লাশের মিছিলে আতঙ্কের জীবনযাত্রা
প্রায় দেড় বছর আগে ৮ মে ২০১৪ ঢাকায় ইউরোপ ডে উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ইইউ এবং ইইউভুক্ত রাষ্ট্রের ৯ রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম হানা, জার্মান রাষ্ট্রদূত আলব্রেট কুনজে, ফরাসি রাষ্ট্রদূত মিশেল ট্রাঙ্কুয়ার, ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত হ্যানি ফুগান, সুইজারল্যান্ডের রাষ্ট্রদূত গার্বেন সরেড, ইতালির রাষ্ট্রদূত ইদোমন্ড ফ্যালকোনি, স্পেনের রাষ্ট্রদূত লুইস সেজাডা, ভারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার নিকলো এবং সুইডেনের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত কারিন রোহেলিন গুম, খুন, অপহরণ এবং বিচারবহির্ভূত হত্যাসহ বাংলাদেশের বর্তমান অবনতিশীল পরিস্থিতিতে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। এসব ঘটনার সঠিক তদন্তের মাধ্যমে দোষীদের বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানিয়েছে সংস্থাটি।
এ প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার নিকলো বলেন, নারায়ণগঞ্জের হত্যাকা- এবং সাম্প্রতিক আরও কিছু গুমের ঘটনা আমাদের উদ্বেগকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। কয়েকদিন আগে এখানে একজন ব্রিটিশ নাগরিক অপহরণ হয়েছে। তার কোনো হদিস মেলেনি। ইলিয়াস আলী সম্পর্কে কোনো তথ্যই জানা গেল না। একের পর এক এসব ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, এদের উদ্ধারে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রীর দফতরসহ পররাষ্ট্র এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছি। এছাড়া এসব গুমের ঘটনা কেন ঘটছে বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমরা তার ব্যাখ্যা চেয়েছি। (সূত্রঃ দৈনিক আমার দেশ ৯ মে ২০১৪)
অবরোধ ও হরতালে বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- বেড়ে যাওয়ায় বেওয়ারিশ লাশও বাড়ছে। প্রায় প্রতিদিনই দুই থেকে তিন জনকে ক্রস ফায়ারে দেয়া হচ্ছে। এদের মধ্যে অনেককেই শনাক্ত করা যাচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে লক্ষ্মীপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ বা নড়াইল থেকে আটক করে ঢাকায় ক্রস ফায়ার দেয়া হচ্ছে। এ কারণে অনেক ক্ষেত্রে পরিচয় শনাক্ত হচ্ছে না। বর্তমানে শনাক্তহীন বেওয়ারিশ লাশগুলোর বেশির ভাগগুলোতে গুলীর চিহ্ন রয়েছে। আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলামের তথ্য অনুযায়ী, ২০১১, ২০১২ ও ২০১৩ সালের তুলনায় ২০১৪ সালের অক্টোবর থেকে বেওয়ারিশ লাশের সংখ্যা বাড়ছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২২ জানুয়ারি সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, ৫ জানুয়ারি ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয়েছে। তাই দেশী-বিদেশীদের নজর ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে তারা সংখ্যালঘু নির্যাতন ও বিরোধী দল নির্মূলে কাজ করছে। তারা বিরোধী জোটের নেতা-কর্মীদের গুম করে হত্যা করছে। আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের আশ্রয় নিয়ে বিরোধী জোট দমন করছে। তিনি বলেন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- বেড়েই চলেছে। গত ১০ দিনে ১০টি লাশ পাওয়া গেছে। নীলফামারীতে আসাদুজ্জামান নূরের গাড়ি বহরে হামলার আসামীদের ৩ জনের লাশ পাওয়া গেছে। তিনি জানান, দলীয় হিসেবে সারা দেশে গত ৩ মাসে নিহত হয়েছে ২২৭ জন, গুম হয়েছে ১৮৭ জন। ১৮ দলসহ নিহত ২৯৪ জন। তিনি এসব হত্যা-গুমের জন্য নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেন এবং মানবাধিকার সংস্থাসহ সচেতন নাগরিকদের সব ঘটনার তদন্তে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। (সূত্রঃ দৈনিক মানবজমিন ১০ ডিসেম্বর ২০১৪)
গণতন্ত্র দুর্বল হয়ে গেলে, জঙ্গিবাদের উত্থান হতে পারে। ভিন্ন মতপ্রকাশের রাজনৈতিক সুযোগ এখন খুবই সামান্য। রাজনৈতিক মতপ্রকাশের সুযোগ সীমিত করা বা বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ের অভিযোগ সরকার অস্বীকার করছে। এসব ঘটনা তখনই দেখা যাচ্ছে যখন দেশের সর্বোচ্চ ব্যক্তি থেকে শুরু করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্তাব্যক্তিরা এমন ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন, যা এ ধরনের ঘটনাকে উৎসাহিত করছে। এগুলো কোনো সুস্থ, স্বাভাবিক ঘটনা নয়। একটা গণতান্ত্রিক সমাজে এমন উদাহরণ মেলে না। এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
সরকারের সিনিয়র মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, কর্তৃপক্ষ ‘শান্তিপূর্ণ এবং গণতান্ত্রিক’ রাজনৈতিক কর্মকা-ের সুযোগ দেবে। কিন্তু ‘নৈরাজ্য ও সন্ত্রাসী কর্মকা-ের’ বিরুদ্ধে অভিযান চালাবে। পুলিশের মহাপরিদর্শক শহিদুল হক বলেছেন, নিরাপত্তা বাহিনীগুলো শুধু আত্মরক্ষার্থে ফাঁকা গুলী ছোড়ে। (সূত্রঃ দৈনিক মানব জমিন ২৫ মার্চ ২০১৫)
লাশ শনাক্তে পুলিশের যথাযথ পদক্ষেপ না থাকায় বেওয়ারিশ লাশের সংখ্যা বাড়ছে। আর এই সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছে দুর্বৃত্তরা। একস্থানে হত্যার পর অন্যস্থানে লাশ ফেলে পার পেয়ে যাচ্ছে তারা। পুলিশ বেওয়ারিশ ঘোষণা করলে আঞ্জুমান তা দাফন করার দায়িত্ব নেয়। বেশির ভাগ লাশই হস্তান্তর করা হয় গলিত অবস্থায়। বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন হওয়া হতভাগ্যদের মধ্যে বেশির ভাগই হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। পুলিশের কাছে বেওয়ারিশ লাশের ছবি ও পোশাক সংরক্ষণ করা থাকে। আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলামের তথ্য মতে, ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত ১ হাজার ৩২৫টি লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে আজিমপুর ও জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এর মধ্যে ২০১৩ সালের জুলাইতে ১১৩, আগস্টে ৯৯, সেপ্টেম্বরে ৮৯, অক্টোবরে ১৩৮, নভেম্বরে ১০২, ডিসেম্বরে ৯৫টি লাশ দাফন করা হয়। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে ১০৩, ফেব্রুয়ারিতে ১০৯, মার্চে ১১৯, এপ্রিলে ১২০, মে ১৩১ ও জুন মাসে ১০৭টি লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়। এদিকে ২০১৪ সালের জুলাই থেকে ২০১৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ৭৯০ লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়। এ হিসেবে ২০১৪ সালের জুলাইতে ১১৬, আগস্টে ১১০, সেপ্টেম্বরে ১১৮, অক্টোবরে ১৪৪, নভেম্বরে ১১৫, ডিসেম্বরে ১১৩, ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে ৭৪টি লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়। ২০১১ সালের জুলাই থেকে ২০১২ সালের জুন পর্যন্ত ১ হাজার ১৮১টি লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে আজিমপুর ও জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয়। এর মধ্যে ২০১১ সালের জুলাইতে ১২৭, আগস্টে ১০৯, সেপ্টেম্বরে ১১১, অক্টোবরে ১০০, নভেম্বরে ১১২, ডিসেম্বরে ৭৬টি লাশ দাফন করা হয়। ২০১২ সালের জানুয়ারিতে ১১৫, ফেব্রুয়ারিতে ৮৩, মার্চে ৯৭, এপ্রিলে ৭৭, মে-তে ৯০ ও জুন মাসে ৮৪টি লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়।
এছাড়া ২০১২ সালের জুলাই থেকে ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত ১ হাজার ৪৯৫টি লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়। এর মধ্যে রানা প্লাজা ও তাজরীন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয় ৩৪৪টি। ওই হিসেবে এ দুই ঘটনা বাদ দিলে ২০১২-১৩ অর্থবছরে ১ হাজার ১৪৮টি লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে জুরাইন ও আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। যদিও রানা প্লাজা ও তাজরীনের ঘটনায় এ পর্যন্ত ২৪০টি লাশের ডিএনএ টেস্টের মাধ্যেমে পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। এ হিসেবে ২০১২ সালের জুলাইতে ১১৩, আগস্টে ১২৮, সেপ্টেম্বরে ১১০, অক্টোবরে ১১৫, নভেম্বরে ১৪৫ (তাজরীন ঘটনায় ৫৩ জনসহ), ডিসেম্বরে ৯০, ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে ৯২, ফেব্রুয়ারিতে ৮৫, মার্চে ৯০, এপ্রিলে ৭২, মে ৩৬৭ (রানা প্লাজার-২৯১ জনসহ) ও জুন মাসে ৮৮টি লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়। (সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫)
নারায়ণগঞ্জের ত্রাস হিসেবে পরিচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী তোফাজ্জল বাহিনীর প্রধান তোফাজ্জলের গুলীবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয় ২৩ অক্টোবর ২০০৯। তার আত্মীয়-স্বজন অভিযোগ করেছেন, ২১ অক্টোবর ঢাকার তাঁতী বাজারে একটি আবাসিক হোটেল থেকে সাদা পোষাকের ব্যক্তিরা তাকে আটক করে। এরপরই নারায়ণগঞ্জের জালকুঁড়ি এলাকা থেকে গুলীবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। তোফাজ্জলের আত্মীয়ের অভিযোগ, তাকে ক্রসফায়ারের মতোই ‘গুপ্তহত্যা’ করা হয়েছে।
২০ নবেম্বর ২০০৯ মিরপুরে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা ও সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বাসন সংস্থার সাবেক কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল কালাম আজাদ রাজুর গুলীবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। মাগুরা জেলার দোয়ারাবাড়ার আব্দুল আজিজ বিশ্বাসের পুত্র রাজুর বিরুদ্ধে নগরীরর মিরপুরসহ বিভিন্ন থানায় মামলা ছিল। মিরপুর মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের পেছনে একটি স্কুলের পাশের খালি জমিতে ঝোপের পাশে তার লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। তার মাথায় গুলীবিদ্ধ ছিল। নিহতের আত্মীয়রা জানান, ১৮ নবেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। কে বা কারা তাকে ধরে নিয়ে গেছে জানা যায়নি। তবে শাহ আলী থানা পুলিশের সদস্যরা জানিয়েছে, নিহতের মাথায় দুটি গুলী ছিল। দেখে মনে হয়েছে, অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা তাকে হত্যা করেছে।
৪ ডিসেম্বর ২০০৯ সাতক্ষীরার কৃষক আন্দোলনের নেতা সাইফুল্লাহ লস্করের লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে পুলিশ তার বাসায় অভিযান চালায়। এর পরই তার লাশ পাওয়া যায় বাড়ির পাশে। তার গলা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন ছিল।
১৯ ডিসেম্বর ২০০৯ সাভারে ভার্কুতা এলাকার কলাবাহান থেকে অজ্ঞাত যুবকের গুলীবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ২১ ডিসেম্বর ঢাকা-আরিচা সড়কের বলিয়রপুর এলাকা থেকে অজ্ঞাত যুবকের গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আজ পর্যন্ত এই দুই হতভাগা যুবকের পরিচয় পাওয়া যায়নি। কীভাবে তাদের মৃত্যু হয়েছে তা নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন।
২৩ ডিসেম্বর ২০০৯ খুলনার মংলায় হোটেল পারিজাতের পার্শ্ববর্তী কাশবনের ভেতর থেকে পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি জনযুদ্ধের আঞ্চলিক প্রধান শহীদুল ইসলাম শহীদের (৩৮) গুলীবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়। তার বুকে ৩টি বুলেট বিদ্ধ ছিল। কয়েকদিন আগে সাদা পোশাকের লোকজন তাকে ধরে নিয়ে যায়।
১০ মার্চ ২০১৩ পাবনার সদর উপজেলার গয়েশপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা ইবরাহিম আলী মৃধার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
১২ মার্চ ২০১৪ লক্ষ্মীপুরে বেলা সাড়ে ১১টায় অজ্ঞাত এক যুবকের হাত-পা বাঁধা, দুই পায়ের রগ ও গলা কাটা মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সদর উপজেলার কুশাখালী ইউনিয়নের ঝাউডগী গ্রামের শামছুল হুদার মৎস্য খামারের ডোবা থেকে এ মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের তাজপুর গ্রামের হৃদয় চৌধুরী (২০) নামের এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সে দত্তপাড়া ইউনিয়নের তাজপুর গ্রামের সূর্য চৌধুরীর ছেলে।
গার্মেন্ট ব্যবসায়ী ও যুবদল নেতা সামছুল ইসলাম সোলায়মানকে অপহরণ করা হয়েছিল রাজধানীর উত্তরা থেকে। তার গুলীবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায় লক্ষ্মীপুরে। অস্ত্র ঠেকিয়ে অপহরণের পর একটি মাইক্রোবাসে করে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। অপহরণের দু’দিন পর পাওয়া যায় তার লাশ। এই দু’দিনে স্বামীর জন্য হন্যে হয়ে ছুটেছেন নিহতের স্ত্রী সালমা ইসলাম মায়া। অপহরণকারীরা যোগাযোগও করেছিল তার সঙ্গে। ক্ষণে ক্ষণে জানিয়েছে সোলায়মানের অবস্থান। একটি বিশেষ সংস্থার দু’টি অঞ্চলের কার্যালয়ে তাকে রাখার কথাও জানায় তারা। আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে আছেন এমনটি ভেবে সালমা স্বামীকে জীবিত ফেরত পাওয়ার আশায় ছিলেন। এজন্য অপহরণকারীদের মুক্তিপণ দিতেও রাজি হন তিনি। সোলায়মানকে জীবিত ফেরত দেয়ার শর্তে ৫০ লাখ টাকা দাবি করে। পুরো টাকা না পেয়ে ধার দেনা করে ২০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন সালমা। অপহরণকারীদের কথা মতো কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় এক যুবকের হাতে এ টাকা তুলে দেন তিনি। তবে টাকা দিয়েও কাজ হয়নি। পরের দিনই পাওয়া যায় সোলায়মানের লাশ। জিবলু রহমান
এ প্রসঙ্গে ভারপ্রাপ্ত ব্রিটিশ হাইকমিশনার নিকলো বলেন, নারায়ণগঞ্জের হত্যাকা- এবং সাম্প্রতিক আরও কিছু গুমের ঘটনা আমাদের উদ্বেগকে আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। কয়েকদিন আগে এখানে একজন ব্রিটিশ নাগরিক অপহরণ হয়েছে। তার কোনো হদিস মেলেনি। ইলিয়াস আলী সম্পর্কে কোনো তথ্যই জানা গেল না। একের পর এক এসব ঘটনায় আমরা উদ্বিগ্ন। তিনি বলেন, এদের উদ্ধারে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়ার জন্য আমরা প্রধানমন্ত্রীর দফতরসহ পররাষ্ট্র এবং স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ করেছি। এছাড়া এসব গুমের ঘটনা কেন ঘটছে বাংলাদেশ সরকারের কাছে আমরা তার ব্যাখ্যা চেয়েছি। (সূত্রঃ দৈনিক আমার দেশ ৯ মে ২০১৪)
অবরোধ ও হরতালে বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- বেড়ে যাওয়ায় বেওয়ারিশ লাশও বাড়ছে। প্রায় প্রতিদিনই দুই থেকে তিন জনকে ক্রস ফায়ারে দেয়া হচ্ছে। এদের মধ্যে অনেককেই শনাক্ত করা যাচ্ছে না। দেখা যাচ্ছে লক্ষ্মীপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ বা নড়াইল থেকে আটক করে ঢাকায় ক্রস ফায়ার দেয়া হচ্ছে। এ কারণে অনেক ক্ষেত্রে পরিচয় শনাক্ত হচ্ছে না। বর্তমানে শনাক্তহীন বেওয়ারিশ লাশগুলোর বেশির ভাগগুলোতে গুলীর চিহ্ন রয়েছে। আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলামের তথ্য অনুযায়ী, ২০১১, ২০১২ ও ২০১৩ সালের তুলনায় ২০১৪ সালের অক্টোবর থেকে বেওয়ারিশ লাশের সংখ্যা বাড়ছে।
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ২২ জানুয়ারি সাংবাদিক সম্মেলনে বলেছেন, ৫ জানুয়ারি ভোটারবিহীন প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ নৈতিক ও রাজনৈতিকভাবে পরাজিত হয়েছে। তাই দেশী-বিদেশীদের নজর ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে তারা সংখ্যালঘু নির্যাতন ও বিরোধী দল নির্মূলে কাজ করছে। তারা বিরোধী জোটের নেতা-কর্মীদের গুম করে হত্যা করছে। আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের আশ্রয় নিয়ে বিরোধী জোট দমন করছে। তিনি বলেন, বিচারবহির্ভূত হত্যাকা- বেড়েই চলেছে। গত ১০ দিনে ১০টি লাশ পাওয়া গেছে। নীলফামারীতে আসাদুজ্জামান নূরের গাড়ি বহরে হামলার আসামীদের ৩ জনের লাশ পাওয়া গেছে। তিনি জানান, দলীয় হিসেবে সারা দেশে গত ৩ মাসে নিহত হয়েছে ২২৭ জন, গুম হয়েছে ১৮৭ জন। ১৮ দলসহ নিহত ২৯৪ জন। তিনি এসব হত্যা-গুমের জন্য নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেন এবং মানবাধিকার সংস্থাসহ সচেতন নাগরিকদের সব ঘটনার তদন্তে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। (সূত্রঃ দৈনিক মানবজমিন ১০ ডিসেম্বর ২০১৪)
গণতন্ত্র দুর্বল হয়ে গেলে, জঙ্গিবাদের উত্থান হতে পারে। ভিন্ন মতপ্রকাশের রাজনৈতিক সুযোগ এখন খুবই সামান্য। রাজনৈতিক মতপ্রকাশের সুযোগ সীমিত করা বা বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ের অভিযোগ সরকার অস্বীকার করছে। এসব ঘটনা তখনই দেখা যাচ্ছে যখন দেশের সর্বোচ্চ ব্যক্তি থেকে শুরু করে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কর্তাব্যক্তিরা এমন ধরনের বক্তব্য দিচ্ছেন, যা এ ধরনের ঘটনাকে উৎসাহিত করছে। এগুলো কোনো সুস্থ, স্বাভাবিক ঘটনা নয়। একটা গণতান্ত্রিক সমাজে এমন উদাহরণ মেলে না। এ বিষয়ে সুষ্ঠু তদন্তের মধ্য দিয়ে রাষ্ট্রকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
সরকারের সিনিয়র মন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম বলেছেন, কর্তৃপক্ষ ‘শান্তিপূর্ণ এবং গণতান্ত্রিক’ রাজনৈতিক কর্মকা-ের সুযোগ দেবে। কিন্তু ‘নৈরাজ্য ও সন্ত্রাসী কর্মকা-ের’ বিরুদ্ধে অভিযান চালাবে। পুলিশের মহাপরিদর্শক শহিদুল হক বলেছেন, নিরাপত্তা বাহিনীগুলো শুধু আত্মরক্ষার্থে ফাঁকা গুলী ছোড়ে। (সূত্রঃ দৈনিক মানব জমিন ২৫ মার্চ ২০১৫)
লাশ শনাক্তে পুলিশের যথাযথ পদক্ষেপ না থাকায় বেওয়ারিশ লাশের সংখ্যা বাড়ছে। আর এই সুযোগটাই কাজে লাগাচ্ছে দুর্বৃত্তরা। একস্থানে হত্যার পর অন্যস্থানে লাশ ফেলে পার পেয়ে যাচ্ছে তারা। পুলিশ বেওয়ারিশ ঘোষণা করলে আঞ্জুমান তা দাফন করার দায়িত্ব নেয়। বেশির ভাগ লাশই হস্তান্তর করা হয় গলিত অবস্থায়। বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন হওয়া হতভাগ্যদের মধ্যে বেশির ভাগই হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন। পুলিশের কাছে বেওয়ারিশ লাশের ছবি ও পোশাক সংরক্ষণ করা থাকে। আঞ্জুমানে মুফিদুল ইসলামের তথ্য মতে, ২০১৩ সালের জুলাই থেকে ২০১৪ সালের জুন পর্যন্ত ১ হাজার ৩২৫টি লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে আজিমপুর ও জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয়।
এর মধ্যে ২০১৩ সালের জুলাইতে ১১৩, আগস্টে ৯৯, সেপ্টেম্বরে ৮৯, অক্টোবরে ১৩৮, নভেম্বরে ১০২, ডিসেম্বরে ৯৫টি লাশ দাফন করা হয়। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে ১০৩, ফেব্রুয়ারিতে ১০৯, মার্চে ১১৯, এপ্রিলে ১২০, মে ১৩১ ও জুন মাসে ১০৭টি লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়। এদিকে ২০১৪ সালের জুলাই থেকে ২০১৫ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ৭৯০ লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়। এ হিসেবে ২০১৪ সালের জুলাইতে ১১৬, আগস্টে ১১০, সেপ্টেম্বরে ১১৮, অক্টোবরে ১৪৪, নভেম্বরে ১১৫, ডিসেম্বরে ১১৩, ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে ৭৪টি লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়। ২০১১ সালের জুলাই থেকে ২০১২ সালের জুন পর্যন্ত ১ হাজার ১৮১টি লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে আজিমপুর ও জুরাইন কবরস্থানে দাফন করা হয়। এর মধ্যে ২০১১ সালের জুলাইতে ১২৭, আগস্টে ১০৯, সেপ্টেম্বরে ১১১, অক্টোবরে ১০০, নভেম্বরে ১১২, ডিসেম্বরে ৭৬টি লাশ দাফন করা হয়। ২০১২ সালের জানুয়ারিতে ১১৫, ফেব্রুয়ারিতে ৮৩, মার্চে ৯৭, এপ্রিলে ৭৭, মে-তে ৯০ ও জুন মাসে ৮৪টি লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়।
এছাড়া ২০১২ সালের জুলাই থেকে ২০১৩ সালের জুন পর্যন্ত ১ হাজার ৪৯৫টি লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়। এর মধ্যে রানা প্লাজা ও তাজরীন হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয় ৩৪৪টি। ওই হিসেবে এ দুই ঘটনা বাদ দিলে ২০১২-১৩ অর্থবছরে ১ হাজার ১৪৮টি লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে জুরাইন ও আজিমপুর কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে। যদিও রানা প্লাজা ও তাজরীনের ঘটনায় এ পর্যন্ত ২৪০টি লাশের ডিএনএ টেস্টের মাধ্যেমে পরিচয় শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে। এ হিসেবে ২০১২ সালের জুলাইতে ১১৩, আগস্টে ১২৮, সেপ্টেম্বরে ১১০, অক্টোবরে ১১৫, নভেম্বরে ১৪৫ (তাজরীন ঘটনায় ৫৩ জনসহ), ডিসেম্বরে ৯০, ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে ৯২, ফেব্রুয়ারিতে ৮৫, মার্চে ৯০, এপ্রিলে ৭২, মে ৩৬৭ (রানা প্লাজার-২৯১ জনসহ) ও জুন মাসে ৮৮টি লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়। (সূত্রঃ দৈনিক প্রথম আলো ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৫)
নারায়ণগঞ্জের ত্রাস হিসেবে পরিচিত শীর্ষ সন্ত্রাসী তোফাজ্জল বাহিনীর প্রধান তোফাজ্জলের গুলীবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয় ২৩ অক্টোবর ২০০৯। তার আত্মীয়-স্বজন অভিযোগ করেছেন, ২১ অক্টোবর ঢাকার তাঁতী বাজারে একটি আবাসিক হোটেল থেকে সাদা পোষাকের ব্যক্তিরা তাকে আটক করে। এরপরই নারায়ণগঞ্জের জালকুঁড়ি এলাকা থেকে গুলীবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। তোফাজ্জলের আত্মীয়ের অভিযোগ, তাকে ক্রসফায়ারের মতোই ‘গুপ্তহত্যা’ করা হয়েছে।
২০ নবেম্বর ২০০৯ মিরপুরে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা ও সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা পুনর্বাসন সংস্থার সাবেক কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য আবুল কালাম আজাদ রাজুর গুলীবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়। মাগুরা জেলার দোয়ারাবাড়ার আব্দুল আজিজ বিশ্বাসের পুত্র রাজুর বিরুদ্ধে নগরীরর মিরপুরসহ বিভিন্ন থানায় মামলা ছিল। মিরপুর মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের পেছনে একটি স্কুলের পাশের খালি জমিতে ঝোপের পাশে তার লাশ পড়ে থাকতে দেখা যায়। তার মাথায় গুলীবিদ্ধ ছিল। নিহতের আত্মীয়রা জানান, ১৮ নবেম্বর থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। কে বা কারা তাকে ধরে নিয়ে গেছে জানা যায়নি। তবে শাহ আলী থানা পুলিশের সদস্যরা জানিয়েছে, নিহতের মাথায় দুটি গুলী ছিল। দেখে মনে হয়েছে, অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা তাকে হত্যা করেছে।
৪ ডিসেম্বর ২০০৯ সাতক্ষীরার কৃষক আন্দোলনের নেতা সাইফুল্লাহ লস্করের লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে পুলিশ তার বাসায় অভিযান চালায়। এর পরই তার লাশ পাওয়া যায় বাড়ির পাশে। তার গলা ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন ছিল।
১৯ ডিসেম্বর ২০০৯ সাভারে ভার্কুতা এলাকার কলাবাহান থেকে অজ্ঞাত যুবকের গুলীবিদ্ধ লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ২১ ডিসেম্বর ঢাকা-আরিচা সড়কের বলিয়রপুর এলাকা থেকে অজ্ঞাত যুবকের গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। আজ পর্যন্ত এই দুই হতভাগা যুবকের পরিচয় পাওয়া যায়নি। কীভাবে তাদের মৃত্যু হয়েছে তা নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন।
২৩ ডিসেম্বর ২০০৯ খুলনার মংলায় হোটেল পারিজাতের পার্শ্ববর্তী কাশবনের ভেতর থেকে পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি জনযুদ্ধের আঞ্চলিক প্রধান শহীদুল ইসলাম শহীদের (৩৮) গুলীবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায়। তার বুকে ৩টি বুলেট বিদ্ধ ছিল। কয়েকদিন আগে সাদা পোশাকের লোকজন তাকে ধরে নিয়ে যায়।
১০ মার্চ ২০১৩ পাবনার সদর উপজেলার গয়েশপুর ইউপি চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা ইবরাহিম আলী মৃধার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
১২ মার্চ ২০১৪ লক্ষ্মীপুরে বেলা সাড়ে ১১টায় অজ্ঞাত এক যুবকের হাত-পা বাঁধা, দুই পায়ের রগ ও গলা কাটা মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সদর উপজেলার কুশাখালী ইউনিয়নের ঝাউডগী গ্রামের শামছুল হুদার মৎস্য খামারের ডোবা থেকে এ মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।
মাদারীপুরের শিবচর উপজেলার দত্তপাড়া ইউনিয়নের তাজপুর গ্রামের হৃদয় চৌধুরী (২০) নামের এক যুবকের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। সে দত্তপাড়া ইউনিয়নের তাজপুর গ্রামের সূর্য চৌধুরীর ছেলে।
গার্মেন্ট ব্যবসায়ী ও যুবদল নেতা সামছুল ইসলাম সোলায়মানকে অপহরণ করা হয়েছিল রাজধানীর উত্তরা থেকে। তার গুলীবিদ্ধ লাশ পাওয়া যায় লক্ষ্মীপুরে। অস্ত্র ঠেকিয়ে অপহরণের পর একটি মাইক্রোবাসে করে তাকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। অপহরণের দু’দিন পর পাওয়া যায় তার লাশ। এই দু’দিনে স্বামীর জন্য হন্যে হয়ে ছুটেছেন নিহতের স্ত্রী সালমা ইসলাম মায়া। অপহরণকারীরা যোগাযোগও করেছিল তার সঙ্গে। ক্ষণে ক্ষণে জানিয়েছে সোলায়মানের অবস্থান। একটি বিশেষ সংস্থার দু’টি অঞ্চলের কার্যালয়ে তাকে রাখার কথাও জানায় তারা। আইন-শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীর হেফাজতে আছেন এমনটি ভেবে সালমা স্বামীকে জীবিত ফেরত পাওয়ার আশায় ছিলেন। এজন্য অপহরণকারীদের মুক্তিপণ দিতেও রাজি হন তিনি। সোলায়মানকে জীবিত ফেরত দেয়ার শর্তে ৫০ লাখ টাকা দাবি করে। পুরো টাকা না পেয়ে ধার দেনা করে ২০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন সালমা। অপহরণকারীদের কথা মতো কুড়িল বিশ্বরোড এলাকায় এক যুবকের হাতে এ টাকা তুলে দেন তিনি। তবে টাকা দিয়েও কাজ হয়নি। পরের দিনই পাওয়া যায় সোলায়মানের লাশ। জিবলু রহমান
No comments:
Write comments