রাজধানীতে আবারও হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। গত সোমবার গুলশানে সন্ত্রাসীদের গুলীতে নিহত হয়েছেন ইতালীর নাগরিক তাবেলা সিসারে। বাংলাদেশে নেদারল্যান্ডের একটি এনজিওর প্রজেক্ট ম্যানেজার হিসেবে কর্মরত ছিলেন তিনি। সেদিন সন্ধ্যায় জগিং করার সময় মোটরসাইকেলে আগত দুর্বৃত্তরা কমান্ডো স্টাইলে তাকে হত্যা করেছে। তার শরীরে তিনটি বুলেটের আঘাত পাওয়া গেছে। গুলশানের বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে থাকা ১৮টি ক্লোজ সার্কিট ক্যামেরার ফুটেজ পরীক্ষা করেও পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে দুর্বৃত্তদের এবং তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটি শনাক্ত করতে পারেনি। তবে র্যাব ও পুলিশসহ আইনশৃংখলা বাহিনীর তদন্ত ও প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
আমরা বাহিনীগুলোর সাফল্য কামনা করি। কারণ, এমন এক সময়ে হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে যখন একদিকে জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিতে গিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের আইনশৃংখলা পরিস্থিতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাইতেও ভালো বলে ঘোষণা দিয়েছেন, অন্যদিকে নিরাপত্তাহীনতার অজুহাত দেখিয়ে বাংলাদেশ সফরে আসতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট দল। বিষয়টিকে তাই হাল্কাভাবে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। বলা দরকার, বর্তমান সরকারের আমলে হত্যা তথা খুনখারাবি অনেকটা ডাল-ভাতের মতো বিষয়ে পরিণত হয়েছে। তা সত্ত্বেও খুব বড় ধরনের কোনো হত্যাকাণ্ড না ঘটলে আজকাল মানুষ সাধারণত গুরুত্ব দেয় না। কে মারা গেলো বা কারা হত্যা করলো এসব বিষয়ে খাঁজ-খবরও করে না। কিন্তু সোমবারের হত্যাকাণ্ডটি বিশেষ কিছু কারণে আলোড়ন তুলেছে। প্রধান কারণটি হলো, যাকে হত্যা করা হয়েছে তিনি বাংলাদেশের নাগরিক নন। জগিংরত অবস্থায় তাকে খুব কাছ থেকে গুলী করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য একের পর এক গুলী চালিয়েছে ঘাতকরা। তারপর নিরাপদেই পালিয়ে গেছে তারা। গুলশানের মতো অভিজাত এলাকা বলে শুধু নয়, একজন বিদেশী নাগরিক নিহত হয়েছেন বলেও ব-দিন পর আইনশৃংখলা বাহিনীকে জোর তৎপরতা চালাতে দেখা গেছে। সে তৎপরতা এখনো অব্যাহত রয়েছে।
বলার অপেক্ষা রাখে না, বর্তমান সরকারের আমলে আইনশৃংখলা পরিস্থি’তির কতটা অবনতি ঘটেছে এবং সব মিলিয়ে পরিস্থ’তি কতটা ভয়ংকর হয়ে পড়েছে গুলশানের এ হত্যাকাণ্ড তার একটি উদাহরণ মাত্র। এরকম হত্যা দেশের কোথাও না কোথাও প্রতিদিনই ঘটছে। কোথাও কোথাও একইদিনে এমনকি কয়েকটি পর্যন্ত হত্যাকাণ্ড ঘটে চলেছে। এভাবেই একের পর এক হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ ঘটে চললেও ‘কঠোর ব্যবস্থা’ নেয়ার ঘোষণা দেয়ার বাইরে সরকার কখনো কিছু করেনি। এর ফলে খুনি-সন্ত্রাসীরাও সরকারের কোনো ধমককেই পাত্তা দেয়নি। পাত্তা তারা এখনো দিচ্ছে না বলেই দেশজুড়ে বেড়ে চলেছে খুন-খারাবি- যেগুলোর পেছনে প্রধান একটি কারণ হিসেবে রয়েছে টেন্ডারবাজি-চাঁদাবাজি ও দখলবাজিসহ নানা অপরাধ। কারণ পর্যালোচনা করতে গিয়ে তথ্যাভিজ্ঞ মহল মনে করেন, ক্ষমতাসীনদের মদত ও যোগসাজশ না থাকলে কারো পক্ষেই এভাবে খুন ও নানা ধরনের অপরাধ সংঘটিত করা এবং অনেক ক্ষেত্রে হাতে নাতে ধরা পড়ার পরও পার পেয়ে যাওয়া সম্ভব হওয়ার কথা নয়। অন্যদিকে সেটাই ঘটছে।
গুলশানের এই হত্যাকাণ্ডকেন্দ্রিক ঘটনাপ্রবাহে অন্য একটি বিশেষ বিষয়ও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে সামনে এসেছে। হত্যাকাণ্ড ঘটতে না ঘটতেই আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলে বসেছেন, এটা নাকি পূর্বপরিকল্পিত এবং সরকারের বিরুদ্ধে গভীর এক ষড়যন্ত্র। নিজের বক্তব্যের কারণও ব্যাখ্যা করেছেন মিস্টার হানিফ। বলেছেন, একজন বিদেশী নাগরিকের এদেশে শত্রু থাকার কথা নয়। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে মুহূর্তে জাতিসংঘ থেকে সম্মানসূচক পুরস্কার গ্রহণ করেছেন ঠিক তখনই হত্যাকাণ্ডটি ঘটানো হয়েছে। আমরা মনে করি, বিদেশী নাগরিক বলেই তার কোনো শত্রু থাকতে পারবে না- এমন তত্ত্ব তর্কাতীতভাবে গ্রহণযোগ্য হওয়ার সুযোগ নেই। কারো সঙ্গে শত্রুতা না থেকে থাকলে বেছে বেছে ইতালীর নাগরিক তাবেলা সিসারেকেই কেন হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা- সে প্রশ্নের উত্তর অবশ্যই খোঁজা দরকার। বর্তমান পর্যায়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ আসলে ক্ষমতাসীনদের মনোভাব। সবকিছুর মধ্যে তারা শুধু সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রই খুঁজে থাকেন! এমন অবস্থার অন্য দিকটি সম্পর্কেও লক্ষ্য করা দরকার। কারণ, সরকারের এই মনোভাবের সুযোগ নিয়ে পার পেয়ে যায় খুনি-ঘাতকসহ নানা ধরনের দুর্বৃত্ত ও অপরাধীরা। একই কারণে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করাও অসম্ভব হয়ে পড়ে, বাস্তবে অসম্ভব হয়ে পড়েছেও। এজন্যই ভীষণ আতংকে জীবন কাটাতে হচ্ছে দেশবাসীকে। পার পাচ্ছেন না এমনকি বিদেশীরাও।
আমরা মনে করি, কথায় কথায় ষড়যন্ত্র খুঁজে বেড়ানোর পরিবর্তে সরকারের উচিত আইনশৃংখলা বাহিনীকে স্বাধীনভাবে তদন্ত করার এবং খুনি-ঘাতকদের আইনের আওতায় আনার সুযোগ দেয়া। আন্তরিকতার প্রমাণ তো দিতেই হবে, দ্রুত অবনতি ঘটে চলা আইনশৃংখলা পরিস্থিতির ব্যাপারেও ক্ষমতাসীনদের তৎপর হতে হবে। আমরা আশা করতে চাই, সরকার ইতালীর নিহত নাগরিকের হত্যাকা-কে রাজনৈতিক ইস্যু বানানোর চেষ্টা করবে না বরং পুরো বিষয়টিকে আইনশৃংখলা বাহিনীর হাতে ছেড়ে দেবে। তাহলে শুধু খুনি-ঘাতকরাই ধরা পড়বে না, তাদের উদ্দেশ্য সম্পর্কেও বিস্তারিত জানা যাবে। তেমন অবস্থায় সাধারণ মানুষের জীবনে যেমন স্বস্তি ফিরে আসবে তেমনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বাংলাদেশ সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাবের সৃষ্টি হবে। সরকারের উচিত সে লক্ষ্যেই তৎপর হওয়া।
আমরা বাহিনীগুলোর সাফল্য কামনা করি। কারণ, এমন এক সময়ে হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত হয়েছে যখন একদিকে জাতিসংঘের অধিবেশনে যোগ দিতে গিয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের আইনশৃংখলা পরিস্থিতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চাইতেও ভালো বলে ঘোষণা দিয়েছেন, অন্যদিকে নিরাপত্তাহীনতার অজুহাত দেখিয়ে বাংলাদেশ সফরে আসতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেট দল। বিষয়টিকে তাই হাল্কাভাবে নেয়ার কোনো সুযোগ নেই। বলা দরকার, বর্তমান সরকারের আমলে হত্যা তথা খুনখারাবি অনেকটা ডাল-ভাতের মতো বিষয়ে পরিণত হয়েছে। তা সত্ত্বেও খুব বড় ধরনের কোনো হত্যাকাণ্ড না ঘটলে আজকাল মানুষ সাধারণত গুরুত্ব দেয় না। কে মারা গেলো বা কারা হত্যা করলো এসব বিষয়ে খাঁজ-খবরও করে না। কিন্তু সোমবারের হত্যাকাণ্ডটি বিশেষ কিছু কারণে আলোড়ন তুলেছে। প্রধান কারণটি হলো, যাকে হত্যা করা হয়েছে তিনি বাংলাদেশের নাগরিক নন। জগিংরত অবস্থায় তাকে খুব কাছ থেকে গুলী করা হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য একের পর এক গুলী চালিয়েছে ঘাতকরা। তারপর নিরাপদেই পালিয়ে গেছে তারা। গুলশানের মতো অভিজাত এলাকা বলে শুধু নয়, একজন বিদেশী নাগরিক নিহত হয়েছেন বলেও ব-দিন পর আইনশৃংখলা বাহিনীকে জোর তৎপরতা চালাতে দেখা গেছে। সে তৎপরতা এখনো অব্যাহত রয়েছে।
বলার অপেক্ষা রাখে না, বর্তমান সরকারের আমলে আইনশৃংখলা পরিস্থি’তির কতটা অবনতি ঘটেছে এবং সব মিলিয়ে পরিস্থ’তি কতটা ভয়ংকর হয়ে পড়েছে গুলশানের এ হত্যাকাণ্ড তার একটি উদাহরণ মাত্র। এরকম হত্যা দেশের কোথাও না কোথাও প্রতিদিনই ঘটছে। কোথাও কোথাও একইদিনে এমনকি কয়েকটি পর্যন্ত হত্যাকাণ্ড ঘটে চলেছে। এভাবেই একের পর এক হত্যাকাণ্ডসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ ঘটে চললেও ‘কঠোর ব্যবস্থা’ নেয়ার ঘোষণা দেয়ার বাইরে সরকার কখনো কিছু করেনি। এর ফলে খুনি-সন্ত্রাসীরাও সরকারের কোনো ধমককেই পাত্তা দেয়নি। পাত্তা তারা এখনো দিচ্ছে না বলেই দেশজুড়ে বেড়ে চলেছে খুন-খারাবি- যেগুলোর পেছনে প্রধান একটি কারণ হিসেবে রয়েছে টেন্ডারবাজি-চাঁদাবাজি ও দখলবাজিসহ নানা অপরাধ। কারণ পর্যালোচনা করতে গিয়ে তথ্যাভিজ্ঞ মহল মনে করেন, ক্ষমতাসীনদের মদত ও যোগসাজশ না থাকলে কারো পক্ষেই এভাবে খুন ও নানা ধরনের অপরাধ সংঘটিত করা এবং অনেক ক্ষেত্রে হাতে নাতে ধরা পড়ার পরও পার পেয়ে যাওয়া সম্ভব হওয়ার কথা নয়। অন্যদিকে সেটাই ঘটছে।
গুলশানের এই হত্যাকাণ্ডকেন্দ্রিক ঘটনাপ্রবাহে অন্য একটি বিশেষ বিষয়ও অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে সামনে এসেছে। হত্যাকাণ্ড ঘটতে না ঘটতেই আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব-উল আলম হানিফ বলে বসেছেন, এটা নাকি পূর্বপরিকল্পিত এবং সরকারের বিরুদ্ধে গভীর এক ষড়যন্ত্র। নিজের বক্তব্যের কারণও ব্যাখ্যা করেছেন মিস্টার হানিফ। বলেছেন, একজন বিদেশী নাগরিকের এদেশে শত্রু থাকার কথা নয়। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে মুহূর্তে জাতিসংঘ থেকে সম্মানসূচক পুরস্কার গ্রহণ করেছেন ঠিক তখনই হত্যাকাণ্ডটি ঘটানো হয়েছে। আমরা মনে করি, বিদেশী নাগরিক বলেই তার কোনো শত্রু থাকতে পারবে না- এমন তত্ত্ব তর্কাতীতভাবে গ্রহণযোগ্য হওয়ার সুযোগ নেই। কারো সঙ্গে শত্রুতা না থেকে থাকলে বেছে বেছে ইতালীর নাগরিক তাবেলা সিসারেকেই কেন হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা- সে প্রশ্নের উত্তর অবশ্যই খোঁজা দরকার। বর্তমান পর্যায়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ আসলে ক্ষমতাসীনদের মনোভাব। সবকিছুর মধ্যে তারা শুধু সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রই খুঁজে থাকেন! এমন অবস্থার অন্য দিকটি সম্পর্কেও লক্ষ্য করা দরকার। কারণ, সরকারের এই মনোভাবের সুযোগ নিয়ে পার পেয়ে যায় খুনি-ঘাতকসহ নানা ধরনের দুর্বৃত্ত ও অপরাধীরা। একই কারণে অপরাধ নিয়ন্ত্রণ করাও অসম্ভব হয়ে পড়ে, বাস্তবে অসম্ভব হয়ে পড়েছেও। এজন্যই ভীষণ আতংকে জীবন কাটাতে হচ্ছে দেশবাসীকে। পার পাচ্ছেন না এমনকি বিদেশীরাও।
আমরা মনে করি, কথায় কথায় ষড়যন্ত্র খুঁজে বেড়ানোর পরিবর্তে সরকারের উচিত আইনশৃংখলা বাহিনীকে স্বাধীনভাবে তদন্ত করার এবং খুনি-ঘাতকদের আইনের আওতায় আনার সুযোগ দেয়া। আন্তরিকতার প্রমাণ তো দিতেই হবে, দ্রুত অবনতি ঘটে চলা আইনশৃংখলা পরিস্থিতির ব্যাপারেও ক্ষমতাসীনদের তৎপর হতে হবে। আমরা আশা করতে চাই, সরকার ইতালীর নিহত নাগরিকের হত্যাকা-কে রাজনৈতিক ইস্যু বানানোর চেষ্টা করবে না বরং পুরো বিষয়টিকে আইনশৃংখলা বাহিনীর হাতে ছেড়ে দেবে। তাহলে শুধু খুনি-ঘাতকরাই ধরা পড়বে না, তাদের উদ্দেশ্য সম্পর্কেও বিস্তারিত জানা যাবে। তেমন অবস্থায় সাধারণ মানুষের জীবনে যেমন স্বস্তি ফিরে আসবে তেমনি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও বাংলাদেশ সম্পর্কে ইতিবাচক মনোভাবের সৃষ্টি হবে। সরকারের উচিত সে লক্ষ্যেই তৎপর হওয়া।
No comments:
Write comments