়ে আরো ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের আশঙ্কা রয়েছে। বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডও বলেছে রমজান মাসের তুলনায় এই মাসে ১০০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কম হবে। কারণ রমজান মাসে যে ভর্তুকি দেয়া হয়েছিল তা এই মাসে তুলে নেয়া হয়েছে। এমন অবস্থায় দিন দিন বিদ্যুতের চাহিদা যে হারে বাড়ছে তাতে করে ভর্তুকি কমিয়ে দাম বাড়ালেও এ মাসে যে ভয়াবহ লোডশেডিং হবে তার আশঙ্কা বিদ্যমান। কারণ বেশকিছু বিদ্যৎকেন্দ্র বন্ধ রেখেছে পিডিবি। এতে করে বিতরণ কোম্পানিগুলো বাধ্য হয়েই লোডশেডিং করছে। প্রসঙ্গত একটি ব্যাপার উল্লেখ্য যে, এর আগেও যেমন বিদ্যুতের দাম বেড়েছে এবারো তেমনই বাড়ল কিন্তু দাম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সেবার কোনো পরিবর্তন হয়নি। সরকার চেষ্টা করেছে বিদ্যুতের উন্নয়নের জন্য কিন্তু বাস্তবায়নে তৈরি হয়েছে নানারকম প্রতিবন্ধকতা। আর এটা অনেকেই বলেছেন বিদ্যুতের এইসব সমস্যা সমাধানের জন্য কুইক রেন্টাল পদ্ধতি সমাধান নয়, এমন কিছু পদক্ষেপ নিতে হবে যাতে করে স্থায়ী সমাধান হয়। এটা ঠিক যে শুরু থেকেই সরকারের উচিত ছিল কুইক রেন্টাল পদ্ধতিতে না গিয়ে ভর্তুকির বিষয়টি বিবেচনায় এনে স্থায়ী সমাধান করার পদক্ষেপ নেয়া। এই বিষয়ে জ্বালানি বিশেষজ্ঞরাও বলেছেন অর্থ লুটপাটের উদ্দেশ্যে সরকারের কর্তাব্যক্তিরা সে পদক্ষেপ নেয়নি। বাস্তবতার আলোকে সরকারকে দাম বাড়ানো লাগতেই পারে কিন্তু এর সঙ্গে সঙ্গে দেখতে হবে সমন্বয়ের বিষয়টিও। এবার এই ৬ষ্ঠবারের মতো দাম বাড়া নিয়ে বিইআরসির চেয়ারম্যান বলেছেন, বাস্তবতার আলোকে দাম বাড়াতে হচ্ছে এবং আমরা নিম্নআয়ের মানুষের বিষয়টি নিয়েও কাজ করছি।
  
আমরা মনে করি বিদ্যুতের যে পরিমাণ চাহিদা তার সঙ্গে লোডশেডিং ও দাম বৃদ্ধি কতটুকু যুক্তিযুক্ত এবং তা কীভাবে সরকার সামাল দিতে পারবে এই বিষয়ে ভেবে কার্যকর পদক্ষে নিতে হবে। সর্বোপরি পরিস্থিতি বিশ্লেষণ করে সরকারের এমন পদক্ষেপ নিতে হবে যেন সবারই বিদ্যুৎ সুবিধার নিশ্চয়তা থাকে। আর নিম্নআয়ের মানুষকেও বিবেচনায় এনে সরকার বিদ্যুৎ উন্নয়নে একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেবে আমরা এমনটাই আশা করি।

No comments:
Write comments
Hey, we've just launched a new custom color Blogger template. You'll like it - https://t.co/quGl87I2PZ
Join Our Newsletter