স্বাধীনতার আগে রাজনীতি ছিল নীতি ও কর্মসূচিনির্ভর। মুক্তিযুদ্ধের আগে আওয়ামী লীগ, ন্যাপ প্রভৃতি বড় দলে রাজনীতিতে ছিল নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের সমন্বয়। ১৯৭২-এ জাসদ গঠিত হওয়ার সময় থেকে রাজনীতিতে ক্যাডারনির্ভরতা শুরু হয়।
কোনো দলে কর্মী ও সমর্থক এক জিনিস আর ক্যাডার আরেক জিনিস। বাংলাদেশে যারা গত ৪০ বছর ধরে ক্ষমতায় আছেন, সামরিক শাসকই হোন আর বেসামরিক নির্বাচিত সরকারই হোন, সবাই অতিমাত্রায় ক্যাডারদের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন।
দলকে ক্ষমতায় নিতে এবং দলকে ক্ষমতায় রাখতে ক্যাডাররা নানা রকম ত্যাগ স্বীকার করে। তাদের কেউ কেউ জীবন পর্যন্ত দেয় এবং শীর্ষ নেতারাও জনসমর্থনের পরোয়া না করে ক্যাডারদের ওপরই নির্ভর করেন। এর ফলে ক্যাডারদের দৌরাত্ম্য সবকিছু ছাড়িয়ে যায়। তারা চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, অন্যায়-অত্যাচার প্রভৃতিতে লিপ্ত হলেও দলের শীর্ষ নেতারা নিশ্চুপ থাকেন। তারা দেখেও না দেখার ভান করেন। ২০০৯ সালে মহাজোট সরকার বিপুল জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসে। তারা জনসমর্থনের মর্যাদা না দিয়ে ক্যাডারদের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভর করতে থাকেন। ফলে তাদের দলীয় মাস্তান এবং অঙ্গসংগঠনগুলোর একশ্রেণির কর্মী সীমাহীন অনাচারে লিপ্ত হয়। টেন্ডারবাজি, জবরদখল প্রভৃতি অপ্রতিহতভাবে করতে থাকে। সরকার তাদের অবৈধ রোজগারের ব্যবস্থা করে দেয়।
ধীরে ধীরে তারা এতটাই শক্তিশালী হয়ে উঠে যে, কেন্দ্রীয় নেতাদের আদেশ-নির্দেশ অগ্রাহ্য করতে তাদের বিন্দুমাত্র বাধে না। এখন তাদের নিয়ন্ত্রণ করা দলের নেতাদের পক্ষে অসম্ভব। সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর নির্ভর করছে তাদের দলীয় দুষ্কৃতকারীদের আইনবহির্ভূতভাবে দমন করতে। তারা ক্রসফায়ার, বন্দুকযুদ্ধ ইত্যাদির মাধ্যমে কিছু কিছু দলীয় দুর্বৃত্তকে শেষ করতে চাইছে। কিছু মানুষ এতে সরকারকে বাহবা দেবে। তাতে সরকার আরো উৎসাহবোধ করবে ক্রসফায়ারে। কিন্তু সমস্যাটা দীর্ঘস্থায়ী।
অস্থায়ী ভিত্তিতে দুষ্কৃতকারীদের দমন করায় কোনো সুফল বয়ে আনবে না। ক্রসফায়ারে যারা নিহত হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে থানায় ও এলাকায় বহু অভিযোগ রয়েছে। সরকারের উচিত আইনের শাসন ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে অপরাধের দ্রুত বিচার করে কঠোরতম শাস্তি দেওয়া। বর্তমানে যত রকমের সন্ত্রাস হচ্ছে, তার প্রায় সবই সরকারি দলের ক্যাডার ও তাদের অঙ্গসংগঠনের লোকরাই করছে। সবচেয়ে সহজ পথ হলো দলীয়ভাবে তাদের সন্ত্রাসীদের অপকর্ম করা থেকে বিরত করা। সেটা করলে আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিপজ্জনক পথে যাওয়া প্রয়োজন হবে না। তা যদি আওয়ামী লীগ নেতারা করতে না পারেন তাহলে তারা আর যা করতে পারেন তা হলো থানা ও আদালতকেই স্বাধীনভাবে ব্যবস্থা নিতে বলা। তখন গ্রেপ্তার করে অপরাধীকে শাস্তি দিলেই সন্ত্রাস কমে যাবে।
যদি ক্রসফায়ার করে সন্ত্রাসী তৎপরতা কমানো যেত, সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হতো তাহলে এ পর্যন্ত বন্দুকযুদ্ধে যত মানুষ মারা গেছে, এত মৃত্যুর প্রয়োজন হতো না। দু-চারজন মারা যাওয়ার পরই সন্ত্রাসীরা ভালো হয়ে যেত। এখন যে সরকারি দলের কিছু কিছু ক্রসফায়ারে দেওয়া হচ্ছে, এতে পরিস্থিতির উন্নতি তো হবেই না, যা হবে তা হলো, নিজেদের দলীয় কোন্দল ও হিংসা বিদ্বেষ আরো বেড়ে যাবে।
এলাকায় ক্রসফায়ারে একজন মারা গেলে কয়েকজন মারা যাবে নিজেদের মধ্যে কোন্দলে। সুতরাং সরকারকে এই পথ থেকে সরে এসে আইনের শাসনের পথেই থাকতে হবে। ক্রসফায়ার শুরু করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকার, বিপ্লবী নেতা সিরাজ সিকদারকে ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে গুলি করে হত্যা করা হয়।
কোনো দলে কর্মী ও সমর্থক এক জিনিস আর ক্যাডার আরেক জিনিস। বাংলাদেশে যারা গত ৪০ বছর ধরে ক্ষমতায় আছেন, সামরিক শাসকই হোন আর বেসামরিক নির্বাচিত সরকারই হোন, সবাই অতিমাত্রায় ক্যাডারদের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন।
দলকে ক্ষমতায় নিতে এবং দলকে ক্ষমতায় রাখতে ক্যাডাররা নানা রকম ত্যাগ স্বীকার করে। তাদের কেউ কেউ জীবন পর্যন্ত দেয় এবং শীর্ষ নেতারাও জনসমর্থনের পরোয়া না করে ক্যাডারদের ওপরই নির্ভর করেন। এর ফলে ক্যাডারদের দৌরাত্ম্য সবকিছু ছাড়িয়ে যায়। তারা চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, অন্যায়-অত্যাচার প্রভৃতিতে লিপ্ত হলেও দলের শীর্ষ নেতারা নিশ্চুপ থাকেন। তারা দেখেও না দেখার ভান করেন। ২০০৯ সালে মহাজোট সরকার বিপুল জনসমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় আসে। তারা জনসমর্থনের মর্যাদা না দিয়ে ক্যাডারদের ওপর অতিমাত্রায় নির্ভর করতে থাকেন। ফলে তাদের দলীয় মাস্তান এবং অঙ্গসংগঠনগুলোর একশ্রেণির কর্মী সীমাহীন অনাচারে লিপ্ত হয়। টেন্ডারবাজি, জবরদখল প্রভৃতি অপ্রতিহতভাবে করতে থাকে। সরকার তাদের অবৈধ রোজগারের ব্যবস্থা করে দেয়।
ধীরে ধীরে তারা এতটাই শক্তিশালী হয়ে উঠে যে, কেন্দ্রীয় নেতাদের আদেশ-নির্দেশ অগ্রাহ্য করতে তাদের বিন্দুমাত্র বাধে না। এখন তাদের নিয়ন্ত্রণ করা দলের নেতাদের পক্ষে অসম্ভব। সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ওপর নির্ভর করছে তাদের দলীয় দুষ্কৃতকারীদের আইনবহির্ভূতভাবে দমন করতে। তারা ক্রসফায়ার, বন্দুকযুদ্ধ ইত্যাদির মাধ্যমে কিছু কিছু দলীয় দুর্বৃত্তকে শেষ করতে চাইছে। কিছু মানুষ এতে সরকারকে বাহবা দেবে। তাতে সরকার আরো উৎসাহবোধ করবে ক্রসফায়ারে। কিন্তু সমস্যাটা দীর্ঘস্থায়ী।
অস্থায়ী ভিত্তিতে দুষ্কৃতকারীদের দমন করায় কোনো সুফল বয়ে আনবে না। ক্রসফায়ারে যারা নিহত হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে থানায় ও এলাকায় বহু অভিযোগ রয়েছে। সরকারের উচিত আইনের শাসন ও ন্যায়বিচারের স্বার্থে অপরাধের দ্রুত বিচার করে কঠোরতম শাস্তি দেওয়া। বর্তমানে যত রকমের সন্ত্রাস হচ্ছে, তার প্রায় সবই সরকারি দলের ক্যাডার ও তাদের অঙ্গসংগঠনের লোকরাই করছে। সবচেয়ে সহজ পথ হলো দলীয়ভাবে তাদের সন্ত্রাসীদের অপকর্ম করা থেকে বিরত করা। সেটা করলে আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের বিপজ্জনক পথে যাওয়া প্রয়োজন হবে না। তা যদি আওয়ামী লীগ নেতারা করতে না পারেন তাহলে তারা আর যা করতে পারেন তা হলো থানা ও আদালতকেই স্বাধীনভাবে ব্যবস্থা নিতে বলা। তখন গ্রেপ্তার করে অপরাধীকে শাস্তি দিলেই সন্ত্রাস কমে যাবে।
যদি ক্রসফায়ার করে সন্ত্রাসী তৎপরতা কমানো যেত, সমাজে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হতো তাহলে এ পর্যন্ত বন্দুকযুদ্ধে যত মানুষ মারা গেছে, এত মৃত্যুর প্রয়োজন হতো না। দু-চারজন মারা যাওয়ার পরই সন্ত্রাসীরা ভালো হয়ে যেত। এখন যে সরকারি দলের কিছু কিছু ক্রসফায়ারে দেওয়া হচ্ছে, এতে পরিস্থিতির উন্নতি তো হবেই না, যা হবে তা হলো, নিজেদের দলীয় কোন্দল ও হিংসা বিদ্বেষ আরো বেড়ে যাবে।
এলাকায় ক্রসফায়ারে একজন মারা গেলে কয়েকজন মারা যাবে নিজেদের মধ্যে কোন্দলে। সুতরাং সরকারকে এই পথ থেকে সরে এসে আইনের শাসনের পথেই থাকতে হবে। ক্রসফায়ার শুরু করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকার, বিপ্লবী নেতা সিরাজ সিকদারকে ১৯৭৫ খ্রিস্টাব্দে গুলি করে হত্যা করা হয়।
No comments:
Write comments