মার্কিন রাষ্ট্রদূতের মন্তব্য
একটি খুবই তাৎপর্যপূর্ণ তথ্য প্রকাশ করেছেন মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট। গত সোমবার ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন- ডিকাব আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি জানিয়েছেন, ইতালীর নাগরিক তাবেলা সিসারে নিহত হওয়ার আগেই তাদের কাছে ‘বিশ্বাসযোগ্য’ তথ্য ছিল, বাংলাদেশে বিদেশীদের হত্যা ও সহিংসতাসহ এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে। তথ্যের সূত্র সম্পর্কে রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট বলেছেন, নিজেদের এবং অন্য অংশীদারদের পাশাপাশি জনগণের কাছ থেকে পাওয়া বিভিন্ন তথ্য তারা গুরুত্বের সঙ্গে যাচাই করে থাকেন এবং কোনো সূত্রের দেয়া তথ্যকেই তারা উড়িয়ে দেন না। ইতালীয় এবং জাপানী নাগরিকের ক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম করা হয়নি। শুধু তা-ই নয়, বিষয়টি এবং উদ্বেগের কথা তারা সরকারকে অবহিত করেছিলেন। সরকারের পক্ষ থেকে তাদের নিরাপত্তার ব্যাপারে আশ্বস্তও করা হয়েছিল। কিন্তু তা সত্ত্বেও পাঁচ দিনের ব্যবধানে দুটি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। উভয় হামলা একই ধরনের এবং বাংলাদেশে এটা অস্বাভাবিক। মার্কিন রাষ্ট্রদূত প্রসঙ্গক্রমে বাংলাদেশী জনগণের আন্তরিকতা ও আতিথেয়তার প্রশংসা করে বলেছেন, জঙ্গি-সন্ত্রাসীরা কোনো রাষ্ট্রীয় সীমানা মানে না বলেই বাংলাদেশে অবস্থানরত মার্কিন নাগরিকদের তারা সতর্ক করে দিয়েছেন। তাদের বাংলাদেশ থেকে চলে যেতে বলা হয়নি, বাংলাদেশে আসতেও নিষেধ করা হয়নি। আইএসসহ উগ্র জঙ্গিবাদের উত্থান দমনে বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করার তথ্য জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বার্নিকাট বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের অভিন্ন লক্ষ্য রয়েছে- যা শুধু দ্বিপক্ষীয় সম্পর্কের জন্য নয়, এ অঞ্চলের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। নিজেদের নিরাপত্তার স্বার্থেই যুক্তরাষ্ট্র জঙ্গিবাদ দমনের বিষয়ে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য ঢাকায় আসার পর ‘ডিকাব টক’-এর মাধ্যমে প্রথম আনুষ্ঠানিক এ সংবাদ সম্মেলনে মার্শা স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট আরো অনেক বিষয় নিয়েই কথা বলেছেন। তার বক্তব্যে এসেছে জিএসপি ও ট্রান্সপ্যাসিফিক পার্টনারশিপসহ দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন প্রসঙ্গও। কিন্তু বিদ্যমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে বেশি গুরুত্ব অর্জন করেছে দুই বিদেশীর সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ড। লক্ষণীয় বিষয় হলো, মার্কিন রাষ্ট্রদূত কিন্তু বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী বা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের ওপর হত্যার দায় চাপাননি। কোনো দল বা গোষ্ঠীর নামও উচ্চারণ করেননি, যারা এ দুটি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারে। তিনি এমনকি আইএস এবং আল-কায়েদার মতো আন্তর্জাতিক কোনো সংগঠনের সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কেও সংযত মন্তব্য করেছেন। বলেছেন, এসব সংগঠন কখনো কোনো হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার বা কৃতিত্ব দাবি করে কোনো বিবৃতি দিলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে দেখে। তদন্ত শেষ হওয়ার আগে কোনো মন্তব্য করে না। বাংলাদেশে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড দুটি সম্পর্কেও তার দেশ তদন্ত চালাচ্ছে। আমরা রাষ্ট্রদূত বার্নিকাটের এই বক্তব্যের পাশাপাশি তার দেয়া অন্য একটি তথ্যকেও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ মনে করি। সে তথ্যটি সরকারকে সম্ভাব্য হত্যা ও সহিংসতার ব্যাপারে আগেই জানানো সম্পর্কিত। এ ধরনের হত্যাকাণ্ড যে ঘটতে পারে সে ব্যাপারে তাদের কাছে সুনির্দিষ্ট ও ‘বিশ্বাসযোগ্য’ তথ্য ছিল। বিষয়টি সম্পর্কে তারা সরকারকে অবহিতও করেছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও পরপর দুই দুটি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার ফলে ধরে নেয়া যায়, নিরাপত্তার আশ্বাস দেয়া সত্ত্বেও সরকারের পক্ষ থেকে বাস্তবে কার্যকর কোনো ব্যবস্থাই নেয়া হয়নি। বিষয়টিকে কেবলই ব্যর্থতা বলে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। কারণ, যে কোনো পর্যালোচনায় দেখা যাবে, এর পেছনে শুধু কথিত ব্যর্থতা নয়, রয়েছে সরকারের পরিষ্কার গাফিলতিও। এরই পাশাপাশি ক্ষমতাসীনদের ব্লেম গেমের দিকটিকে সামনে আনা হলে না মেনে উপায় থাকে না যে, সবই করা হয়েছে বিশেষ পরিকল্পনার ভিত্তিতে। দেশের প্রধান দুই দল বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর ওপর হত্যাকা-ের দায় চাপানোই সে পরিকল্পনার উদ্দেশ্য। বাস্তব ক্ষেত্রেও সেটাই দেখা যাচ্ছে। কোনো রকম তদন্ত বা অনুসন্ধানের আগেই রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেও বিএনপি ও জামায়াতের দিকে আঙুল ওঠানো হয়েছে। মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে অতি উৎসাহীজনেরা এমনকি বেগম খালেদা জিয়াকে পর্যন্ত দায়ী করে বসেছেন। তারা ‘লন্ডন ষড়যন্ত্র’ও আবিষ্কার করেছেন! বলা বাহুল্য, সবই করা হচ্ছে সেই সুচিন্তিত পরিকল্পনার ভিত্তিতে। এরই মধ্যে রংপুরে একজন বিএনপি নেতাকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। পদক্ষেপটি নেয়ার সময় ভেবে দেখা হয়নি যে, বিএনপি নেতার সঙ্গে নিহত জাপানী নাগরিকের কথিত ‘ব্যবসায়িক পার্টনার’কে জড়িয়ে ফেলার ফলে জনগণ ভাবতে পারে যে, রাজনৈতিক কারণে নয় বরং সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব ও শত্রুতার কারণেই হত্যাকা-টি সংঘটিত হয়েছে। এখানে বিএনপি বা জামায়াতের দিকে আঙুল ওঠানোর কোনো সুযোগ নেই। কথা শুধু এটুকুই নয়। সুনির্দিষ্ট ও ‘বিশ্বাসযোগ্য’ তথ্যের ভিত্তিতে সরকারকে আগেই সতর্ক করা হয়েছিল বলে মার্কিন রাষ্ট্রদূত যে তথ্য প্রকাশ করেছেন সেটাও কিন্তু ক্ষমতাসীনদের পক্ষে যায় না। এর মধ্য দিয়ে বরং এমন অনুমানই শক্তিশালী হয়ে ওঠে যে, অন্তরালে বিএনপি ও জামায়াতের ওপর দোষ চাপানোর উদ্দেশ্য ছিল বলেই সব জানা সত্ত্বেও সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি আর সে কারণেই হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন দু’জন বিদেশী নাগরিক। আমরা আশা করতে চাই, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার ষড়যন্ত্রমূলক পন্থায় এগিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে সরকার আসল ঘাতকদের চিহ্নিত ও গ্রেফতার করার পদক্ষেপ নেবে এবং কূটনীতিকসহ বিদেশীদের মধ্যে স্বস্তি ও নিরাপত্তাবোধ ফিরিয়ে আনবে। মনে রাখা দরকার, সত্যের ঢোল আপনাআপনি বেজে ওঠে বলে দেশে একটি প্রবাদ রয়েছে। আমরা জানি না, মার্কিন রাষ্ট্রদূত সে ঢোল বাজানোরই সূচনা করেছেন কি না!
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মার্কিন রাষ্ট্রদূত হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য ঢাকায় আসার পর ‘ডিকাব টক’-এর মাধ্যমে প্রথম আনুষ্ঠানিক এ সংবাদ সম্মেলনে মার্শা স্টিফেন্স ব্লুম বার্নিকাট আরো অনেক বিষয় নিয়েই কথা বলেছেন। তার বক্তব্যে এসেছে জিএসপি ও ট্রান্সপ্যাসিফিক পার্টনারশিপসহ দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন প্রসঙ্গও। কিন্তু বিদ্যমান পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে বেশি গুরুত্ব অর্জন করেছে দুই বিদেশীর সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ড। লক্ষণীয় বিষয় হলো, মার্কিন রাষ্ট্রদূত কিন্তু বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামী বা অন্য কোনো রাজনৈতিক দলের ওপর হত্যার দায় চাপাননি। কোনো দল বা গোষ্ঠীর নামও উচ্চারণ করেননি, যারা এ দুটি হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকতে পারে। তিনি এমনকি আইএস এবং আল-কায়েদার মতো আন্তর্জাতিক কোনো সংগঠনের সংশ্লিষ্টতা সম্পর্কেও সংযত মন্তব্য করেছেন। বলেছেন, এসব সংগঠন কখনো কোনো হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার বা কৃতিত্ব দাবি করে কোনো বিবৃতি দিলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করে দেখে। তদন্ত শেষ হওয়ার আগে কোনো মন্তব্য করে না। বাংলাদেশে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড দুটি সম্পর্কেও তার দেশ তদন্ত চালাচ্ছে। আমরা রাষ্ট্রদূত বার্নিকাটের এই বক্তব্যের পাশাপাশি তার দেয়া অন্য একটি তথ্যকেও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ মনে করি। সে তথ্যটি সরকারকে সম্ভাব্য হত্যা ও সহিংসতার ব্যাপারে আগেই জানানো সম্পর্কিত। এ ধরনের হত্যাকাণ্ড যে ঘটতে পারে সে ব্যাপারে তাদের কাছে সুনির্দিষ্ট ও ‘বিশ্বাসযোগ্য’ তথ্য ছিল। বিষয়টি সম্পর্কে তারা সরকারকে অবহিতও করেছিলেন। কিন্তু তা সত্ত্বেও পরপর দুই দুটি হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার ফলে ধরে নেয়া যায়, নিরাপত্তার আশ্বাস দেয়া সত্ত্বেও সরকারের পক্ষ থেকে বাস্তবে কার্যকর কোনো ব্যবস্থাই নেয়া হয়নি। বিষয়টিকে কেবলই ব্যর্থতা বলে পাশ কাটিয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। কারণ, যে কোনো পর্যালোচনায় দেখা যাবে, এর পেছনে শুধু কথিত ব্যর্থতা নয়, রয়েছে সরকারের পরিষ্কার গাফিলতিও। এরই পাশাপাশি ক্ষমতাসীনদের ব্লেম গেমের দিকটিকে সামনে আনা হলে না মেনে উপায় থাকে না যে, সবই করা হয়েছে বিশেষ পরিকল্পনার ভিত্তিতে। দেশের প্রধান দুই দল বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর ওপর হত্যাকা-ের দায় চাপানোই সে পরিকল্পনার উদ্দেশ্য। বাস্তব ক্ষেত্রেও সেটাই দেখা যাচ্ছে। কোনো রকম তদন্ত বা অনুসন্ধানের আগেই রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ পর্যায় থেকেও বিএনপি ও জামায়াতের দিকে আঙুল ওঠানো হয়েছে। মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের মধ্যে অতি উৎসাহীজনেরা এমনকি বেগম খালেদা জিয়াকে পর্যন্ত দায়ী করে বসেছেন। তারা ‘লন্ডন ষড়যন্ত্র’ও আবিষ্কার করেছেন! বলা বাহুল্য, সবই করা হচ্ছে সেই সুচিন্তিত পরিকল্পনার ভিত্তিতে। এরই মধ্যে রংপুরে একজন বিএনপি নেতাকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। পদক্ষেপটি নেয়ার সময় ভেবে দেখা হয়নি যে, বিএনপি নেতার সঙ্গে নিহত জাপানী নাগরিকের কথিত ‘ব্যবসায়িক পার্টনার’কে জড়িয়ে ফেলার ফলে জনগণ ভাবতে পারে যে, রাজনৈতিক কারণে নয় বরং সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত দ্বন্দ্ব ও শত্রুতার কারণেই হত্যাকা-টি সংঘটিত হয়েছে। এখানে বিএনপি বা জামায়াতের দিকে আঙুল ওঠানোর কোনো সুযোগ নেই। কথা শুধু এটুকুই নয়। সুনির্দিষ্ট ও ‘বিশ্বাসযোগ্য’ তথ্যের ভিত্তিতে সরকারকে আগেই সতর্ক করা হয়েছিল বলে মার্কিন রাষ্ট্রদূত যে তথ্য প্রকাশ করেছেন সেটাও কিন্তু ক্ষমতাসীনদের পক্ষে যায় না। এর মধ্য দিয়ে বরং এমন অনুমানই শক্তিশালী হয়ে ওঠে যে, অন্তরালে বিএনপি ও জামায়াতের ওপর দোষ চাপানোর উদ্দেশ্য ছিল বলেই সব জানা সত্ত্বেও সরকার কোনো ব্যবস্থা নেয়নি আর সে কারণেই হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছেন দু’জন বিদেশী নাগরিক। আমরা আশা করতে চাই, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার ষড়যন্ত্রমূলক পন্থায় এগিয়ে যাওয়ার পরিবর্তে সরকার আসল ঘাতকদের চিহ্নিত ও গ্রেফতার করার পদক্ষেপ নেবে এবং কূটনীতিকসহ বিদেশীদের মধ্যে স্বস্তি ও নিরাপত্তাবোধ ফিরিয়ে আনবে। মনে রাখা দরকার, সত্যের ঢোল আপনাআপনি বেজে ওঠে বলে দেশে একটি প্রবাদ রয়েছে। আমরা জানি না, মার্কিন রাষ্ট্রদূত সে ঢোল বাজানোরই সূচনা করেছেন কি না!
No comments:
Write comments